প্রশ্নোত্তর: আল্লাহ্ তাঁর রাসূলকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি করতো না, এ হাদীসটি সত্য কি না?


🔴প্রশ্নঃ🔴 একটা টিভি চ্যানেলের ‘ইসলামী জিজ্ঞাসা’ নামক অনুষ্ঠানে একজন মহিলা শ্রোতা আলোচক মৌলভীর নিকট জানতে চান যে, অনেকে বলে থাকেন আল্লাহ্ তাঁর রাসূলকে সৃষ্টি না করলে কোন কিছুই সৃষ্টি করতো না এই ধরনের হাদীস সত্যি কি না? উক্ত মৌলভীর উত্তর ছিল এ রকম- এটা কোন হাদীস তো নয়ই বরং জাল ও জয়িপ হাদীসও নয়। এগুলো লোকমুখে শুনা কল্প কাহিনী মাত্র। এখন আমার প্রশ্ন হলো উক্ত মৌলভীর উত্তর কি সঠিক? ক্বোরআন-সুন্নাহ্র আলোকে দলিল সহকারে বিস্তারিত আলোচনার অনুরোধ জানাচ্ছি।


উত্তর: প্রিয়নবী রাসূলে করীম (ﷺ) সৃষ্টি না হলে কুল কায়েনাত তথা কোন কিছুই সৃষ্টি করতো না মহান আল্লাহ্ তা‘আলা। এটি হাদীসে কুদসী শরীফ- তাতে কোন প্রকার সন্দেহ নেই। কেউ হাদীস শরীফ নয় বা জাল হাদীস বা কল্প কাহিনী বললে তা মূলত তার অজ্ঞতা ও নবী বিদ্বেষী হওয়ার নামান্তর। কেননা বিশুদ্ধ হাদীস-এ কুদসী এবং নির্ভরযোগ্য কিতাবের মধ্যে এ সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা পাওয়া যায়। সহীহ বোখারী শরীফের ব্যাখ্যাকারী হাদীসের অন্যতম ইমাম আল্লামা আহমদ বিন মুহাম্মদ কস্তালানী (رحمة الله) স্বীয় কিতাব ‘‘আল মাওয়াহেবুল লাদুনিয়্যাতে’’ হাদীসে কুদসী হিসেবে এ ধরনের অনেক হাদীস উল্লেখ করেছেন তন্মধ্যে একটি নিম্নে বর্ণিত হলো-

قال الله تعالى ياادم ارفع راسك فرفع راسه فراى نور محمد صلى الله عليه وسلم فى سرادق العرش فقال يارب ماهذا النور قال هذا نور نبى من ذريتك اسمه فى السماء احمد وفى الارض محمد لولاه ما خلقتك ولاخلقت سماء ولاارضا الخ- (المواهب اللدنية)

অর্থাৎ- আল্লাহ্ তা‘আলা বেহেশতে থাকাকালীন হযরত আদম (عليه السلام)কে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ করেছেন- ‘‘হে আদম তুমি নিজের মাথা উপরের দিকে উত্তোলন কর। অত:পর তিনি মাথা তুললেন আর হুযূর পাক (ﷺ)-এর নূর মুবারক দেখলেন। অতঃপর বললেন, হে আমার রব এই নূরটা কি? মহান আল্লাহ্ তা‘আলা বললেন এটা তোমার বংশধর থেকে একজন নবীর নূর যার নাম আসমানে ‘‘আহমদ’’ আর জমিনে ‘‘মুহাম্মদ’’ (ﷺ)। যদি ওই নবী না হত তবে আমি তোমাকে (আদমকে) সৃষ্টি করতাম না এবং আসমান ও জমিন কিছুই সৃষ্টি করতাম না। [মাওয়াহেবুল লাদুনিয়্যাহ্: প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৭০] আল্লামা জালাল উদ্দীন সুয়ূতী (رحمة الله) বর্ণনা করেছেন-

احرج الحاكم وصححه عن ابن عباس رضى الله عنه قال اوخى الى عيسى اٰمن بمحمد صلى الله عليه وسلم وسرمن ادركه من امتك ان يؤمنوا به فلولا محمد ما خلقت ادم ولا الجنة ولا النار- (رواه الحاكم فى المستدرك- ج ২- صف ২১৫)

অর্থাৎ- ইমাম হাকেম তাঁর ‘‘মুস্তাদরিক’’ কিতাবে বর্ণনা করেছেন এবং হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রাদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বিশুদ্ধ সনদে উল্লেখ করেছেন- তিনি ইরশাদ করেছেন আল্লাহ্ তা‘আলা হযরত ঈসা (عليه السلام)-এর প্রতি ওহী অবতরণ করলেন (হে ঈসা) হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)-এর উপর ঈমান আন এবং তোমার উম্মত থেকে যারা তাঁকে পাবে তাদেরকে তাঁর উপর ঈমান আনার নির্দেশ প্রদান কর, কেননা (আমার প্রিয়বনী) মুহাম্মদ (ﷺ) সৃষ্টি না হলে আদম (عليه السلام), বেহেশত-দোখয কিছুই আমি সৃষ্টি করতাম না। ইমাম হাকেম তাঁর মুস্তাদারিক এর ২য় খন্ড, ৬১৫ পৃষ্ঠায় উক্ত হাদীস বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণনা করেছেন। শায়খ আবদুল হক্ব মুহাদ্দিস দেহলভী (رحمة الله) ‘‘মাদারেজুন নবুয়ত’’-এ বর্ণনা করেছেন যে, রাঈসুল মুফাস্সেরীন বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) وما كنت بجانب الطور اذناد يناه الاية এই আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লাহ্ তা’আলা কর্তৃক হযরত মুসা (عليه السلام)-এর তাওরীত প্রাপ্তির মুহূর্তে আল্লাহর সাথে হযরত মুসা (عليه السلام) -এর কথা-বার্তা ও আলোচনার একটি মুহূর্তে আল্লাহ্ তা‘আলা হযরত মুসা (عليه السلام)কে উদ্দেশ্যে করে বলেন-

لولا محمد وامته لما خلقت الجنة ولا النار ولاالشمس ولا القمر ولا الليل ولاالنهار ولاملكا مقربًا ولانبيا مرسلا ولا اياك-

অর্থাৎ- (হে মুসা) যদি হযরত মুহাম্মদ (ﷺ) এবং তাঁর উম্মত না হত তবে বেহেশত, দোযখ, সূর্য, চন্দ্র, রাত-দিন, নৈকট্য প্রাপ্ত ফেরেশতা, নবী-রাসূল কাউকে এমনকি আমি তোমাকেও সৃষ্টি করতাম না।

মাদারেজুন নবুয়তের গ্রন্থকার আলিম কুল শিরমণি হযরত শেখ আবদুল হক্ব মুহাদ্দিস দেহলভী (رحمة الله) বলেছেন যার উর্দু অনুবাদ নিম্নে প্রদত্ত হল-

مخلوق كا ظهور روح مطصر محمد محمد صلى الله عليه وسلم كے واسطے سے هے اگر روح محمدى نه هوتى خدا تعالى كو كوئى نه جانتا كيونكه كسى كا وجود هى نه هوتا- (اردو ترجمه مدارج النبوة)

অর্থাৎ- সৃষ্টি জগতের বিকাশ হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)-এর পবিত্র রূহ মুবারকের ওসিলায় হয়েছে যদি রূহে মুহাম্মদী (ﷺ) না হতো তবে আল্লাহ্ তা‘আলাকে কেউ জানত না কেননা তিনি না হলে সৃষ্টির মধ্যে কারো অস্তিত্ব হত না।

আমিরুল মুমেনীন সৈয়্যদুনা হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত-

عن عمر بن الحطاب رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم. . . . . فقال اسألك بحق محمد ألا غفرت لى فأوحى الله اليه وما محمد ومن محمد فقال لما رفعت رأسى الى عرشك فاذا هو مكتوب لااله الا الله محمد رسول الله فعلمت انه ليس احد اعظم عندك قدرا ممن جعلت اسمه مع اسمك فأوحى الله عروجل اليه يا أدم انّه اخر النبين من ذريتك وان امته اخر الأمم من ذريتك ولولاه ياادم ما خلقتك-

অর্থাৎ- হুযূর পাক (ﷺ) ইরশাদ করেন, হযরত আদম (عليه السلام) যখন দুনিয়াতে তাশরীফ আনেন তখন তিনি সবসময় কান্নাকাটি করতেন। একদিন তিনি আল্লাহর দরবারে আরজ করলেন, হে আল্লাহ্! মুহাম্মদ (ﷺ)-এর ওসিলায় আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি। তখন ওহী নাজীল হয়- মুহাম্মদ (ﷺ)কে আপনি কিভাবে চিনলেন? তখন তিনি বললেন- যখন আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, মাথা তুলে আরশে লেখা দেখলাম- লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ্।

তখনই আমি বুঝতে পেরেছিলাম যে, মুহাম্মদ (ﷺ) এর চেয়ে আপনার নিকট সর্বাধিক সম্মানিত ও প্রিয় আর কেউ নেই, যার নাম আপনি স্বীয় নামের সাথে যুক্ত করেছেন। তখন আল্লাহ্ তা‘আলর ওহী নাজীল হল- হে আদম! তিনি সর্বশেষ নবী এবং তাঁর উম্মত সর্বশেষ উম্মত। আপনার সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত হবেন। যদি তিনি না হতেন তাহলে আপনাকেও সৃষ্টি করা হতো না।

  1. ● ইমাম বায়হাকী: দালায়েলুন নবুয়ত, পৃষ্ঠা ৫/৪৮৯, 

  2. ● ইমাম হাকেম নিশাপুরী: মুসতাদরাকে হাকেম: হাদীস নম্বর ৪২২৮, পৃষ্ঠা ২/৪৮৬, 

  3. ● ইমাম হাকেম নিশাপুরী: আল মাদখাল- ১/১৫৪, 

  4. ● তাবরানী: আল মুজামুল আওসাত- ৬/৩১৩, হাদীস নম্বর ৬৫০২, 

  5. ● তাবরানী: আল মুজামুস সগীর- ২/১৮২, হাদীস নম্বর ৯৯২, 

  6. ● ইমাম দায়লামী: আল মুসনাদিল ফেরদাউস- ৫/২২৭, 

  7. ● ইমাম আজলুনী: কাশফুল কাফা- ১/৪৬ ও ২/২১৪, 

  8. ● আবূ নুয়াইম: হুলইয়াতুল আউলিয়া, 

  9. ● আল্লামা সুবকী: শেফাউস সিকাম, 

  10. ● ইবনে আসাকির: তারিখে দিমাশক- ৭/৪৩৭, 

  11. ● ইবনুল জাওজী: আল ওয়াফা বি আহওয়ালিল মোস্তফা- ৩৩ পৃষ্ঠা, 

  12. ● ইবনুল জাওজী: বয়ানু মিলাদুন্নবী- ১৫৮, 

  13. ● ইবনে কাসীর: আল বিদায়া ওয়ান নেহায়া- ১/১৮ পৃ., 

  14. ● ইবনে হাজার হায়সামী: মাযমাউজ যাওয়ায়েদ- ৮/২৫৩, শিহাব উদ্দীন খাফ্ফাজী: নাসীম আর-রিয়াদ, 

  15. ● ইমাম সুয়ূতী: খাসায়েসুল কুবরা- ১/২২, 

  16. ● ইমাম সুয়ূতী: দুররে মানসুর- ১/১৪২, 

  17. ● আল্লামা কাসতালানী: আল মাওয়াহেবুল লাদুনিয়্যাহ- ১/৮২ ও ২/৫২৫, 

  18. ● ইমাম যুরকানী: শরহে মাওয়াহিব- ১/১৭২, 

  19. ● ইমাম হালাবী: সীরাতে হালাবিয়্যাহ্- ১/৩৫৫, 

  20. ● মুহাদ্দিস শাহ্ আবদুল আজিজ দেহলভী: তফসীরে আজিযী- ১/১৮৩, 

  21. ● ইমাম ইউসুফ নাবহানী: আল আনোয়ারুল মুহাম্মদীয়া- ৯-১০, জাওয়াহিরুল বিহার-২/১১৪, হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন- ৩১ ও ৭৯৫ পৃষ্ঠা, 

  22. ● আল্লামা শফী উকারবী : যিকরে হাসীন- ৩৭। 


হাদীসের মান পর্যালোচনা: যে সকল মুহাদ্দিস এ হাদীস সহীহ বলেছেন তাদের নাম – 

  • ১. ইমাম হাকিম বলেছেন হাদীসটি সহীহ। আল মুস্তাদরাক – ২/৬১৫, 

  • ২. ইমাম তকি উদ্দীন সুবকী বলেন, হাদীসটি হাসান, শিফাউস্ সিকাম, পৃ. ১২০, 

  • ৩. ইমাম তকী উদ্দীন দামেশকী বলেন, হাদীসটি বিশুদ্ধ। দাফউশ শুবহাত পৃ. ১/৭২, 

  • ৪. ইমাম কস্তলানী বলেন, হাদীসটি বিশুদ্ধ। মাওয়াহিবুল লাদুনিয়্যাহ্- ১/১৬৫, 

  • ৫. ইমাম সামহুদী বলেন, হাদীসটি সহীহ। ওয়াফাউল ওয়াফাহ্- ২/৪১৯, 

  • ৬. ইমাম জালালুদ্দীন সুয়ূতী বলেন, বিভিন্ন সনদে বর্ণিত এ হাদীসটি বিশুদ্ধ। আল খাসাইস- ১/৮, 

  • ৭. বাতিলদের জবাবে ইমাম ইবনু কাসীর পরিষ্কার করে বলেছেন, এই হাদীসটি বানোয়াট নয়। এটা দ্বারা নির্দ্বিধায় দলীল প্রদান করা যাবে। আর সীরাতুন নববিয়্যা- ১/১৯৫, 

  • ৮. বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিস মোল্লা আলী ক্বারী বলেন, একথাটি সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ। আল্ আসরারুল মারফুআহ- ১/২৯৫।


হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘‘আল্লাহ্ পাক হযরত ঈসা (عليه السلام)কে বলেছেন, ওহে ঈসা! হুযূর পাক (ﷺ)-এর প্রতি ঈমান আনুন এবং আপনার উম্মতকেও তা করতে বলুন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) না হলে আমি আদমকে সৃষ্টি করতাম না, বেহেশত দোযখ সৃষ্টি করতাম না।’’

[সূত্র: 

  1. ● ইমাম হাকিম নিশাপুরী: আল মোসতাদরেক – ২/৬৭১, হাদীস – ৪২২৭, 

  2. ● ইমাম দায়লামী: আল মুসনাদিল ফেরদাউস- ৫/২৪২, 

  3. ● ইমাম ইবনে সাদ: তাবাকাতুল কোবরা, 

  4. ● ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী: শিফাউস্ সিকাম- ৪৫,

  5. ● শায়খুল ইসলাম আল্ বুলকিনী: ফতোওয়ায়ে সিরাজিয়া- ১/১৪০, 

  6. ●ইবনে হাজর: আফদালুল কোরা, 

  7. ● আবূ নুয়াইম: হুলয়াতুল আউলিয়া, 

  8. ● ইমাম নাবহানী: জাওয়াহিরুল বিহার- ২/১১৪ ও ৪/১৬০, 

  9. ● ইবনে কাসীর; কাসাসুল আম্বিয়া- ২/২৯, 

  10. ● ইবনে কাসীর সিরাতে নববিয়্যাহ্- ১/৩২০, মুজিজাতুন্নবী (ﷺ)- ১/৪৪১, 

  11. ● ইবনে হাজর আসকালানী: লিসানুল মিযান- ৪/৩৫৪, 

  12. ● ইমাম যাহাবী: মিজানুল ইতিদাল- ৫/২৯৯, 

  13. ● ইবনে হাজর হায়সামী: শরহে শামায়েল- ১/৪২, 

  14. ●ইমাম যুরকানী: শরহে মাওয়াহিব- ১/১২/২২০, 

  15. ● ইমাম সুয়ূতী: খাসায়েসুল কোবরা- ১/১৪, হাদীস ২১, 

  16. ● ইমাম ইবনে হাইয়্যান: ‘তাবকাত আল-ইসফাহানী- ৩/২৮৭, 

  17. ● কানযুল উম্মাহ্, হাদীস ৩২০২২।


হাদীসের মান পর্যালোচনাঃ

১. ইমাম দায়লামী বলেন, হাদীসটি মান ও সনদের দিক থেকে হাসান। আল মুসনাদ ফেরদাউস- ৫/২৪২।

বিশিষ্ট সাহাবীয়ে রাসূল হযরত সালমান ফারিসী (رضي الله عنه) বলেন, ‘‘হযূর পুরনূর (ﷺ)-এর কাছে জিবরীল আমীন (عليه السلام) এসে পৌঁছে দেন আল্লাহর বাণী- আল্লাহ্ তা‘আলা বলেন, (হে রাসূল) আপনার চেয়ে অধিক সম্মানিত আর কাউকেই আমি সৃষ্টি করিনি। আমি বিশ্বজগত ও এর মধ্যে যা কিছু আছে তার সবই সৃষ্টি করেছি যাতে তারা জানতে পারে আপনার মহান মর্যাদা সম্পর্কে। আমি এই বিশ্বজগত সৃষ্টি করতাম না, যদি আপনাকে সৃষ্টি না করতাম।’’

● ইবনে আসাকির: তারিখে দামেশক- ৩/৫১৭, 

● ইমাম যুরকানী: শরহে মাওয়াহিব- ১/১৮২, 

● ইমাম ইউসুফ নাবহানী: জাওয়াহিরুল বিহার- ২/২৮৯, 

● কাজী আয়াজ: শিফা শরীফ- ২/১০৫।


 عن عباس رضى الله عنه قال اوحى الله الى عيسى عليه السلام ياعيسى اٰمن بمحمد صلى الله عيه وسلم ومر من ادركه من امنك ان يؤمنوا به فلو لا محمد صلى الله عليه وسلم ما خلقت ادم عليه السلام ولولا محمد صلى الله عليه وسلم ما خلقت الجنة و النار لقد خلقت العرش على الماء فاصظرب فكتبت عليه لا اله الا الله محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم فسكن هذا حديث صحيح الاسناد-

অর্থাৎ- হযরত আবদুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘‘মহান আল্লাহ্ পাক তাঁর রাসূল হযরত ঈসা (عليه السلام)কে ওহী করলেন। হে হযরত ঈসা (عليه السلام)। আপনি হুযূর পাক মুহাম্মদ মোস্তফা (ﷺ)-এর প্রতি ঈমান আনুন এবং আপনার উম্মতের মধ্যে তাঁকে যারা পাবে তাদের নির্দেশ করুন, তাঁরা যেন তাঁর প্রতি ঈমান আনে। যদি মুহাম্মদ (ﷺ) না হতেন, তবে আমি আদম (عليه السلام)কেও সৃষ্টি করতাম না, যদি মুহাম্মদ (ﷺ) সৃষ্টি না হতেন তবে আমি জান্নাত এবং জাহান্নাম সৃষ্টি করতাম না। আর যখন আমি পানির উপর আরশ সৃষ্টি করলাম তখন তা টলমল করছিলো, যখনই আরশের মধ্যে

 لا اله الا الله محمد رسول الله صلى الله عليه وسلم 

লিখে দেই তৎক্ষণাৎ আরশ স্থির হয়ে যায়।’’

[● মুসতাদরাক আলাস্ সহীহাঈন লিল হাকীম নিশাপুরী রাহ: তাওয়ারিখিল মুতাকাদ্দিমীন- বি আখবারী সাইয়্যিদিুল মুরসালীন ওয়া খাতামুন নাবিয়্যিন মুহাম্মদ বিন আবদুল্লাহ্ বিন আবদুল মুত্তালিব মুছতাফা সালাওয়াতুল্লাহি আলায়হি ওয়া আলিহীত ত্বাহীরিন, ৪র্থ খন্ড, পৃষ্ঠা ১৫৮৩, 

● মুখতাছারুল মুসতাদরাক, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ১০৬৭] এটাও স্মরণ রাখতে হবে যে, কেউ যদি প্রিয় নবীজির (ﷺ)-এর কোন বিশুদ্ধ হাদীসকে মনগড়া বা কল্প-কাহিনী বলে সে হল বড় মিথ্যুক ও দাজ্জালগণের অন্তর্ভুক্ত। উল্লেখ্য হাদীসে কুদসীসহ হাদীসে পাকের নির্ভরযোগ্য কিতাব সমূহের (যা পৃষ্ঠা নম্বর সহ পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে) মুসান্নেফ/রচয়িতা এক একজন যুগ শ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস, ফকিহ্ ও মুফাসসির। সুতরাং তাদের বর্ণিত হাদীসই মুসলিম বিশ্বের জন্য দলিল/প্রমাণ হিসেবে সাব্যস্ত।

 
Top