পিস টিভিতে জাকির নায়িকের পবিত্র কুর'আনের ভুল অনুবাদ
ইউটিউব লিঙ্কঃ

https://www.youtube.com/watch?v=JMiRTw65hI8

খুবই মনোযোগ সহকারে ভিডিওটি দেখুন। এখানে এক মহিলা ডঃ জাকির নায়িককে প্রশ্ন করে। প্রশ্ন করার ধরণসহ আরও অনেক কিছু দেখে মনে হবে ভিডিওটিতে কে কি বলবে তা আগে ঠেকেই ঠিক করা। যাই হোক, আমরা সেসবে যাচ্ছিনা। মূল বিষয়ে ফিরে যাই। ডঃ জাকির নায়িক প্রশ্নের জবাবে আরবী ‘হূর’ অর্থের অনুবাদে দুই জন ব্যক্তির উল্লেখ করেছেন। আসুন তাদের সম্পর্কে জানি

১. মুহাম্মদ আসাদ

পরিচয়ঃ জন্ম ১৯০০ সনে, বর্তমান পোলান্ডের লেমবার্গ শহরে, এক ইহুদী রাব্বী বা পুরোহীত পরিবারে। তাঁর স্ত্রী পোলা হামিদা আসাদকে নিয়ে প্রায় ২৬/২৭ বছর বাস করেছিলেন মরক্কোর তানজিয়ার্স শহরে। তিনি রাবেতা আলম ইসলামীর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলেন কুরআনুল কারীমের একখানি সংক্ষিপ্ত তাফসীরসহ তরজমা করার জন্য। প্রথম দশ পারার তাফসীর প্রকাশিত হলে দেখা যায়, সে সম্পূর্ণ নিজের মত পোষণ করেন। তাছাড়া এই ব্যক্তি তো প্রকাশ্যে নারীদের সাথে হাত মিলিয়েছেন। নারীদের সাথে হাত মিলানো কোথায় আছে?? প্রশ্ন জাগে মুহাম্মদ আসাদ পরবর্তিতে যদি মুসলমান হয়েও থাকে, সে কোথায় তার এই অনুবাদটি পেয়েছিল??

২. আব্দুল্লাহ ইউসুফ আলী

সে একজন দাউদী বোহরা (শিয়াদের একটি উপগোত্র)। উইকিপিডিয়াতে লিখা আছে
Ali was born in Bombay, British India to a wealthy merchant family with a Dawoodi Bohra (sub-sect of Shia Islam) father.
লিঙ্কঃ http://en.wikipedia.org/wiki/Abdullah_Yusuf_Ali

আজব লাগল জাকির নায়িক এর মত মানুষ এরকম দু’জন বিতর্কিত ব্যক্তি থেকে পবিত্র কুর’আনের আয়াতের ভুল অনুবাদ নিয়েছেন। ‘হুর’ শব্দটি সূরা দুখান (৫৪), সূরা আত্ব তূর (২০), সূরা রাহমান (৭২), সূরা আল ওয়াক্বিয়া (২২) এর এসেছে। এখন আসুন ‘হুর’ শব্দের সঠিক অনুবাদ জানি

১. তাফসীর ইবন কাসীর
** এরূপই ঘটবে, তাদেরকে সঙ্গিনী দিব।
[সূরা দুখান, আয়াত ৫৪, বাংলাদেশ ইসলামি ফাউন্ডেশন]

** সূরা আত্ব তুর এর ২০ নং আয়াতের ব্যাখ্যা আছে
অর্থাৎ, আমি তাদের জন্য রাখব উত্তম সঙ্গিনী ও সুন্দরী স্ত্রী, যারা হবে আয়ত-লোচনা হুরদের মধ্যে।
[পৃঃ ১১৯, বাংলাদেশ ইসলামি ফাউন্ডেশন]

** সূরা রাহমান এর ৭২ নং আয়াতের ব্যাখা পড়লে বুঝা যায়, এখানে হুর দ্বারা স্ত্রী লিঙ্গের প্রতি ইংগিত করা হয়েছে
[পৃঃ ২৩৭, বাংলাদেশ ইসলামি ফাউন্ডেশন]

** সূরা আল ওয়াক্বিয়া এর ২২ নং আয়াতের ব্যাখ্যা বলা আছে
কিশোরেরা নিজেদের সঙ্গে হূরদেরকেও নিয়ে যাবে। . . . . . সূরা রাহমানেও এই বিশেষণ তাফসীরসহ গত হয়েছে।
[পৃঃ ২৫৮, বাংলাদেশ ইসলামি ফাউন্ডেশন]

সুতরাং তাফসীর ইবন কাসীরে ‘হূর’ দ্বারা শুধুমাত্র স্ত্রী লিঙ্গকে বুঝানো হয়েছে।


২. তাফসীর মাযহারী
** এইরূপই ঘটিবে, আমি উহাদিগকে সঙ্গিনী দান করিব।
ব্যাখ্যাঃ
আর আমি তাদেরকে পত্নীরূপে দান করব আয়তআখিনী সুন্দরী হুর
[সূরা দুখান, আয়াত ৫৪ এর ব্যাখ্যা]
বাকি আয়াতগুলোতেও ‘হূর’ বলতে শুধুমাত্র স্ত্রী লিঙ্গকেই বুঝানো হয়েছে।

এভাবে পবিত্র কুর’আনের সকল তাফসীর গ্রন্থ অধ্যায়ন করলে এটিই স্পষ্টভাবে প্রতীয়মাণ হয়ে যে, ‘হূর’ শব্দের অর্থ সুন্দরী স্ত্রী/পত্নী অর্থাৎ স্ত্রী লিঙ্গকেই বুঝানো হয়েছে। এই বিষয়ে আরও জানার জন্য নিচের লিঙ্ক থেকে বইটি ডাউনলোড করে ১২৮-১৩৩ পৃঃ পর্যন্ত পড়ুন

http://www.mediafire.com/download/ah7f9oip47gsyqa/Jakir_nayeker_bhranto_motobad.pdf

পবিত্র কুর’আন এর গ্রহণযোগ্য প্রায় ৪৫টি তাফসীরগ্রন্থ আছে। এখন মনের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেও প্রশ্ন জাগে ডঃ জাকির নায়িক জীবনেও একটি তাফসীর গ্রন্থ পড়ারও সুযোগ পান নি বা পড়েননি?? নাকি শুধুমাত্র এক প্রাক্তন ইহুদী ও শিয়ার অনুবাদ করা কুর’আন পড়েই মিডিয়াতে ফতওয়া দিতে শুরু করে দিয়েছেন?? এভাবে জনসম্মুখে পবিত্র কুর’আনের আয়াতের ভুল অনুবাদ বা ব্যাখ্যা করার কারণ কি তার?? এখন দেখুন পবিত্র কুর’আনের ভুল ব্যাখ্যাকারীর শাস্তি কত মারাত্মকঃ-


★ মনগড়া তাফসীর (কুর'আন এর ব্যাখ্যা) সম্পর্কে মিশকাত শারীফের কিতাবুল ইলম ২য় পরিচ্ছেদে আছেঃ

“যে ব্যক্তি কুর’আনের মনগড়া ব্যাখ্যায় কিছু বলে, সে যেন জাহান্নামে নিজ ঠিকানা বানিয়ে নেয়”
মিশকাত শারীফের ঐ একই জায়গায় আরও উল্লিখিত আছে :-
“যে ব্যক্তি কুর’আনের ব্যাখ্যায় মনগড়া কিছু বলে এবং তা যদি সঠিকও হয়, তবুও সে ভুল করেছে বলে সাব্যস্ত হবে।”

★  যে ব্যক্তি মনগড়া কুরআনের তাফসীর করল সে জাহান্নামে আপন স্থান বানিয়ে নিল।
[তিরমিযি শরিফ-২৯৫১]

Courtesy : Islami Chatrasena

 
Top