[কিতাবঃ যুগ জিজ্ঞাসা, 

✍লেখকঃ অধ্যক্ষ মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ অসিয়র রহমান আল-কাদেরী]

মুহাম্মদ গোলাম রাব্বানী

ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।


 🔴প্রশ্নঃ🔴 মহররম মাসের দশম তারিখকে আশুরা বলা হয় কেন? ইসলামী শরিয়তের আলোকে জানালে কৃতজ্ঞ হব।


 উত্তর: হিজরি সনের প্রথম মাস হলো মহররম মাস। ইসলামের ইতিহাসে বহু ঘটনা এ মাসে সংঘটিত হয়েছে। শরিয়তের পরিভাষায় এ মাসের দশম তারিখকে আশুরা বলে। আশুরা শব্দটি আরবী, শব্দটি আশেরুন বা আশারুন হতে নির্গত। আদি পিতা হযরত আদম (عليه السلام)-এর সময়কাল তথা পৃথিবীর সৃষ্টি লগ্ন থেকে বিভিন্ন কারণে এই বরকতমণ্ডিত, সম্মানিত ও ঘটনাবহুল মহররমের দশম দিবস তথা পবিত্র আশুরা। তাই দিবসটি অতি ভক্তি, শ্রদ্ধা ও সম্মানের সাথে পালন করে আসছে মুসলিম বিশ্ব। প্রিয়নবী রসূলে দোজাহাঁ, আক্বা মাওলা হুযূর পুরনূর (ﷺ) হিজরতের পূর্বে এবং ক্বোরাইশগণ জাহেলী যুগেও এ দিবসে রোজা পালন করতেন। আর হিজরতের পর হতে রমজান মাসের রোজা ফরজ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এ দিবসে রোজা পালন ফরজ ছিল। রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার বিধান অবতীর্ণ হলে আশুরা দিবসের রোজা রাখার ফরজিয়্যাতের হুকুম রহিত হয়ে যায়।

দ্বীনের জন্যে শাহাদাতের বিরল দৃষ্টান্ত ৬১ হিজরিতে ইমামুশ্শুহাদা হযরত ইমাম হোসাইন (رضي الله عنه) ৭২/৮২ জন আহলে বায়তে রাসূল (ﷺ) এবং তাঁদের একান্ত অনুসারীদেরকে কুখ্যাত ইয়াজিদ বাহিনী কর্তৃক কারবালা প্রান্তরে নিমর্মভাবে শাহাদাতের ঘটনা সহ পৃথিবী সৃষ্টিলগ্ন থেকে বহু ঘটনাবলীর সাক্ষী মহররম মাসের এ দিবসটি।

পবিত্র আশুরার তাৎপর্য বর্ণনায় আরো দেখা যায়, হযরত মুসা (عليه السلام)কে আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন জালিম ও কুখ্যাত ফেরআউন ও তার সৈন্যদের জালুম নির্যাতনের হাত থেকে নাজাত দিয়ে ফেরআউন ও তার দলবলকে নীল নদে ডুবিয়ে ধ্বংস করেছিলেন এবং হযরত নূহ (عليه السلام) এবং তাঁর নৌকায় যারা আরোহন করেছিলেন তাদেরকে মহা তুফান ও পৃথিবী ব্যাপী প্লাবন হতে পরম করুণাময় স্বীয় অনুগ্রহে নাজাত দান করেছিলেন এ আশুরা দিবসে। সুতরাং ইসলামে এ দিবস অতি গুরুত্বপূর্ণ ও ফজিলতময়। কোন কোন বর্ণনায় দেখা যায় যে, পৃথিবীর সূচনা লগ্ন হতে দশটি বড় বড় ঘটনা মুহররমের দশম দিবসে সংগটিত হয়েছে বিধায় উক্ত দিবসকে আশুরা বলা হয়।

 
Top