সূরা মায়িদা ১১৭, ১১৮ আয়াত ও বুখারী শরিফের  ৪৬২৬ নং হাদিসের ব্যাখ্যা।
ব্যাখ্যাকারকঃ মাসুম বিল্লাহ সানি (ব্লগার, ইসলামী বিশ্বকোষ) 

"তোমরা আল্লাহর দাসত্ব অবলম্বন কর যিনি আমার ও তোমাদের পালনকর্তা, আমি ততদিন তাদের সম্পর্কে অবগত ছিলাম যতদিন তাদের মধ্যে ছিলাম। অতঃপর যখন আপনি আমাকে লোকান্তরিত করলেন, তখন থেকে আপনিই তাদের সম্পর্কে অবগত রয়েছেন।' (সূরা মায়িদা ১১৭)
"আপনে যদি তাদেরকে শাস্তি প্রদান করেন তবে ওরা তো আপনার বান্দা। আর যদি তাদেরকে ক্ষমা করে দেন তবে আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। (সূরা মায়িদা ১১৮)

ইবনে আব্বাস (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কিয়ামতের দিন তোমাদেরকে একত্রিত করা হবে এবং কিছু সংখ্যক লোককে পাকড়াও করে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি (ﷺ) তাই বলব যা আল্লাহর নেক বান্দা ঈসা (عليه السلام) বলেছিলেন, "আমি যতদিন তাদের মাঝে ছিলাম ততদিন আমি তাদের সম্পর্কে অবগত ছিলাম।" (সূরা মায়েদা ১১৭) [বুখারী, হাদিস নং, ৪৬২৬] 

প্রশ্ন ১ :  
সূরা মায়েদা, আয়াত নং ১১৭ : এর মধ্যে হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (عليه السلام)-কে সম্বোধন করে ‘ফা-লাম্মা তাওয়াফ-ফাইতানী’ শব্দটি দ্বারা কি ঈসা (عليه السلام) বর্তমানে জীবিত নন বুঝাবে?

প্রশ্ন ২ : 
বুখারী, হাদিস নং, ৪৬২৬ : আমি ততদিন তাদের সম্পর্কে অবগত ছিলাম যতদিন তাদের মধ্যে ছিলাম। 
এর দ্বারা কি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর ইলমে গায়েবের বিপরীতে যায় না? 

১নং প্রশ্নের জবাবঃ

ঈসা (عليه السلام) কে উথিত করা হয়েছে। আর কুরআন ও সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত যে, নবীগণ (عليه السلام) স্বশরীরে জীবিত। এ বিষয় ইমাম বায়হাকী (رحمة الله) "হায়াতুল আম্বিয়া" এবং ইমাম সুয়ূতী (رحمة الله) "নবীগণ (আলাইহিমুস সালাম) স্বশরীরে জীবিত" এ নামে কিতাব প্রণয়ন করেছেন।

২ নং প্রশ্নের জবাবঃ

প্রথমত, ইমাম ইবনে সিরিন (رحمة الله) বলেন, হাদিস জানার চেয়েও হাদিসের ব্যাখ্যা জানা জরুরি।

দ্বিতীয়ত, কোন হাদিস আমলযোগ্য আর কোনটা আমল যোগ্য নয় সেটা জানতে হবে।

তৃতিয়ত, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। কুরআন হাদিসে এমন অনেক আয়াত হাদিস আছে যা একে অন্যের বিপরীত। তাই সেগুলোর ব্যাখ্যা জানতে হবে। তখন একে অপরের মধ্যে সামঞ্জস্য তৈরি করা যায়।

এবার আসি [বুখারী, ৪৬২৬ নং] হাদিসের ব্যাখ্যায়,

প্রথমাংশঃ
"কিছু সংখ্যক লোককে পাকড়াও করে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে।"
এর দ্বারা বোঝা যায়, গোনাহগারদেরকে আযাবের জন্য পাকড়াও করা হবে।

দ্বিতীয়াংশঃ
তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন তিনিও ইসা (عليه السلام) এর অনুরূপ এই আয়াতটি বলবেন, "আমি যতদিন তাদের মাঝে ছিলাম ততদিন আমি তাদের সম্পর্কে অবগত ছিলাম।" (সূরা মায়েদা ১১৭)

বাণীটি ইসা (عليه السلام) এর পন্থায় বলবেন।

এর থেকে কি বুঝা যায়?

১)তিনি (ﷺ) উম্মতের ভাল মন্দের সাক্ষ্য দিবেন।
২)তিনি (ﷺ) গোনাহগার উম্মতের জন্য শাফায়াত করবেন। সেটাও ইঙ্গিত বহন করে।
৩)আয়াতটি দেখুন কত বিনয়তা প্রকাশ পেয়েছে- 
"আপনে যদি তাদেরকে শাস্তি প্রদান করেন তবে ওরা তো আপনার বান্দা" [অর্থাৎ, আপনে পাকড়াও করলে, আপনার আল-কাহহার (অভিশাপদাতা) রূপ প্রকাশ হলে কার সাধ্য আছে যে, তাদেরকে মুক্ত করবে? যদি না তাদের প্রতি আপনার করুণা হয়? তাহলে গুনাহগারকে মুক্তিদানের জন্যই রাহহমাতাল্লিল আল-আমীনের শায়াফাতের ব্যবস্থা করেছেন স্বয়ং আল্লাহ সুবহানুতা'য়ালা। সুবহানআল্লাহ]

"আর যদি তাদেরকে ক্ষমা করে দেন তবে আপনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।"
(আর ক্ষমা করা, শাস্তি দেয়া সবই আপনার ক্ষমতাধীন। আপনার কাছেই সেই ক্ষমতা রয়েছে যে পাপীকে আপনি চাইলে মুক্তি দিতে পারেন। ক্ষমা আপনার পরম গুণ, আপনি ক্ষমা করতে পছন্দ করেন।)

অভিযোগঃ

যদি কেউ এই অভিযোগ তোলে যে, রাসূল (ﷺ) তার ওফাতের পর কোন কিছু অবগত নন।

জবাব হলঃ

১.রাসূল (ﷺ) হায়াতুন্নবী
২.তাঁর ওফাতের পরও উম্মত যারা তাঁর নিকট দুরুদ প্রেরণ করেন সে সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন।
৩.তাঁর ওফাতের পরও উম্মতের আমলসমূহ তাঁর নিকট প্রেরণ করা হয়।
৪.আল্লাহ পাক জাতিগত ভাবে আলিমুল গায়েব আর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আল্লাহ প্রদত্ত ক্ষমতায় ইলমে গায়েব জানতেন, এটা যদি অস্বীকার করতে হয় তারা জেনে রাখুন, তিনি (ﷺ) আমাদের অদৃশ্যের (গায়েবের) খবর জানিয়েছেন। যেমনঃ ভবিষ্যৎবাণী, আলমে আরুআ সম্পর্কিত বিষয়, ফিতনা সম্পর্কিত বিষয়াদি, কবর, কিয়ামতের আলামত, কিয়ামত, হাশর, জান্নাত, জাহান্নাম, ফেরেশত, জ্বীন জাতি ইত্যাদি। এ সকল গোপন বিষয়াদি (গায়েব) যারা মানে তারা অবশ্যই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইলমে গায়েব মানতে হবে। কারণ আল্লাহ পাক এসব বিষয় সরাসরি প্রকাশ করেন নি স্বয়ং রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর পবিত্র জবান মুবারক থেকেই প্রকাশ করেছেন।  

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হায়াতুন্নবী এবং তাঁর ওফাতের পরও উম্মতের প্রেরণকৃত দুরূদ তাঁর নিকট নিকট পৌঁছানো হয় আর সে সম্পর্কে তিনি অবগত আছেনঃ

১. 
❏"আর যারা আল্লাহর পথে নিহত হয়, তাদেরকে তোমরা ‘মৃত’ বলো না। তারা তো আসলে জীবিত। কিন্তু তোমরা তা অনুধাবন করতে পার না।"
(সূরা বাকারা ১৫৪)

وَلَا تَحْسَبَنَّ الَّذِينَ قُتِلُوا فِي سَبِيلِ اللَّهِ أَمْوَاتًا ۚ بَلْ أَحْيَاءٌ عِنْدَ رَبِّهِمْ يُرْزَقُونَ
❏অর্থ : আর যারা আল্লাহর রাহে নিহত হয়, তাদেরকে তুমি কখনো মৃত মনে করো না। বরং তারা নিজেদের পালনকর্তার নিকট জীবিত ও জীবিকাপ্রাপ্ত। (সূরা আল-ইমরান ১৬৯)

❏হযরত আউস ইবনে আউস  (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত আছে যে,

عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ رضي الله عنه قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اﷲِ صلي الله عليه وآله وسلم. إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَامِکُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ، فِيْهِ خُلِقَ آدَمُ، وَفِيْهِ قُبِضَ وَفِيْهِ النَّفْخَةُ، وَفِيْهِ الصَّعْقَةُ فَأَکْثِرُوْا عَلَيَّ مِنَالصَّلَاةِ فِيْهِ، فَإِنَّ صَلَاتَکُمْ مَعْرُوْضَةٌ عَلَيَّ، قَالَ : قَالُوْا : يَا رَسُوْلَ اﷲِ! کَيْفَ تُعْرَضُ صَلَاتُنَا عَلَيْکَ وَقَدْ أَرِمْتَ؟ يَقُوْلُوْنَ : بَلِيْتَ قَالَ صلي الله عليه وآله وسلم : إِنَّ اﷲَ حَرَّمَ عَلَي الْأَرْضِ أَجْسَادَالْأَنْبِيَاءِ

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন, সপ্তাহের দিনগুলোর মধ্যে জুমুয়ার দিন সর্বাধিক সেরা। কারণ ঐ দিন আদম (عليه السلام) সৃষ্টি করা হয়েছিল ঐ দিনই ওনার ওফাত হয়েছিল ।ঐ দিন সিঙ্গায় ফুত্‍কার দেয়া হবে আর ঐ দিনই (কিয়ামতের) চিত্‍কার শুরু হবে! তাই ঐ দিন বেশি বেশি করে আমার প্রতি দুরুদ পাঠাও। তোমাদের দুরুদ আমার নিকট (নিশ্চই) পৌঁছানো হবে। তাঁরা (সাহাবীগণ) জিজ্ঞাসা করলেন - আমাদের দরুদ আপনার ওফাতের পর আপনার উপরে কিরুপে পেশ করা হবে? আপনার বরকতময় মোবারক দেহ কি মাটিতে মিশে যাবে না?
রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, আল্লাহ তায়ালা জমিনের জন্য নবীগণের দেহকে ভক্ষণ করা হারাম করে দিয়েছেন।"

তথ্যসূত্রঃ

১. আবূ দাউদ: আস্ সুনান, কিতাবুস সালাত, ১/২৭৫, হা-১০৪৭ এবং কিতাবুস সালাত, ২/৮৮, হা-১৫৩১।
২. নাসাঈ: আস্ সুনান, কিতাবুল সালাহ : অধ্যায়: জুমু'আ, ৩/৯১, হা-১৩৭৪। এবং আস্ সুনানুল কুবরা, ১/৫১৯, হা-১৬৬৬।
৩.ইবনু মাজাহ্: আস্ সুনান, কিতাবু ইকামাতিস সালাত, ১/৩৪৫, হা-১০৮৫।
৪.দারেমী: আস্ সুনান, বই : জুমা, অধ্যায় : ফি ফদ্বল ইয়াওমাল জুমা ১/৪৪৫, হা-১৫৭২।
৫.আহমদ ইবনে হাম্বল: আল মুসনাদ, ৪/৮, হা-১৬২০৭। ২৬/৮৪, হা- ১৬১৬২
৬.ইবনে আবি শায়বাহ্: আল মুসান্নাফ, আস-সালাহ ২/২৫৩, হা-৭৬৯৭, ৬/৪০, হা- ৮৭৮৯
৭.ইবনে খুজায়মা: আস্ সহীহ, ৩/১১৮, হা-১৭৩৩-১৭৩৪।
৮.ইবনে হিব্বান: আস্ সহীহ, বই : আর-রাকাইক, অধ্যায় : আদিয়্যাহ : ৩/১৯০, হা-৯১০।
৯.হাকেম: আল মুসতাদরাক, ১/৪১৩, হা-১০২৯।
১০.বাযযার: আল মুসনাদ, ৮/৪১১, হা-৩৪৮৫
১১.তাবরানী: আল মু'জামুল আওসাত, ৫/৯৭, হা-৪৭৮০।
১২.তাবরানী: মু'জামুল কবীর, ১/২৬১, হা-৫৮৯।
১৩.বায়হাকী: আস্ সুনানুস সগীর, ১/৩৭১, হা-৬৩৪।
১৪.বায়হাকী: আস্ সুনানুল কুবরা, ৩/২৪৮, হা-৫৭৮৯। Or, অধ্যায় : আল- জুমুয়া : ৩/৩৫৩, হা-৫৯৯৩
১৫.বায়হাকী: শু'আবুল ঈমান, ৩/১০৯, হা-৩০২৯। Or অধ্যায় : ফাজাইলুস সালাতুন্নবী (ﷺ) ৪/৪৩২, হা-২৭৬৮
১৬. যাহদ্বামী: ফাদ্বলুস্ সালাতি আলান্ নবী, হা-২২।
১৭.ওয়াদীয়াশী: তুহফাতুল মুহতাজ, ১/৫২৪, হা-৬৬১।
১৮.আসকালানী: ফাতহুল বারী, ১১/৩৭০।
১৯.আযলূনী: কাশফুল খিফা, ১/১৯০, হা-৫০১।
২০.ইবনে কাসীর, তাফসীরিল কুরআনিল আযীম, ৩/৫১৫ সুরা আল-আহজাব ৫৬,
২১.ইমাম খতিব তিবরিযি, মিশকাত, ১/৪২৯ পৃ. হা/১৩৮১, 
২২.ইমাম কাসতালানীঃ আল মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়্যা, ৩য় খন্ড, ৪২৭ পৃ
২৩.ড. তাহেরুল ইসলাম কাদেরীঃ প্রিয় নবীর পরকালীন জীবন।

হাদিসটির সনদ-মান পর্যালোচনাঃ

☞ এ হাদিসকে ইমাম আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনু মাজাহ্, দারেমী, অাহমদ, ইবনু খুজায়মা এবং ইবনু হিব্বান বর্ণনা করেছেন।
▶ ইমাম হাকেম বলেন, এ হাদিস ইমাম বুখারীর শর্তাবলীর ভিত্তিতে সহীহ্ এবং
▶ ইমাম ওয়াদিয়াশীও বলেন, ইহাকে ইমাম ইবনু হিব্বান সহীহ্ নির্ধারণ করেছেন এবং
▶ ইমাম আসক্বালানী বলেন, ইহাকে ইমাম ইবনু খুজায়মা সহীহ্ নির্ধারণ করেছেন।
▶ ইমাম আজলুনী বলেন, ইহাকে ইমাম বায়হাকী উত্তম, মজবুত সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন।
▶ইবনু কাছির বলেন, ইহাকে ইমাম ইবনু খুজায়মা, ইবনু হিব্বান, দারু কুতনী এবং ইমাম নববী 'আল-আযকার' -এ সহীহ্ নির্ধারণ করেছেন।

❏হযরত আবু দারদা  (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত।
عن أبي الدرداء قال قال رسول الله صلىالله عليه و سلم أكثروا الصلاة علي يوم الجمعة . فإنه مشهود تشهده الملائكة . وإن أحدا لن يصلي علي إلا عرضت علي صلاته حتى يفرغ منها ) قال قلت وبعد الموت ؟ قال ( وبعد الموت . إن الله حرم على الأرض أن تأكل أجساد الأنبياء (سنن ابن ماجه، كتاب الجنائز، باب ذكر وفاته صلى الله عليهو سلم، رقم الحديث-১৬৩৭
রাসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন-তোমরা জুমআর দিন বেশি বেশি করে দুরুদ পড়। নিশ্চয় ফেরেস্তারা এর উপর স্বাক্ষ্যি থাকে। আর যখন কেউ আমার উপর দুরুদ পড়ে তখনই তা আমার নিকট পেশ করা হয়। আবু দারদা রাঃ বলেন-আমি জিজ্ঞাসা করলাম - মৃত্যুর পরেও কি তা পেশ করা হবে? উত্তরে, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ইরশাদ করেন,
"হ্যাঁ! আল্লাহ্‌ পাক নবীগণের শরীর মোবারাককে ভক্ষণ করা জমিনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। তাই নবীগণ (কবরে) জীবিত আছেন এবং নিয়মিতভাবে তারা রিজিকও পেয়ে থাকেন।"

তথ্যসূত্রঃ

১. ইবনে মাজাহ্ঃ কিতাবুল জানাযা, খন্ড- ১/৫২৪পৃ, হাদিস: ১৬৩৬,
২. ইবনে মাজাহ্ঃ কিতাবুল জানাযা, খন্ড- ১/৫২৪পৃ, হাদিস: ১৬৩৭
৩. ইবনে মাজাহ্ঃ ইকামাতুস সালাহ ওয়াস সুন্নাহ ফিহা : অধ্যায় ৭৯, ১/৩৪৫, হা- ১০৮৫
৪. মুনজারীঃ আত্ তারগীব ওয়াত তারহীব, খন্ড- ২/২২৮পৃ, হাদিস: ২৫৮২।
৫. ইবনে কাসীরঃ তাফসীরু কুরআনিল আযীম, খন্ড- ৩/৫১৫পৃ, খন্ড- ৪/৪৯৩পৃ।
৬. মুনাবীঃ ফয়যুল কদীর, খন্ড- ২/৮২পৃ।
৭. আযুলুনীঃ কাশফুল খিফা, খন্ড- ১/১৯০পৃ, হাদিস: ৫০১
৮. সুনানুস সাগীর লিল বায়হাকী, হাদীস নং-৪৬৯,
৯. আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৪৭৮০,
১০. সুনানে দারেমী, হাদীস নং-১৫৭২,
১১. মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-৩৪৮৫,
১২. মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৫৭৫৯
১৩. আবু দাউদ : আস সুনান, কিতাবুস সালাত : ১:২৭৫, হাদিস ১০৪৭
১৪. নাসাঈ : আস সুনান, অধ্যায় : জুমুয়া ৩:৯২
১৫. ইমাম আহমদ বিন হাম্বল : আল মুসনাদ (৪:৮)
১৬. ইমাম ইবনে হিব্বান : আস সহীহ : (৩:১৯১, হাদিস ৯১০)
১৭. ইবনে খুজায়মাহ : আস সহীহ : (৩:১১৮, হাদিস ১৭৩৩)
১৮. ইমাম হাকিম : আল মুস্তাদরাক (১:২৭৮)
১৯. ইমাম তাবারানী : আল মুজমাউল কবীর  (১:২১৭, হাদিস ৫৮৯)
২০. বায়হাকী : আস সুনান আল কুবরা : (৩:২৪৯).
২১.ড. তাহেরুল ইসলাম কাদেরীঃ প্রিয় নবীর পরকালীন জীবন।
২২. কিনানী, মিছবাহুয যুজাজাহ্। ২: ৫৮, ৫৯। হাদিস নম্বর:৬০২। 
২৩. খতীবে তাবরীযী, মিশকাতুল মাসাবীহ।১: ৩৯২। হাদিস নম্বর: ১৩৬৬। 
২৪. মুনাবী, ফয়যুল কদীর। ২: ৮৭। 
২৫. সুবকী, শিফাউস সিকাম ফি যিয়ারাতি খাইরিল আনাম। ৩৫, ৩৬। 
২৬. উনদুলুসী, তুহফাতুল মুহতাজ। ১: ৫২৬। হাদিস নম্বর: ৬৬৩। 
২৭. ইবনু কাইয়িম, জালাউল আফহাম। ৬৩। হাদিস নম্বর: ১০৮। 
২৮. ইবনু কছীর, তাফসীরুল কুরআন । ৩: ৫১৪। 
২৯. ইবনু কছীর, আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া। ৪: ২৫৮। 
৩০. মুকরীযী, ইমতাউল আসমা। ১১: ৬৫। 
৩১. মাযী, তাহযীবুল কামাল।১০: ২৩। হাদিস নম্বর: ২০৯০। 
৩২. ফিরােজাবাদী, আস সিলাতু ওয়াল বাশারু ফিস সালাতি আলা খাইরিল বাশার। ৭৫। 
৩৩. সাখাবী, আল কওলুল বদী ফিস সালাতি আলাল হাবীবিশ শফী । ১৫৮। 
৩৪. শাওকানী, নাইলুল আওতার। ৩: ৩০৪, ৩০৫। 

হাদিসটির সনদ-মান পর্যালোচনাঃ

▶ এ হাদিসকে ইমাম ইবনু মাজাহ্ সহীহ্ সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন।
▶ ইমাম মুনযেরী বলেন, ইহাকে ইমাম ইবনু মাজাহ্ উত্তম-মজবুত সনদ সহকারে বর্ণনা করেছেন।
▶ ইমাম মুনাবী বর্ণনা করেন যে, ইমাম দমীরী বলেন, ইহার রাভীগণ (বর্ণনাকারীগণ) নির্ভরযোগ্য।
▶ ইমাম আজলুনীও ইহাকে হাসান বলেছেন।
▶ ইমাম সাখাবী (رحمة الله)'র অভিমত, হাদিসটির রিজাল (বিভিন্ন স্তরের রাবীগণ) অত্যন্ত নির্ভরযােগ্য। 

রাসূলুল্লাহ (ﷺ)'র ওফাতের পরও উম্মতের আমল সমূহ তাঁর নিকট প্রেরণ করা হয়ঃ

❏হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه) রাসূল (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন,

ﻋَﻦْ ﻋَﺒْﺪِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺑْﻦِ ﻣَﺴْﻌُﻮﺩٍ، ﻋَﻦِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ  ﺇِﻥَّ ﻟِﻠَّﻪِ ﻣَﻠَﺎﺋِﻜَﺔً ﺳَﻴَّﺎﺣِﻴﻦَ، ﻳُﺒَﻠِّﻐُﻮﻥَ ﻋَﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﺍﻟﺴَّﻠَﺎﻡَ ." ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : " ﺣَﻴَﺎﺗِﻲ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻜَﻢْ ﺗُﺤْﺪِﺛُﻮﻥَ ﻭَﻳُﺤَﺪَﺙُ ﻟَﻜَﻢْ، ﻭَﻭَﻓَﺎﺗِﻲ ﺧَﻴْﺮٌ ﻟَﻜَﻢْ ﺗُﻌْﺮَﺽُ ﻋَﻠَﻲَّ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟُﻜُﻢْ، ﻓَﻤَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻣِﻦْ ﺧَﻴْﺮٍ ﺣَﻤَﺪَﺕُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻋَﻠَﻴْﻪِ، ﻭَﻣَﺎ ﺭَﺃَﻳْﺖُ ﻣِﻦْ ﺷَﺮٍّ ﺍﺳْﺘَﻐْﻔَﺮْﺕُ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻟَﻜَﻢ -

‘‘আমার হায়াত তোমাদের জন্য উত্তম। কেননা আমি তোমাদের সাথে কথা বলি তোমরাও আমার সাথে কথা বলতে পারছ। এমনকি আমার ওফাতও তোমাদের জন্য উত্তম নেয়ামত। কেননা তোমাদের আমল আমার নিকট পেশ করা হয় এবং আমি তা দেখি। যদি তোমাদের কোন ভাল আমল দেখি তাহলে আমি তোমাদের ভাল আমল দেখে আল্লাহর নিকট প্রশংসা করি, আর তোমাদের মন্দ কাজ দেখলে আল্লাহর কাছে তোমাদের জন্য গুনাহ মাফের জন্য (তোমাদের পক্ষ হয়ে) ক্ষমা প্রার্থনা করি।’’

মুসনাদে বাযযারের সনদঃ

ইমাম বাযযার ➡ ইউসুফ বিন মূসা ➡ আবদুল মজিদ বিন আবদুল আজিজ বিন আবি রওয়াদ ➡ ইমাম সুফিয়ান সাওরি ➡ আবদুল্লাহ ইবনে সা’ইব➡ যাধান ➡ আবদুল্লাহ ইবনে মাস'উদ (رضي الله عنه)

তথ্যসূত্রঃ  

১. ইমাম হায়সামী (رحمة الله) মাজমাউয জাওয়াইদ, আলামাত আন নুবুউয়াঃ অধ্যায়: হায়াতিহি ওয়া ওয়াফতিহি, ২/৮৮৪, হাদিস নম্বরঃ ৯৫৩ ও ৯/২৪, হাদিস: ৯১,পুস্তকে জানান যে, হাদীসটি আল-বাযযার তাঁর ’মুসনাদ’ গ্রন্থে বর্ণনা করেন এবং এর সকল ’রাবী’ (বর্ণনাকারী) সহীহ (মানে হাদীসটি সহীহ)।
২. ইবনুল ইরাকী, তারহ আল-তাথরিব ফী শারহ,(৩:২৯৭) তাঁর মতে হাদিসটি বিশুদ্ধতা। 
৩. ইবনে সা’আদঃ আত-তাবাক্কাত-উল-কুবরা (২:১৯৪), (৫/৫০০)
৪. ইমাম কাজী আয়ায (رحمة الله) ‘আশ-শিফা’ গ্রন্থে (১:১৯) 
৫. ইমাম সুয়ুতি, আল হাবি লিল ফাতাওয়া, ২ পৃষ্ঠা: ৩
৬. ইমাম সৈয়ুতী (رحمة الله), ‘আল-খাসাইস আল-কুবরা’ (২:২৮১) 
৭. ইমাম সৈয়ুতী (رحمة الله),‘মানাহিল-উস-শিফা ফী তাখরিজ-এ-আহাদীস আশ-শেফা’ ৩১ (# ৮) তিনি বিবৃত করেন যে আবূ উসামাহ নিজ ‘মুসনাদ’ পুস্তকে বকর বিন আব্দিল্লাহ মুযানী  (رضي الله عنه)-এর সূত্রে এবং আল-বাযযার তাঁর ‘মুসনাদ’ বইয়ে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (رضي الله عنه)-এর সূত্রে সহীহ সনদে এই হাদীস লিপিবদ্ধ করেন।
৮. খাফাযী স্বরচিত ‘নাসিমুর রিয়াদ’ (১:১০২) ও 
৯.  মোল্লা আলী কারী তাঁর ‘শরহে শিফা’(১:৩৬) এ হাদিসটি সমর্থন করেন।
১০. মুহাদ্দীস ইবনুল জাওযী এটি বকর বিন আব্দিল্লাহ  (رضي الله عنه) ও হযরত আনাস বিন মালেক (رضي الله عنه)-এর সূত্রে "আল ওয়ফা দ্বি আহওয়ালিল মুস্তাফা (ﷺ), পৃষ্ঠা: ৮৬২, হাদিস নম্বরঃ ১৫৬৪
১১. ইমাম তাকিউদ্দীন সুবকী (رحمة الله) নিজ ‘শেফাউস্ সেকাম ফী যেয়ারাতে খায়রিল আনাম’ (৩৪ পৃষ্ঠা) কিতাবে বকর ইবনে আব্দিল্লাহ মুযানী  (رضي الله عنه) হতে এ হাদীস নকল করেছেন।
১২. ইবনে আব্দিল হাদী তাঁর ‘আস্ সারিম-উল-মুনকি’ (২৬৬-৭ পৃষ্ঠায়) পুস্তকে হাদিসটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
১৩. ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী (رحمة الله) নিজ ‘আল-মাতালিব-উল-আলিয়্যাহ’ (৪:২২-৩ #৩৮৫৩) গ্রন্থে  বকর ইবনে আব্দিল্লাহ মুযানী (رضي الله عنه)-এর সূত্রে। 
১৪.  ইবনে হাজার আসকালানী, তাকরিব ওয়াল তাহযিব, ১/৪৭৮
১৫. ইমাম ইবনে হাজর আসকালানী, লিসান আল মিজান, ২/পৃষ্ঠা: ৩৯৫, হাদিস ১৬২০
১৬. আলাউদ্দীন আলী নিজস্ব ‘কানযুল উম্মাল’ পুস্তকে (১১:৪০৭ #৩১৯০৩) ইবনে সাআদের বর্ণিত হাদীসটি উদ্ধৃত করেন এবং হারিস হতেও একটি রওয়ায়াত উদ্ধৃত করেন (# ৩১৯০৪)।
১৭. হাকিম তিরমিযী, নওদীর আল উসুল, ৪/পৃষ্ঠা: ১৭৬
১৮. ইমাম যাহাবি, মিজান আল ইতিদাল, ২, পৃষ্ঠা: ৪৩৯
১৯. ইমাম ইবনে আদি, আল কামিল, ৩/পৃষ্ঠা: ৭৬
২০. ইমাম আজলুনি, কাশফ আল খিফা, ১/পৃষ্ঠা: ১১৭৮
২১. ইমাম সাখাভীঃ আল কাউলুল বদী ফী সালাত আলাল হাবিব আশ শাফী (ﷺ), পৃষ্ঠা: ১৬০
২২. শাশীঃ আল মুসনাদস-শাশী, ২/২৫৩ পৃ, হাদিস নম্বর: ৮২৬
২৩. আবু হাতিম, আল-জারহ ওয়াত-তাদিল, ৬/৬৪ পৃ
২৪. শায়খ শু‘আয়েব আল-আরনা’উত, তাহরির আল-তাকরীব,২/৩৭৯, হাদিস: ৪১৬০
২৫. আল-মুগনি, ১/৫৭১, হাদীস: ৩৭৯৩
২৬. ইবনে হিব্বান, কিতাব আল-মাজরুহিন, ২/১৬০।
২৭. কিতাব আল-হজ্ব, পৃষ্ঠা: (# ১৭৯)
২৮. ইমাম দায়লামিঃ মুসনাদুল ফিরদুস, ১/১৮৩, হাদিস : ৬৮৬
২৯. ইমাম যাহাবিঃ সিয়ার আল আ'লাম আন নুবালা, ১৭/পৃষ্ঠা: ১০৬
৩০. ইমাম মিয্যিঃ তাহযিব আল কামাল, ১৪/পৃষ্ঠা: ৫৫৮
৩১. ইমাম ইবনে কাসিরঃ তাফসীরে ইবনে কাসীর, ৩/ পৃষ্ঠা: ৫১৬
৩২. ইমাম ইবনে কাসীরঃ ‘আল-বেদায়া ওয়ান-নেহায়া’ (৪:২৫৭)। 
৩৩. ইমাম জুরকানীঃ শরহে মাওহিব, ৭/পৃষ্ঠা: ৩৭৩
৩৪. শায়খ আবদুল্লাহ আল-তালিদি, মানাহিল আল-সাফা ফী তাখরিজ আহাদীছ আশ-শিফা'র তাহযিব, পৃষ্ঠা। ৪৫৮-৪৫৯ (# ৬৯৪)
৩৫. আল-মুনাভি, ফয়জুল কাদির, ৩/৪০১
৩৬. তারিখ আল-দাওরি, ২/৩৭০
৩৭. আল-বুরকানী, পৃষ্ঠা ৩১৭
৩৮. আন হামল আল-আসফার, ৪/১৪৮
৩৯. মাহমুদ মামদুহ, রাফউল-মিনারাহ’ আন তাখরিজ আহাদীস আল-জিয়ারা, ১৫৬-১৫৯ পৃ
৪০. জুহদামি, ফাদ্বালুস সালাহ ‘আলান ন্যাবি (ﷺ), ১/৩৮-৩৯, হাদিস নম্বর: ২৫-২৬
৪১. ইমাম মুত্তাকী আল হিন্দি, কানজুল উম্মাল, ১১/পৃষ্ঠা: ৪০৭, হাদিস নম্বরঃ ৩১৯০৪
৪২. ফায়রোজ আবাদী, আস ছালাত ওয়াল বাশার ফিস সালাত আ'লা খায়েরুল বাশার, পৃষ্ঠা: ১০৪-১০৫
৪৩. আল-মুনযিরি, তারগীব ওয়াল-তারাহীব ৩: ৩৪৩
৪৪. ইমাম নাবহানীঃ হুজ্জাতুল্লাহি আলাল আলামিন ফি মু'জাজাতুল মুরসালীন (ﷺ), পৃষ্ঠা: ৭১৩

উক্ত হাদিস প্রসঙ্গে ইমাম ইবনে হাজার হাইসামী (رحمة الله) বলেন:

ﺭَﻭَﺍﻩُ ﺍﻟْﺒَﺰَّﺍﺭُ، ﻭَﺭِﺟَﺎﻟُﻪُ ﺭِﺟَﺎﻝُ ﺍﻟﺼَّﺤِﻴﺢِ  -

-‘‘উক্ত হাদীসের সমস্ত রাবী বুখারীর সহিহ গ্রন্থের ন্যায়।’’ তাই হাদিসটি সহিহ।
১.বাজ্জার,আল-মুসনাদ,৫/৩০৮পৃ.হাদিস,১৯২৫
২.সুয়ূতি,জামিউস সগীর,১/২৮২পৃ.হাদিস,৩৭৭০-৭১
৩.আল্লামা ইবনে কাছির ,বেদায়া ওয়ান নিহায়া,৪/২৫৭পৃ.
৪. আল্লামা মুত্তাকী হিন্দী,কানযুল উম্মাল,১১/৪০৭পৃ. হাদিস,৩১৯০৩
৫.ইমাম ইবনে জওজী,আল-ওফা বি আহওয়ালি মোস্তফা,২/৮০৯-৮১০পৃ.
৬. আল্লামা ইবনে কাছির,সিরাতে নববিয়্যাহ,৪/৪৫পৃ.

ইমাম ইবনুল হাজ্জ ও ইমাম কুসতালানী (رحمة الله) বলেন:

وَقَدْ قَالَ عُلَمَاءُ نَالَا فَرْقَ بَيْنَ مَوْتِه وَحَيو تِه عَلَيْهِ السَّلَامُ فِىْ مُشَاهِدَ تِه لِاُمَّتِهِ وَمَعرِ فَتِه بِاَحْوَ الِهِمْ وَنِيَّا تِهِمْ وَعَزَائِمِهِمْ وَخَوَاطِرِ هِمْ وَذلِكَ جَلِىٌّ عِنْدَهُ لَاخَفَاءَبِه

আমাদের সু-বিখ্যাত উলামায়ে কিরাম বলেন যে,হুযুর আলাইহিস সালামের জীবন ও ওফাতের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। তিনি নিজ উম্মতকে দেখেন,তাদের অবস্থা, নিয়ত, ইচ্ছা ও মনের কথা ইত্যাদি জানেন। এগুলো তাঁর কাছে সম্পূর্ণরূপে সুস্পষ্ট। কোনরূপ অস্পষ্টতা ও দুর্বোধ্যতার অবকাশ নেই এখানে।           

১. ইমাম ইবনুল হাজ্জ مدخل গ্রন্থে
২. ইমাম কুসতালানী (رحمة الله) مواهب  (মাওয়াহিব) গ্রন্থের ২য় খণ্ডের ৩৮৭ পৃষ্ঠায় ২য় পরিচ্ছেদে زيارة قبره شريف শীর্ষক বর্ণনা।

আনাস বিন মালিক (رضي الله عنه) ও আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ (رضي الله عنه) থেকে বর্ণিত ৩/৪ টি হাদীসের সমন্বিত মূলভাবের অনুবাদ (অনুবাদকঃ মাসুম)।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন,
আমার জীবন তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আমার ওফাত ও তোমাদের জন্য কল্যাণকর (৩ বার)।
অতঃপর লোকজন নিরব হয়ে গেল! হযরত ওমর (رضي الله عنه) বললেন "আমার পিতা মাতা আপনার উপর কোরবানী হউক (তাজিমার্থে)"। তারপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন এটা কিভাবে সম্ভব?
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন," আমার জীবন তোমাদের জন্য কল্যাণকর কারণ,
"আমি তোমাদের সাথে কথা বলি এবং তোমরা আমার সাথে কথা বল।"
"আমার উপর (দয়াময় রব) ওহী নাযিল করেন।  তোমাদের জন্য কোনটা উচিত আর কোনটা অনুচিত তা আমি সতর্ক করে দেই।"
"আর আমার ওফাত ও তোমাদের জন্য কল্যাণকর কারণ প্রতি বৃহস্পতিবার এ তোমাদের কর্মগুলো আমার নিকট উপস্থাপন করা হবে।
তোমাদের কোন ভাল কাজ দেখলে তার জন্য আল্লাহর কাছে তোমাদের প্রশংসা করব আর (এর জন্য প্রভুর) কৃতজ্ঞতা স্বীকার করব !" 
তোমাদের কোন মন্দ কাজ (পাপ) দেখলে সেগুলোর জন্য আল্লাহর কাছে মাগফেরাত কামনা করব।"

উক্ত হাদিস ভিন্ন সনদে বর্ণিত সূত্রসমূহঃ

১) আনাস বিন মালিক (رضي الله عنه) 
২) আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ (رضي الله عنه)
৩) আউস ইবনে আউস (رضي الله عنه) 
৪) বকর ইবনে আব্দুল্লাহ আল-মাজিনী (رحمة الله)

তথ্যসূত্রঃ

● ইমাম ইবনে সা'দঃ তাবাকাত-আল-কুবরাতে (২: ১৯৪)
● ইমাম ইবনে হিব্বান, কিতাব আল-মাজরুহিন, ২/১৬০।
● ইমাম কাজী আয়াজঃ আশ-শিফা (১:১৯)
● ইমাম বাজ্জারঃ আল-মুসনাদঃ১/৩৯৭ : ইবনে মাসউদের হাদীস থেকে সহীহ সনদে।
● ইমাম শাশীঃ আল মুসনাদঃ খন্ড ২, পৃষ্ঠা: ২৫৩, হাদীস: ৮২৬
● ইমাম জুহদামীঃ ফজল আস সালাহ আন নাবী (ﷺ)
: ১, পৃষ্ঠা: ৩৮-৩৯, হাদীস: ২৫-২৬
● ইমাম সুবকীঃ আস শিফাউস-সিকাম ফী জিয়রতে খায়রুল আনম।
[সর্বোত্তম সৃষ্টির জিয়ারতে রোগীদের রোগ নিরাময়], যেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন যে, এটিঃ
১) বকর ইবনে আব্দুল্লাহ আল-মাজিনী এবং
২) ইবনে আল-জাওযী তা বকরের মাধ্যমে এবং
৩) আনাস ইবনে মালেক (رضي الله عنه) সূত্রেও বর্ণিত।
● ইমাম দায়লামিঃ মুসনাদ আল ফিরদাউসঃ ১, পৃষ্ঠা: ১৮৩, হাদীস: ৬৮৬
● ইমাম ইবনে আল-জাওজীঃ আল-ওয়াফায়ঃ আউস ইবনে আউস (رضي الله عنه) সূত্রে।
● ইমাম ইবনে কাসীরঃ তফসীরে ইবনে কাসীরঃ ৩ : পৃ ৫১৬
● ইমাম ইবনে হাজর আসকালানীঃ ফতহুল বারী শরহে বুখারীঃ ১০: ৪১৫,
● ইমাম মুনযিরীঃ আত তরগিব ওয়া আল-তরহিব ৩: ৩৪৩,
● মুসনাদ আল-হারিস,
● ইমাম আবু হাতিমঃ আল-জারহ ওয়াত তা'আদিল, ২৬/৬৪,
● ইমাম হাফিজ আল-হায়তামিঃ মাজমা আল-জাওয়ায়েদঃ২/৮৮৪ (# ৯৫৩)
● ইমাম ইবনুল ইরাকীঃ তারহুত-তাথরীব ফী শারহে-তাকরীব (৩: ২৯৭)
● ইমাম ইবনে হাজর আসকালানীঃ তাকরীব ওয়াহেদ তাহাদিব, ১/৪৭৮
● ইমাম ইবনে হাজর আল-আসকালানী মাতালিব আল-আলিয়াঃ ৪/২২,
● ইমাম যাহাবীঃ আল মুগনি, ১/৫৭১ (# ৩৭৯৩) (নুরুদ্দীন এর ৩য় সংস্করণে)
● ইমাম যাহাবীঃ সিয়ার আল আলম আন নুবালাঃ ১৭, পৃষ্ঠা: ১০৬
● ইমাম সুয়ূতীঃ খাসায়েসুল-কুবরা, ২/২৮১
● ইমাম সুয়ূতীঃ মানাহিল আল-সাফা ফী তাখরিয় আহাদীদ আল-শিফাঃ পৃ .৩ (# ৮)
● ইমাম মিয্যিঃ তাহযীব আল কামালঃ ১৪, পৃষ্ঠা: ৫৫৮
● ইমাম জুরকানিঃ শরহ্ আল মাওয়াহিবঃ ৭
পৃষ্ঠা: ৩৭৩
● ইমাম আল-মানাভি, ফয়জুল কাদির, ৩/৪০১
● ইমাম হিন্দিঃ কাঞ্জুল উম্মালঃ ৩১৯০৩-৩১৯০৪
● শাইখ শুয়ায়ব আল-আরনাউতঃ তাহরির আল-তাহরীবঃ ২/৩৭৯ (# ৪১৬০) এ আবু দাউদ, আহমাদ ইবনে হাম্বল, ইবনে মাঈন, আন-নাসায়ী ও ইবনে সা'দের থেকে।
কিতাব আল-হজ (# ১৭৯)
● আল বুরকানীঃ তরিক আল-দাওরী, ২/৩৭০;  পৃ .৩১৭;
● শায়খ আব্দুল্লাহ আল-তালিদীঃ তাহযিব আল খাসায়েসুল কুবরাঃ পৃ: ৪৫৮-৪৫৯ (# ৬৯৪)

 
Top