প্রশ্নোত্তর: মাদরসার নামে যাকাত ফিতরা এবং কোরবানির চামড়ার টাকা সংগ্রহ


🔴প্রশ্নঃ🔴 এক বক্তি একটি মাদরাসা দিয়েছেন। কিন্তু ঐ মাদরাসায় হোস্টেল/এতিমখানা নেই এবং এ অবস্থায় ঐ মাদরাসার নামে যাকাত ফিতরা এবং কোরবানির চামড়ার টাকা আদায় করা শরীয়ত সম্মত কিনা? বা কতটুকু জায়েজ? দলিল সহকারে জানালে বিশেষভাবে উপকৃত হব।


উত্তর: ইসলামী শরিয়তের নির্ভরযোগ্য ফিকহ্ ফতোয়ার গ্রন্থাবলী যেমন- ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া (আলমগীরি), তাবয়ীন, কাজী ইদাহ, ফতোয়ায়ে ফয়জুর রাসূল, ফতোয়ায়ে বাজ্জাযিয়া ও বাহারে শরিয়ত সহ ইত্যাদি গ্রন্থ সমূহে উল্লেখ রয়েছে- কুরবানির পশুর চামড়া কুরবানি দাতা ইচ্ছা করলে ব্যবহারযোগ্য করে জায়নামায, দস্তরখানা, থলে/ব্যাগ ও বিছানা ইত্যাদি তৈরি করে নিজে ও নিজের পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করতে পারবে। আর কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রয় না করে সম্পূর্ণ চামড়া মসজিদ, মাদরাসা, ফোরকানিয়া, এতিমখানা, ঈদগাহ্ ও স্কুলসহ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্মাণ ও উন্নয়নের জন্য পরিচালনা কমিটিকেও প্রদান করতে পারবে। যেমন- ফতোয়ায়ে ফয়জুর রাসূল সাল্লাল্লাহু তা’আল্লা আলায়হি ওয়াসাল্লাম গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে-


          لهذا اسے مسجد مدرسه قبرستان يا عيدگاه كى تمعير ميں لالنا جائز هے خواه انكے منتطمين كو چڑঅا دے كه وه بيچ كر انكى تمعير پر صرف كريں يا ان چيزوں كى تعمير ميں صرف كرنے كى نيت سے بيچ كراسكى قيمت ديں يه بهى جائزهے- فتاوى بزاز يه ميں هے- له ان يبعها بالدارهم ليتصدق بها- (صفه ৪৭৩- ج ৬)


 অর্থাৎ কুরবানির পশুর চামড়া মসজিদ, মাদরাসা, (ফোরকানিয়া, এতিমখানা) কবরস্থান, ঈদাগাহ্ নির্মাণ ও উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করা জায়েয। কোরবানি দাতা ইচ্ছা করলে পরিচালনা কমিটিকে কুরবানির পশুর চামড়া দেবে, কমিটি তা বিক্রয় করে উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করবে, অথবা সে সকল প্রতিষ্ঠান (মসজিদ, মাদরাসা, এতিমখানা, কবরস্থান, ঈদগাহ ইত্যাদিতে) খরচের নিয়তে কুরবানি দাতা কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রয় করে মুল্য প্রদান করবে, তাও জায়েয।


উল্লেখ্য যে, কুরবানি দাতা সাদকা করার নিয়তে কুরবানির পশুর চামড়া, দিরহাম তথা টাকার বিনিময়ে বিক্রয় করা জয়েয।          [ফতোয়ায়ে, ফয়জুর রাসূল- ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা – ৪৭৩]


এ ছাড়াও মসজিদের ইমাম, খতিব, মোয়াজ্জিন, মাদরাসা, ফোরকানিয়া বা অসহায়কে হেবা করতেও পারবে। তবে মাদ্রাসা বা ফোরকানিয়ায় গরীব, ইয়াতিম ও অসহায় ছাত্রদের খানা-পিনা ও ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা না থাকলে সরাসরি জাকাত ও ফিতরা সংগ্রহ করতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে মাসিক তরজুমান ১৪৩৮ হিজরি, নভেম্বর- ২০১৬ ইংরেজী সফর সংখ্যায় বিস্তারিত আলোচনা করার হয়েছে। তা সংগ্র করার অনুরোধ রইল।

 
Top