শিয়া সম্প্রদায় ও তাদের ভ্রান্ত আক্বীদা
শিয়া সম্প্রদায় হযরত ওসমান যিননুরাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর খেলাফতকালীন রাজনৈতিক গোলযোগ এবং শাহাদাত বরণের সময় সৃষ্ট একটি ভ্রান্তদল। এদলের মূল প্রবক্তা ইয়েমেনের রাজধানী 'সানা'র এক প্রভাবশালী ইয়াহুদী আবদুল্লাহ ইবনে সাবা। ইবনে সাবা'র বংশ ইয়াহুদীদের ধর্মীয় জ্ঞান ও নেতৃত্বের ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় ছিল। ইবনে সাবা স্বয়ং তাওরিত -ইঞ্জিলের অভিজ্ঞ আলেম ছিল। আরবী ভাষায়ও তার যথেষ্ট বুৎপত্তি ছিল। স্বীয় আক্বীদায় কট্টর পন্থী ছিলো। সে তীক্ষ্মমেধা দুরদর্শীতা, সতর্কতা, অটলতার অধিকারী ছিল। তার মাথায় কুট কৌশলের ভাণ্ডার ছিল। মানুষের মন-মস্তিক উপলব্ধির বেশ ক্ষমতা ছিল। সুযোগ ও ক্ষেত্র নির্ণয়ে বেশ পটু ছিল। ইসলামে সার্বিক বিজয়ের ফলে ইয়াহুদীদের অস্তিত্ব চরমভাবে বিপন্ন হবার বিষয়টি সব সময় তাকে পীড়া দিত। এর প্রতিশোধ গ্রহণের মোক্ষম সুযোগের অপেক্ষায় ইবনে সাবা সকল প্রকার কুট- কৌশল নিয়ে প্রহর গুণছিল। হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর খেলাফত কালকে যথোপযুক্ত সময় বিবেচনা করে সে মদীনা শরীফ আগমন করে তৃতীয় খালীফা হযরত ওসমান রাদিআল্লাহ তা'আলা আনহুর হাতে ইসলাম কবুল করে। অতঃপর তাঁর খেলাফত কালীন রাজনৈতিক গোলযোগের সুযোগে সে তার ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করতে শুরু করে। উমাইয়াদের বিরুদ্ধে হাশেমী অপরাপর আরবদের ক্ষেপাতে আরম্ভ করে। সরল প্রাণ মুসলমান অনেকে তার কুট-কৌশলের জালে আটকে পড়ে। অতঃপর সে হযরত ওসমান।রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহুর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনা শুরু করে। ফলে তাকে মদীনা শরীফ থেকে বের করে দেয়া হয়। সে বসরা গমন করে সেখানে তার কার্যক্রম অব্যাহত রাখে। অতঃপর যখন সে দেখল কিছু মুসলমান তার অনুগত হয়ে উঠেছে, তখন সে তার মূল কর্মসূচী বাস্তবায়নে পরীক্ষামূলক পদক্ষেপ হিসেবে মুসলমানদের মধ্যে এক নতুন ভিত্তিহীন মনগড়া আক্বীদা প্রচার আরম্ভ করে। তা হলো “হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম পুনঃরায় পৃথিবীতে আগমন করবেন"। এর পূর্বে সে নিজেকে "আহলে রাসুল’ বা নবী বংশের বড় ভক্ত হিসেবে প্রকাশ করে। সে তার ভ্রান্ত আক্বীদার পক্ষে
আয়াতে কোরআন-

‌ان الذين فرض عليك القران لرداك علي معاد-

অর্থাৎ হে প্রিয় রাসুল (সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) "নিশ্চয় যিনি কোরআনের বিধান পালন আপনার উপর ফরয করেছেন তিনি আপনাকে প্রত্যাবর্তন স্থলের দিকে ফিরিয়ে দিবেন।" (সুরা ক্বাসাস) কে কৃত্রিমভাবে দলীল গ্রহণ করে মনগড়া ব্যাখ্যা দেয়। অতঃপর সে শিয়াদের  অন্যতম আক্বীদা "ইমামত" এর প্রচার শুরু করে। অর্থাৎ প্রত্যেক নবীর একজন “ওয়াসি" উযির বা স্থলাভিষিক্ত থাকে। যেমন হযরত মুসা আলাইহিস সালামের উযির ছিলেন হযরত ইউশা ইবনে নু'ন আলাইহিস সালাম। তেমনিভাবে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা' আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের "ওয়াসি" হলেন হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু। তাওহীদ, রিসালাতের মতো "ইমামতের" উপরও এরুপ বিশ্বাস স্থাপন করা ফরয। পরবর্তীতে এ আক্বীদা আরো বিস্তৃত হয়ে পরিগ্রহ করে যে, নবীগণ যেভাবে আল্লাহর পক্ষথেকে প্রেরিত, ইমামগণও সেভাবে প্রেরিত। ইমাম নবীর মত শরীয়তের বিধানসমূহ প্রবর্তন করবেন এবং কোরআনের যে বিধান যখন ইচ্ছা মানসুখ বা রহিত করতে পারবেন। আলে রাসুল বা নবী বংশের মুহাব্বতের উপর কৃত্রিমভাবে প্রতিষ্ঠিত ইবনে সাবার এ ভ্রান্ত আক্বীদাগুলো উমাইয়া বিরোধী লোকজন সহজে গ্রহণ করলো এবং এরা ইসলামের একটি নতুন ফিরকা 'শিয়া’ নামে আত্মপ্রকাশ করে। পরবর্তীতে এদের মধ্যে অনেক দল-উপদলের আবির্ভাব ঘটে। এগুলোর পৃথক পৃধক কুফুরী আকীদা রয়েছে। তন্মধ্যে ইসনা আশারীয়া বা দ্বাদশ ইমামী ও ইসমাঈলীয়া বা সপ্ত ইমামী সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য। ১৫০২ খৃষ্টাব্দে ইরানের সাফাজী বংশের প্রতিষ্ঠাতা শাহ ইসমাঈল দ্বাদশ ইমামে বিশ্বাসী শিয়াদের মতবাদকে ইরানের রাষ্ট্রীয় ধর্মে পরিণত করে। অদ্যাবধি ঐ মতবাদই ইরানে রাষ্ট্রীয় ধর্ম হিসেবে বিদ্যমান। ইরান ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনী দ্বাদশ ইমামী শিয়া।
➖➖➖
শিয়া অাকায়েদ ও আকায়েদে অাহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের তুলনামূলক আলোচনা
★শিয়া আক্বাঈদ - ০১
                    ‎
শিয়াদের কালেমা-লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ আলীউন ওয়াসিউল্লাহ ওয়া ওয়াসিও রাসুলিল্লাহ ওয়া খলীফাতুহু বেলাফাসলিন।
  অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আল্লাহর রাসূল। আলী আল্লাহর বন্ধু। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওয়াসিও তাঁর পরেই খলীফা। অন্য বর্ণনায়, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ ওয়া আলীউন খলীফাতুল্লাহ। (শিয়া-সুন্নী ইখতেলাফ, পৃষ্ঠা ১৬, মুসলিম সংস্কৃতির ইতিহাস, পৃষ্ঠা ৩২)।
  ‎
★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা ‘আত

ঈমানের মূলমন্ত্র কালেমা-এ তাইয়্যেবা “লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ।" অর্থাৎ আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর রাসুল।

★শিয়া আক্বাঈদ-০২

আকীদা-এ-ইমামত অর্থাৎ মুসলমানদের রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় যাবতীয় বিষয়ের একমাত্র কর্ণধার যিনি-তিনি ইমাম। এ ইমাম নবী রাসুলের ন্যায় আল্লাহর থেকে প্রেরিত এবং নিষ্পাপ। ইমামের আনুগত্য ফরয যেমন নবী রাসুলের আনুগত্য উম্মতের উপর ফরয। ইমামদের মর্যাদা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমান এবং অন্যান্য নবীদের চেয়ে অনেক উর্ধ্বে। শুধু উম্মতের উপর নয় বরং সমগ্র পৃথিবীর উপর যে কেউ হকুমত (রাজত্ব) করবে, সে হক ধ্বংসকারী, যালিম ও সীমালংঘনকারী । ইমাম নবীর মতো শলীয়তের বিধান প্রবর্তন করেন এবং কোরআনের যে কোন বিধান যখন ইচ্ছা করেন মানসুখ বা রহিত করতে পারেন। (ইরানী ইনকিলাব, পৃষ্ঠা ২৮. ইখতেলাফ পৃষ্ঠা ৯, মুসলিম সংস্কৃতির ইতিহাস, পৃষ্ঠা ২৩৩)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

ইমাম খোলাফায়ে রাশেদীন-এর নির্বাচন পদ্ধতিতে নির্বাচিত হবেন। তিনি তাঁর কার্যকলাপের জন্য জনগণের নিকট জবাবদিহি করতে বাধ্য। ইমামের জন্য নিষ্পাপ হওয়া জরুরী নয়। শুধু নবী-রাসুলগণই মাসুম বা নিস্পাপ । কোন ইমাম বা ওলী কোন নবীর স্তরে পৌছতেই পারে না। ইমামের মর্যাদা রাসুলুল্লাহ
সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমান মনে করা কিংবা অন্যান্য নবীদের চেয়ে উর্ধ্বে মনে করা নবী রাসূলগণের মহান মর্যাদার চরম অবমাননা;বিধায় কুফরী। শরীয়ত সম্মত পদ্ধতিতে নির্বাচিত যে কোন মুসলমান, এমনকি নিগ্রো হাবশী দাসও খলীফা নির্বাচিত হতে পারেন। এমতাবস্থায়ও তার পূর্ণ অনুগত্য করা মুসলমানদের উপর একান্ত কৰ্তব্য । ইমাম কোরআন সুন্নাহর কোন বিধান মানসুখ বা রহিত করার নূ্ন্যতম ক্ষমতা রাখেন না। কোরআনের কোন বিধান রহিত করার অধিকার একমাত্র মহান আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রাসুল সাল্লাল্লাহু
তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের।

★শিয়া আক্বাঈদ-০৩

শিয়াদের একটি বিরাট অংশ, বিশেষ করে ইসমাঈলিয়ারা বিশ্বাস করে যে, ইমাম ইসমাঈল আখেরী নবী। (মুসলিম সংস্কৃতির ইতিহাস, পৃষ্ঠা ২৩৩)

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম খাতামুন্ নাবীয়ীন অর্থাৎ শেষ নবী। তার পর কোন নবীর আবির্ভাবের সম্ভাবনায় বিশ্বাস করা পবিত্র কোরআনের সরাসরি অস্বীকার । এটা নিঃসন্দেহে কুফরী।

★শিয়া আক্বাঈদ-০৪

হযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর সকল সাহাবা কেরাম নিষ্পাপ ইমাম হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর হাতে বাইয়াত না করার কারণে কাফির এবং মুরতাদ হয়ে গেছেন। (শিয়াসুন্নী ইখতেলাফ, পৃষ্ঠা ১২)

অপর বর্ণনায় শুধুমাত্র তিনজন সাহাবী ইসলামের উপর অটল ছিলেন। ঐ তিনজন হলেন, হযরত মিকদাদ ইবনে আসওয়াদ, হযরত আবুযার গিফারী ও হযরত সালমান ফারসী রাদিয়াল্লাহু আনহুম। (ইরানী ইনকিলাব,পৃষ্ঠা ২২০)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের ওফাতের পর সকল সাহাবা ঈমান-ইসলামের উপর অটল অবিচল ছিলেন এবং প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের দ্বীন রক্ষায় জান-মাল দিয়ে জিহাদ করেছেন। হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুকে খলীফা নির্বাচিত করে সময়োচিত সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। শিয়াদের এ আক্বীদা হুযুর সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতের বিরুদ্ধে এক ধরণের প্রকাশ্য বিদ্রোহ। কোন মুসলমান বিশ্বাস করতে পারে না যে, তেইশ বছরে সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক তৈরী সাহাবা কেরামের এ বিরাট জামাআত তার ওফাতের সাথে সাথে সকলেই পথভ্রষ্ট হয়ে গেছেন।

★শিয়া আক্কাঈদ-০৫
                     ‎
তাহরীফে কোরআন। অর্থাৎ শিয়াদের মতে কোরআন শরীফ যেভাবে অবতীর্ণ হয়েছে, সেভাবে সংকলিত হয়নি; বরং, এতে অনেক বিকৃতি হয়েছে। কোরআন শরীফের সর্বমোট আয়াতের সংখ্যা ১৭,০০০ (সতর হাজার)। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর খেলাফত ও আহলে বায়তে রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কিত আয়াত গুলো কোরআন শরীফ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। বর্তমান আয়াতের সর্বমোট সংখ্যা ৬,৬৬৬ (ছয় হাজার ছয়শত ছিষট্টি)। শিয়াদের হতে ১০,৩৩৪ (দশ হাজার তিনশত চৌত্ৰিশ) আয়াত বাদ দেয়া হয়েছে। যে বিশ্বাস করে যে, কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ হয়েছে সেভাবে সংকলিত হয়েছে সে বড় মিথ্যাবাদী। কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ হয়েছে, সেভাবে একমাত্র হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ও তৎপরবর্তী ইমামগণ সংকলন করেছেন। ঐ কোরআন নিয়ে তাদের ইমামে গায়েব (অদৃশ্য ইমাম) “সুররামানরা" পাহাড়ে অদৃশ্য হয়ে গেছেন। যখন তিনি আত্নপ্রকাশ করবেন, তখন “মাসহাফে আলী" বা হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা অানহু কর্তৃক সংকলিত কোরআন নিয়ে আসবেন। (ইরানী ইন্‌কিলাব পৃষ্ঠা ২৫১, ইসলাম আওর খামেনী মাযহাব পৃষ্ঠা ৫৪ ও ৫৫)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

পবিত্র কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ হয়েছে, সেভাবে সংকলিত ও সংরক্ষিত। এ নিশ্চয়তা স্বয়ং আল্লাহ তা'আলা ঘোষণা দিয়েছেন।কোরআন শরীফের সর্বমোট আয়াত সংখ্যা ৬,৬৬৬ (ছয় হাজার ছয়শত ছিষট্টি)। আহলে বায়তে রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম বা নবী বংশের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কিত আয়াত বৰ্তমানেও পবিত্র কোরআনে বিদ্যমান। হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহ ও সর্বশেষ হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর বিশেষ পৃষ্ঠপোষকতায় পবিত্র কোরআন যথাযথভাবে সংকলিত হয়েছে। ঐ কোরআন করিম অদ্যাবধি মুসলমানদের মধ্যে অবিকৃত রূপে বিদ্যমান। এতদ বিষয়ে বিশ্বাস ও ধ্যান-ধারণা অমূলক, মনগড়া, ভ্রান্ত ও বিভ্রান্তিকর। তার প্রমাণ প্রায় দেড়শত বছর পূর্বে শিয়াদের কোন কোন আলিম "কোরআন বিকৃতির" এ জঘন্য আকীদাকে ঘৃণ্য বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের কিতাব "উসুলে কাফী" ও তাদের প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ও মুজতাহিদ নূরী তাবুরুসীর  "ফাসলুল খেতাব ফী এসবাতে তাহরীফে কিতাবে রব্বীল আরবাব” নামক কিতাবে কোরআন শরীফ বিকৃত হবার বিষয়ে ভিত্তিহীন বর্ণনায় পরিপূর্ণ। (ইসলাম অাওর খামেনী মাযহাব পৃষ্ঠা ৫৪ ও ৫৫, ইরানী ইনকিলাব পৃষ্ঠা ২৬১ ও ২৬২)।

★শিয়া আকাঈদ-০৬
               ‎
শিয়াদের মতে হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু অ'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘গাদীরে খোম’ নামক স্থানে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুকে তাঁর পরবর্তী স্থলাভিষিক্ত ও খলীফা ঘোষণা করেছেন। সুতরাং খেলাফতের একমাত্র অধিকারী হযরত আলী রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহু। প্রথম তিনজন খলীফা যথাক্রমে হযরত আবু বকর সিদ্দিক, হযরত ওমর ফারুক-এ-আযম ও হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুম খেলাফতের অবৈধ দাবীদার ও দখলদার। তাঁরা হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুকে ষড়যন্ত্র মূলক খেলাফতের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। বিধায় তারা-যালিম, মুনাফিক ও জাহান্নামী। এতে শিয়াগণ হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর তুলনায় প্রথম দু'জন খলীফাকেই জঘন্য অপরাধী মনে করে। তারা বলে, হযরত আবু বকর সিদ্দীক, হযরত ওমর ফারুক-এ-আযম রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহুমা হযরত আলী রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহু ও আহলে বায়তে রাসূল (সাল্লাল্লাহ তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর উপর অন্যায় ও যুলুম করেছে। হযরত আবু বকর রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহু মনগড়া হাদিসের মাধ্যমে হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহাকে তাঁর পিতার উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। (ইসলাম আওর খামেনী মাযহাব পৃষ্ঠা ৪৮)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম জীবনের শেষদিকে হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুকে মসজিদে নববী শরীফে তাঁর স্থলে ইমামতি প্রদানের মাধ্যমে তাঁর পরে হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর খেলাফতের দিকেই ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং হযরত আলী রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহুও হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহুর খেলাফতের দলীল পেশ করেছেন। (তারীফুল খোলাফা)। ইমাম দারে কুতনী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি হযরত আলী রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহুর সূত্রে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন আমরা হুযুর সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট প্রবেশ করে আবেদন করলাম, হে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম)! আমাদের জন্য খলীফা মনোনয়ন করে দিন। তিনি  বললেন -"না" আল্লাহ তা'আলা যদি তোমাদের কল্যাণ কামনা করেন। তাহলে তোমাদের মধ্য থেকে সর্বোত্তম ব্যক্তিকে তোমাদের উপর খলীফা নিযুক্ত করবেন। হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, আল্লাহ তা'আলা আমাদের মঙ্গল চেয়েছেন- অতঃপর হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু
তা'আলা আনহুকে আমাদের উপর খলীফা নিযুক্ত করেছেন। সুন্নীদের মতে শ্রেষ্ঠত্ব, যোগ্যতা ও সার্বিক বিবেচনায় খোলাফায়ে রাশেদীন যথাক্রমে হযরত আবু বকর সিদ্দিক, হযরত ওমর ফারুক-এ-আযম, হযরত ওসমান ও হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুম চারজনই বৈধ ও নির্বাচিত খলীফা। নবীদের
পরে সর্বোত্তম ব্যক্তি এ চার জন। (শরহে আকাঈদ-এ-নাসাফী, মুসলিম সংস্কৃতির
ইতিহাস, পৃষ্ঠা ২৩৩, ইসলাম আওর খামেনী মাযহাব, পৃষ্ঠা ২৫০)।

★শিয়া আক্বাঈদ-০৭
                 ‎
শিয়াদের হাদিস বা সুন্নাহর পৃথক কিতাব রয়েছে; তারা সেহাহ সিত্তার হাদিস গ্রন্থগুলো মানে না। তাদের নিকট বিশুদ্ধ কিতাব, উসূলে কাফী, আল জামেউল কাফী, নাহজুল বালাগা ইত্যাদি।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

সুন্নী মুসলমানদের নিকট পবিত্র কোরআনের পর বিশুদ্ধ হাদিস গ্রন্থ বোখারী শরীফ। অতঃপর বাকী পাঁচটি কিতাব। যেগুলোকে “সেহাহ সিত্তা" বা হাদিস শাস্ত্রের ছয়টি বিশুদ্ধ কিতাব হিসেবে স্বীকৃত। এছাড়াও আরো অনেক বিশুদ্ধ হাদিসের কিতাব রয়েছে। শিয়াদের হাদিসগুলো মনগড়া ও জালকৃত।

★শিয়া আক্বাঈদ-০৮
                ‎
শিয়াদের কোরআনে "সূরাতুল বেলায়াত" নামে একটি সূরা রয়েছে। তাদের  মতে এটা কোরআন শরীফ থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। শিয়াদের প্রখ্যাত
মুজতাহিদ নুরী তাবরুসী "ফাসলুল খেতাব" নামক কিতাবে ঐ সুরা উল্লেখ করেছেন। যার প্রথম আয়াত নিম্নরূপ-

يا ايها الذين امنوا امنوا بالنبي وبالولي الذين بعثنا هما بهداياتكم الي صراط مستقيما-

(ইরানী ইনকিলাব, পৃষ্ঠা ২৭৮ শিয়া সুন্নী ইখতেলাফ, পৃষ্ঠা ২৬)।

★আক্বাায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

সুন্নীদের মতে পবিত্র কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ হয়েছে সেভাবে অবিকৃত, সংরক্ষিত ও সংকলিত। "সুরাতুল বেলায়াত" শিয়াদের মনগড়া ও বানানো। যদিওবা এটা তাদের নির্ভরযোগ্য কিতাবে সংরক্ষিত আছে। শিয়াগণ কোরআন বিকৃতিতে বিশ্বাসী।

★শিয়া আক্বাঈদ-০৯
                 ‎
শিয়াদের মতে “মোতা" বা সাময়িক বিয়ে বৈধ, বরং সাওয়াবের কাজ। অর্থাৎ একজন মুসলমান পুরুষ ও নারী অর্থের বিনিমযে় কিছুক্ষণ যৌনসঙ্গম করতে পারবে। (শিয়া আলেমদের সর্ব সম্মতি ক্রমে প্রকাশিত ইশতেহার, ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮৫,পাকিস্তান। ইসলাম আওর খামেনী মাযহাব, পৃষ্ঠা ৪৩৮, ইরানী ইনকিলাব, পৃষ্ঠা ৮৯)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

সুন্নীদের মতে 'মোতা' বা সাময়িক বিয়ে সম্পূর্ণভাবে হারাম। এ ধরণের সাময়িক বিয়ে আর যিনার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। এ ধরণের সাময়িক বিয়ের বৈধতাদান ইসলাম ও মুসলমানদের চরিত্র ধ্বংসের কুট-কৌশল মাত্র । মোতা বা সাময়িক বিয়ে হারাম হওয়ার উপর ইজমা বা ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

★শিয়া আক্বাঈদ-১০
                   ‎
তাকীয়া অর্থাৎ আসল বিষয়কে গোপন করে, মুখে ভিন্ন ধরণের মত প্রকাশ করা শিয়াদের অন্যতম ধর্মীয় নীতি। অনুরূপভাবে "তাবাররা" অর্থাৎ শিয়া না এমন সব মুসলমানদের মনে প্রাণে ঘৃণা করা। যদিও সাহাবী হোক না কেন। এটাও তাদের উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় বিধান। (শিয়া ওলামাদের সম্মিলিত ইশতেহার, ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৮৫, পাকিস্তান। ইসলাম আওর খামেনী মাযহাব, পৃষ্ঠা ৪৩৭ ও ৪৩৮)।

★আক্বায়েদে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামা'আত

"তাকীয়া" চরম মোনাফেকী ও “তাবাররা" নিঃসন্দেহে হারাম। মুসলমানের মুহাব্বত ও শক্রতা হতে হবে আল্লাহর ওয়ান্তে ও ইসলামের স্বার্থে। তখনই মুসলমানের ঈমান কামিল ও পরিপূর্ণ হবে। শিয়াদের “তাবাররা মুসলমানদের মধ্যে হিংসা বিদ্বেষ ও হানাহানি সৃষ্টির এক নিরব হাতিয়ার মাত্র। শিয়াদের এমনি আরো অনেক ভ্রান্ত আক্বীদা ও বিশ্বাস রয়েছে। যা সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনা করা দুষ্কর। দৃষ্টান্ত স্বরূপ তাদের কয়েকটি জঘন্য আকীদা পেশ করা হলো। যাতে সরলপ্রাণ মুসলমানগণ নিজেদের ঈমান-আকীদা রক্ষা করতে সক্ষম হয় এবং শিয়াদের মোনাফেকী চরিত্রের শিকার হয়ে ঈমান-আক্ববীদা না হারায়। কারো মনে এ ধারণা লাগতে পারে, এসব জঘন্য কুফরী আকীদা আগেকার শিয়াদের ছিল, বর্তমানে এগুলোর প্রায়ই পরিহার করেছে। শুধুমাত্র নবী বংশের প্রতি লাগামহীন ভালবাসা প্রকাশ করে। বর্তমান ইরান ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা ও শিয়াদের ধর্মীয় ইমাম ও নেতা আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খামেনীর ব্যাপারেও মুসলিম বিশ্বের অনেকে, বিশেষতঃ জামাতে ইসলামী দেশের তথাকথিত কিছু আলেম অজ্ঞাত কারণে তাকে বিশ্ব মুসলিমের একমাত্র "কায়েদ” নেতা ও "রাহনুমা” পথ প্রদর্শক হিসেবে মনে করেন এবং তা প্রচার করেন। তাই এখানে খামেনীর ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর রচিত গ্রন্থের উদ্ধৃতি সহকারে পেশ করা হলো। "আক্বীদা-এ-ইমামাত বা ইমাম সম্পর্কিত বিশ্বাস' এতদ বিষয়ে খামেনী বলেন-

ان من ضروريات مذهبنا ان لائمتنا مقاما لا يبلغه ملك مقرب ولا نبي مرسل-

অর্থাৎ আমাদের মাযহাব (শিয়া দ্বাদশ ইমামী)-এর মৌলিক বিষয়াবলীর মধ্যে অন্যতম একটি হলো যে, আমাদের ইমামগণের এতবড় মর্যাদা যেখানে কোন নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেস্তা (জিব্রাইল আলাইহিস সালাম) ও কোন "মুরসাল’ নবী পৌছতে পারে না। (আল হুকুমাতুল ইসলামীয়া, কৃত: আয়াতুল্লাহ রুহুল্লা খামেনী, শিয়া-সুন্নী ইখতেলাফ, পৃষ্ঠা ২৭,ইরানী ইনকিলাব, পৃষ্ঠা ৩৬)।

এখানে স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হলো যে, খামেনীর মতেও ইমাম এর মর্যাদা নবী রাসুল ও নৈকট্য প্রাপ্ত ফেরেস্তার মর্যাদা থেকে অনেক উর্ধে ।(নাউযুবিল্লাহ)।

"তাহরীফে কোরআন" বা "কোরআন শরীফ বিকৃত" এতদবিষয়ে শিয়াদের মৌলিক নীতি বিধানের সাথে একাত্মতা করে খামেনী বলেন, যদি আল্লাহ তা'আলা কোরআনে ইমাম হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেদিতেন, তখন যাঁরা (হযরত আবু বকর সিদ্দিক, হযরত ওমর ও অন্যান্য সাহাবা কেরাম রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুম) ইসলাম ও কোরআনের সাথে শুধুমাত্র দুনিয়া ও হুকুমত অর্জনের উদ্দেশ্যে সম্পর্ক স্থাপন করেছে, এছাড়া ইসলাম ও কোরআনের সাথে তাদের আর কোন প্রকার সম্পর্ক নেই। তাদের জন্য এটা সম্ভব ছিল যে, তারা ঐ সব আয়াত কোরআন থেকে বাদ দিত। এ পবিত্র আসমানী কিতাবে বিকৃতি করত এবং কোরআনের এ অংশকে চিরদিনের জন্য বিশ্ববাসীদের দৃষ্টির আড়ালে করে দিত। কিয়ামত পর্যন্ত মুসলমান ও তাদের কোরআন সম্পর্কে এটা লজ্জার বিষয় পরিণত হত। মুসলমানদের পক্ষ থেকে ইয়াহুদী-নাসারা কর্তৃক তাদের আসমানী কিতাব বিকৃতির যে আপত্তি -দোষ আরোপিত হয়েছে ঐ দোষ তাদের (সাহাবাদের) উপর আরোপিত হত। (কাশফুল আসরার কৃতঃ আয়াতুল্লা রুহুল্লা খামেনী- পৃষ্ঠা ১১৪, ইরানী ইনকিলাব, পৃষ্ঠা ৫৯, ইসলাম আওর খামেনী মাযহাব, পৃষ্ঠা ৫৩)।

এখানে প্রমাণিত হলো যে, খামেনীর মতে হযরত আবু বকর সিদ্দিক, হযরত ওমর, হযরত ওসমান ও অপরাপর সাহাবা কেরাম রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুম কেবলমাত্র পার্থিব স্বার্থ ও ক্ষমতা লাভের মানসে ইসলাম গ্রহণ করেছিল।(নাউযুবিল্লাহ)। "কাশফুল আসরার" কিতাবে তিনি জোরালো ভাষায় এ দাবী করেছেন। আরো বলেছেন যে, উপরোক্ত তিনজন ও তাদের সহযোগী প্রবীন সাহাবাগণ দুনিয়ালোভী এবং অত্যন্ত নিম্ন ধরণের দুষ্ট প্রকৃতির ছিল। তারা হুকুমত দখলের লোভে শুধুমাত্র মৌখিকভাবে ইসলাম কবুল করেছিল। এরা শুধু বাহ্যিক ভাবে মুসলমান ছিল, আন্তরীক ভাবে কাফির ও যিন্দিক ছিল। এরা নিজেদের হীনম্বার্থ চরিতার্থের জন্য যে কোন ধরণের গর্হিত কাজ করতে পারত। এর জন্য প্রয়োজনে কোরআন শরীফ বিকৃত করতে পারত, মিথ্যা ও মনগড়া হাদিস বানাতে পারত। তাদের অন্তর আল্লাহর ভয়শূন্য ছিল। তারা প্রকৃতপক্ষে ঈমান থেকে বঞ্চিত ছিল। তারা যদি মনে করত যে, তাদের এ হীন স্বার্থ ইসলাম ত্যাগ করে আবু জাহেল-আবু লাহাবের মত হুযুর সাল্লাল্লাহ তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের শক্রতার পথ অবলম্বন করার মাধ্যমেই চরিতার্থ হবে তাহলে তাও
করত। (ইরানী ইনকিলাব, পৃষ্ঠা ৫২)।

উপরোক্ত উদ্ধৃতি দ্বারা খামেনী হযরত সিদ্দিক আকবর, হযরত ওমর ফারুক, হযরত ওসমান ও অন্যান্য সাহাবা কেরামের রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুম প্রতি কি ধরণের বিদ্বেষ মনোভাব পোষণ করে তা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এটা শিয়াদের অন্যতম মূলনীতি “তাবাররা”-এর সাথে তার প্রকাশ্য সমর্থন । শিয়াদের ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লা রুহুল্লা খামেনী বলেন-

از مجموعة این مادها معلوم شد مخالفت کردن شیخین کردن شیخین از قران در خضور مسلماناں یك امر خیلے مهمے نه بود مسلماناں نیز یا داخل در خذب خود انها یرده دور مقصود بانها بودند و یا اگر همرا نه بودند حیرات حرف زدن در انها که پیغمبرے خدا و دختر او این طور سلوك می کردند نداشتند و جمله کلام انکه اگر در قران هم این امر یا صراحت لهجه ذکری شد باز انها دست از مقصود خود بر نمید اشتد و ترك رباست یرا گفته خدانمی کردند - منتها چون ابو بکر ظاهر سازبش بیشتر بود بایك حدیث ساختگی کاررا تمام می کرد چنانچه راجع بایات ارث دیدند - راز عمر هم استباعادی ندا ست که امر بگدوید خدا یا جبریل یا پیغمبر در فرستاں اور دن این ایت اشتباه کردند مهجور شدند-

অর্থাৎ আমি যেসব দৃষ্টান্ত পেশ করেছি এতে ‘শেখাইন' (অর্থাৎ হযরত আর বকর ও হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমার) কোরআনের বিরোধীতা প্রমাণিত হলো।মুসলমানদের (সাহাবা কেরাম) সম্মুখে তাদের এ ধরণের কর্ম-কান্ড কোন জটিল বিষয় ছিল না। (তখনকার) মুসলমানদের (সাহাবা কেরাম) অবস্থাও ছিল এ রকম, হয়তো তাদের (হযরত আবু বকর ও ওমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমা) দল অন্তর্ভুক্ত। হুকুমত ও ক্ষমতা লাভের ক্ষেত্রে তারা অভিন্ন দৃষ্টি ভঙ্গী সম্পন্ন ছিল। আর যদিও তাদের সমর্থক ছিল না, কিন্তু তাদের অবস্থা নিশ্চয়ই এমন ছিল যে, আল্লাহর পয়গাম্বর (হযরত মুহাম্মদ মোস্তাফা সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তাঁর কন্যা (হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা)-এর সাথে দূর্ব্যবহার কারীদের সামনে সত্য বলার সাহস ছিলনা। মোট কথা হলো, যদি কোরআন পাকে স্পষ্ট ভাষায় এতদ বিষয় (হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর খেলাফত সম্পর্কে) বর্ণিত হত, তারপরও তাঁরা (হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমা) উদ্দেশ্য হাসিল থেকে হাত গুটিয়ে নিত না এবং আল্লাহর নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমতার মসনদ ছাড়ত না। আবু বকর যিনি অধিক ষড়যন্ত্রকারী ছিলেন, তিনি তো একটি হাদিস বানিয়ে উক্ত বিষয় চূড়ান্ত করে দিতেন। যেমনি ভাবে তিনি হযরত ফাতেমাকে উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার জন্য করে দেখিয়েছে। আর ওমরের জন্য এটা কোন অসম্ভব কিছু ছিল না যে, (হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুর ইমামাত ও খেলাফত সম্পর্কিত) আয়াত সম্পর্কে এ বলে উক্ত বিষয়ের সমাধান করে ফেলত যেন, হয়তো আল্লাহ তা'আলা এ আয়াত নাযিল করার ক্ষেত্রে ভুল করেছেন। অথবা জিব্রাইল বা রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এ আয়াত পৌছানোর ক্ষেত্রে ভুল করেছেন। (নাউযুবিল্লাহ)। (কাশফুল আসরার, কুতঃ ইমাম খামেনী পৃষ্ঠা ১১৯ ও ১২০, ইসলাম আওর খামেনী মাযহাব, পৃষ্ঠা ৪৭ ও ৪৮)।

আলোচ্য উদ্ধৃতিতেও খামেনী হযরত আবুবকর সিদ্দীক ও হযরত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমাকে কোরআনের বিরোধীতাকারী, ক্ষমতালোভী, হাদিস জালকারী, আল্লাহ, রাসুলে করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও জিব্রাইল আলাইহিস সালামের প্রতি ভূল আরোপ কারী, ষড়যন্ত্রকারী, রাসূল সাল্লাল্লাহ তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তার স্নেহের কন্যা ফাতেমা
রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহার প্রতি অসদাচরণকারী ও অপরাপর সাহাবা কেরামকে তাদের সমর্থক বা সত্য প্রকাশে অসমর্থ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। হযরত আবুবকর সিদ্দিক 'রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহু হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির দাবী করলে  তিনি যে হাদিস বর্ণনা করেছিলেন, তা কোরআনের পর বিশুদ্ধ কিতাব সহীহ বোখারী শরীফে বর্ণিত-

ان معشر الانبیاء لا نورث ما ترکنا صدقة

অর্থাৎ  আমরা ( নবীগণ) সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবে রেখে যাইনা। আমরা যা যাই তা সদকা । (রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি )।  এ বিশুদ্ধ হাদিসকে খামেনী হযরত আবু বকর সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু কর্তৃক জালকৃত বলে মন্তব্য করেছেন।

শিয়াদের অন্যতম ধর্মীয় বিধান “মোতা" বা সাময়িক বিয়ে সম্পর্কে খামেনীর রচিত কিতাব-“তাহরীরুল ওয়াসিলা” নামক কিতাবে প্রায় চার পৃষ্ঠাব্যাপী আলোচনা করেছেন। এতে তিনি বলেছেন, একেবারে কম সময়ের জন্য "মোতা" সাময়িক বিয়ে জায়েয। কিন্তু,তারপরও ঐ সময় নির্দিষ্ট করণ জরুরী। (তাহরীরুল ওয়াসিলা ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ২৯০: ইরানী ইনকিলাব, পৃষ্ঠা ৮৯)

আলোচ্য উদ্ধৃতির আলোকে প্রমাণিত হলো যে, সুন্নীদের মতে “মোতা" বা সাময়িক বিয়ে সম্পূর্ণভাবে সর্ব সম্মতিক্রমে হারাম ও যিনার সমতুল্য; কিন্তু খামেনীর মতে বৈধ। শুধু তাই নয়, বরং শিয়াদের মতে বড় ধরণের ইবাদাত। শিয়াদের প্রাচীন নির্ভরযোগ্য তাফসীর "মানহাজুছোদেকীন" নামক কিতাবে একটি হাদিসের উদ্ধৃতি রয়েছে -

من تمتع مرة فدرجته کدرجة الحسین ومن تمتع مرتین فدرجته کدرجة الحسن و من تمتع ثلث مرات فدرجته کدرجة علی ومن تمتع اربع مرات فدرجته کدرجتی--

অর্থাৎ যে ব্যক্তি একবার সাময়িক বিয়ে করবে, তার মর্যাদা হযরত ইমাম হোসাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর অনুরুপ, দু'বার করলে হযরত ইমাম হাসান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর মর্যাদা, তিনবার করলে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহর মর্যাদা এবং চারবার করলে তার মর্যাদা আমার (রাসূলে করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের) মর্যাদার মত। (মানহাজুহাদেকীন প্রথম খন্ড পৃষ্ঠা ৩৫৬, ইরানী ইনকিলাব পৃষ্ঠা ৬০)।
➖➖➖
হযরত ওসমান যিন্নুরাইন সম্পর্কে খামেনীর জঘন্য মন্তব্য
ইসলামের তৃতীয় খলীফা, পবিত্র কোরআনের সফল সংকলক, শ্রেষ্ঠত্বের দিক থেকে আম্বিয়া কেরামের পর তৃতীয় স্থানে অধিষ্ঠিত হযরত ওসমান যিন্নুরাইন রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এবং মানব ইতিহাসখ্যাত রাজনীতিবিদ, ওহী লেখক হযরত আমীরুল মোমেনীন মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহকে অভিশপ্ত ইয়াযিদের সাথে একই কাতারে গণ্য করে আয়াতুল্লাহ খামেনী বলেন:-

عقل پائدار و بخلاف گفته عقل هیچ کاری نه کند نه اں خدائے که بنائے مرتفع از خدا پرستی و عدالت و دینداری بنا کند بخرابی اں کشد و یزید و معاویة و عثمان و ازین قبیل چپاولچی هائے دگر بمردم امارت دهد-

অর্থাৎ আমরা এমন খোদার উপাসনা করি। এবং এমন খোদাকে মানি যাঁর সকল কর্মকান্ড বিবেক বুদ্ধি ও হিকমতের উপর প্রতিষ্ঠিত। আমরা এমন খোদাকে মানি না, যিনি খোদার ইবাদত ন্যায়পরায়নতা ও দ্বীনদারীর এক সুরম্য আলীশান প্ৰাসাদ তৈরী করে নিজেই তা ধ্বংস করার চেষ্টা করবেন; যে ইয়াজিদ, মুয়াবিয়া ও ওসমানের মত যালিম ও মন্দ শ্রেণীর লোকদেরকে নেতৃত্ব ও রাজত্ব দান করবেন। কোশফুল আসরার, কৃত- ইমাম খামেনী ইরানী ইনকিলাব, পৃষ্ঠা ৬৯)

এখানে আয়াতুল্লাহ খামেনী হযরত ওসমান ও আমিরে মুয়াবিয়া রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমাকে ইয়াযিদের সাথে একাকাতারে দাঁড় করিয়ে যালিম ও মন্দ শ্রেণীর লোক হিসেবে আখ্যায়িত করলেন। তাদের হাতে নেতৃত্ব ও হকুমত দান করা মানে দ্বীনের সুউচ্চ প্রাসাদকে আল্লাহ তাআলা নিজে তৈরী করে নিজে ধ্বংস করা। যে খোদা এমন যালিম ও খারাপ প্রকৃতির মানুষের হাতে রাজত্বব দেন,খামেনী ঐ খোদাকেও মানেন না। এমনি করে অসংখ্য জঘন্য কটুক্তি আয়াতুল্লাহ খামেনী তার রচিত "আল-হুকুমাতুল ইসলামীয়া" ও "কাশফুল আসরার " নামক গ্রন্থ দুটিতে করেছেন।

আয়াতুল্লাহ খামেনীর লিখিত গ্রন্থাদি থেকে তার ধ্যান-ধারণা ও আকীদা সংক্ষিপ্তাকারে সে সমস্ত সরল প্রাণ মুসলমানদের উদ্দেশ্যে উপস্থাপন করা গেল। যারা ইরান ইসলামী প্রজাতন্ত্র কায়েম ও খামেনী সম্পর্কে ইরান দূতাবাসের মাধ্যমে এদেশের ইরানপন্থী খামেনী সমর্থকদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগীতায় প্রপোগান্ডা করছে যে, ‘আয়াতুল্লাহ খামেনী শিয়া-সুন্নী মতবিরোধের সমর্থক নন; তিনি ইসলামী ঐক্যের অন্যতম স্বপূদ্রষ্টা, খোলাফা-এ-রাশেদীনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সফল রাজনীতিবিদ। সুতরাং, তিনি বিশ্ব মুসলিমের জন্য অনুসরণীয় ও অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। আরো কতো বিশেষণ তার নামে সংযোজিত হয়, তার হিসেব কে রাখে। তার ওফাত বার্ষিকী উপলক্ষে প্রতি বছর আলোচনা সভার আয়োজন হয়। কিন্তু খামেনীর বাস্তবরূপ কি, তার রচিত গ্রন্থ সমূহের উদ্ধৃতির আলোকে খামেনীর ধ্যান-ধারণা ও আকীদা উপস্থাপন করা হয়না। এ ভয়ে যে, পাছে যদি থলের বিড়াল বেরিয়ে যায় । মূলতঃ আয়াতুল্লা খামেনী হলেন, একজন “ইসনা আশারী” বা দ্বাদশ ইমামে বিশ্বাসী কট্টর শিয়া।
➖➖➖
শিয়াদের ভ্রান্ত আক্বিদা সম্পর্কে ইমামদের অভিমত
শিয়াদের সম্পর্কে জগত বরেণ্য ওলামা কেরামের মতামত ও ফতোয়ার কয়েকটি উক্তি
নিম্নে উপস্থাপন করা গেল-

• গাউসে আযম আবদুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি র অভিমত

গাউসে আযম আবদুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, শিয়া-তাহরীফে কোরআন (কোরআন বিকৃতি), ইসমাতে আইম্মা (ইমামগণ নিষ্পাপ), তাউহীনে মালায়েকা (ফেরেশতাদের অবমাননা) ইত্যাদি বাতিল আক্বীদার কারণে ঈমানের গন্ডির বাইরে এবং কাফির।  এ দল কুফর অবলম্বন করেছে, ইসলাম ছেড়ে দিয়েছে, আর ঈমানের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি করেছে।

তিনি শিয়াদেরকে ইয়াহুদীদের সাথে তুলনা করেছেন। কারণ, তাদের সাথে ইয়াহুদীদের আক্বীদাগত সাদৃশ্য রয়েছে। যেমন-

(১) ইয়াহুদীদের বিশ্বাস-হযরত দাউদ আলাইহিস সালামের বংশধর ব্যতীত অন্য কারো জন্য ইমামত জায়েজ নয়; একইভাবে শিয়ারা বিশ্বাস করে হযরত আলী রাদিয়াল্লাাহু তাআলা আনহু ও তাঁর আওলাদ ব্যতীত অন্য কারো জন্য ইমামত জনেয়া হবে না।

(২) ইয়াহুদীদের ধারণা-হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম আকাশ হতে অবতীর্ণ হওয়া ব্যতীত জিহাদ হইবে না; তেমনি শিয়াদের বিশ্বাস হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস সালাম প্রকাশ হওয়া ব্যতীত জিহাদ হবে না।

(৩) ইয়াহুদীগণ তারকা উজ্জ্বল হবার পর মাগরিবের নামায আদায় করতো শিয়াদেরও একই অভ্যাস। (আকাশের তারকা উজ্বল হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করে মাগরিবের নামায আদায় এবং রোযার ইফতার করা)

(৪) ইয়াহুদীরা ফজরের নামায আদায় করত কেবলমাত্র সূর্যোদয়ের পূর্বে; শিয়ারাও ঐ নিয়মে আদায় করে।

(৫) ইয়াহুদীদের মেয়েরা ইদ্দত পালন করে না; শিয়ারাও ইদ্দত পালন করেনা।

(৬) ইয়াহুদীদের নিকট তিন তালাক অর্থহীন; শিয়াদেরও একই বিশ্বাস।

(৩) ইয়াহুদীগণ তাওরীত কিতাবে বিকৃতি সাধন করেছে; শিয়ারা কোরআনকে বিকৃত বলে বিশ্বাস করে, মূলতঃ তারাই বিকৃত করেছে। (যার দৃষ্টান্ত পূর্বে আলোচনা করা হয়েছে)

(৮) ইয়াহুদীগণ হযরত জিব্রাইল আলাইহিস সালামকে শক্র মনে করে; শিয়ারাও এ বিশ্বাস পোষণ করে যে, জিব্রাঈল আলাইহিস সালাম অহী পৌছানোর ব্যাপারে ভুলবশতঃ হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর পরিবর্তে হযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট অহী পৌছিয়েছে।

হযরত গাউসে পাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি শিয়াদেরকে ১৬ দলে বিভক্ত করেছেন। তন্মধ্যে মারাত্মক দল "খোম" শহরে বসবাস করে বলে উল্লেখ করেছেন। এদের জন্য গাউসে পাক রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বদদোয়া করেছেন। উল্লেখ্য যে, ঐ খোম শহরের অধিবাসী হিসেবে খামেনী বা খোমেনী। (গুনিয়াতুত্তালেবীন; শিয়াধৰ্ম কৃতঃ শায়খুল হাদিস আল্লামা ফজলুল করিম নকশবদি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি পৃষ্ঠা ৩, শিয়া-সুন্নী ইখতিলাফ পৃষ্ঠা ৫৬৫৭)

• ইমাম রব্বানী মুজাদ্দিদ-এ- আলফেসানী হযরত শেখ আহমদ ফারুকী সেরহিন্দী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি

ইমাম রব্বানী মুজাদ্দিদ-এ-আলফেসানী হযরত শেখ আহমদ ফারুকী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, শিয়াদের অবস্থা হিন্দুস্থানের হিন্দুদের ন্যায় । তারা নিজেদেরকে হিন্দু বলে; কিন্তু "কুফর ” শব্দ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকে। তারা নিজেদেরকে কখনো কাফির বলতে রাজি নয়। তেমনিভাবে শিয়াগণ নিজেদের জন্য রাফেযী শব্দ ব্যবহার করতেও সম্মত নয়। শিয়া সম্প্রদায় আহলে বায়তে রাসুলকে হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমার দুশমন মনে করে এবং আহলে বায়তের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকে "তাকীয়া" (যখন যেমন, তখন তেমন)-এর ভিত্তিতে মুনাফিক ও ধোকাবাজ মনে করে। তারা বলে, হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুর পূর্বকার খলীফার সাথে মোনাফেকী সুলভ সম্পর্ক ছিল। অর্থাৎ তিনি তাদেরকে মনে প্রাণে শ্রদ্ধা করতেন না; বরং বাহিক্যভাবে শ্রদ্ধা দেখাতেন, আর আন্তরিকভাবে ঘৃণা  করতেন। (মাকতুবাত, শিয়া-সুন্নী ইখতিলাফ পৃষ্ঠা ৫৯-৬০)।

• হযরত শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি

হযরত শাহ অলিউল্লাহ মুহাদ্দিস দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি রুহানীভাবে হুযুর করিম সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট শিয়া সম্প্রদায় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, তাদের মাযহাব বাতিল । তাদের ভ্রান্তি ''ইমাম" শব্দ থেকে বুঝা যায়। যখন আমি এ রূহানী মোরাকাবা থেকে ফিরে আসি তখন বুঝতে সক্ষম হলাম যে, বাস্তবিক পক্ষে তাদের (শিয়াদের) মতে “ঐ নিষ্পাপ ব্যক্তি, যার আনুগত্য ফরয এবং যাঁর নিকট বাতেনীভাবে ওহী আসে। এর দ্বারা নবী আলাইহিমুস সালাম বুঝানোই উদেশ্য;যদ্বারা খাতামুন্নাবিয়্যীন (শেষ নবী সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কেই অস্বীকার করা হয় । (দুররুস সামীন কৃত: শাহ ওয়ালী উরাহু মুহাদিস দেহলভী; ইসলাম আওর খোমেনী মাযহাব পৃষ্ঠা ৮৬ ও ৮৭)।

• হযরত শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি

হযরত শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি "ইসনা আশারী’ দ্বাদশ ইমামী শিয়াদের খন্ডনে 'তোহফা-এ-ইসনা আশারীয়া’ নামক একটি কিভাব লিখেছেন। উক্ত কিতাবে তিনি বলেন, শিয়াদের ধোকাবাজির মধ্যে এটিও একটি ধোকা যে, তারা বলে বেড়ায়, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআতের ইমামগণ যাদের মধ্যে হযরত আবু বকর সিদ্দিক, হযরত ওমর ফারুক ও হযরত ওসমান যিন্নুারাইন রাদিয়াল্লাহু তা’আলা অানহুম অন্তর্ভুক্ত। তাঁরা কোরআনুল করীম পরিবর্তন করেছেন। তাঁরা এমন অনেক আয়াত ও সুরা বাদ দিয়েছেন যেগুলোতে আহলে বায়েত (হুযুর সাল্লাল্লাহু তাআলা আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর বংশধর)-এর ফযিলতসমূহ, তাদের অনুসরণ করার নির্দেশ বিরোধীতা না করার আদেশ ও তাদেরকে মুহাব্বতের তাকিদ দেয়া হয়েছে। আর ঐসব আয়াত এবং সুরাতে তাদের শত্রুদের নামের বর্ণনা এবং তাদের উপর লানাত বা অভিশাপের বর্ণনা ছিল। একারণে এ বিষয়গুলো তাঁদের (হযরত আবু বকর , হযরত ওমর ও হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমের) নিকট বড় অপছন্দ হয়েছে। আহলে বায়তের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ তাদেরকে একাজে উৎসাহিত করেছে। যেমন: সুরা “আলাম নাশরাহ" থেকে এ আয়াতকে বাদ দিয়েছে-

   وجعلنا علیا صهرك

অর্থাৎ " আলীকে আমি আপনার জামাতা করেছি "। এতে প্রমাণিত হয় (শিয়াদের মতে) শুধুমাত্র হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুই কেবল হযুর সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের জামাতা হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেছেন। হযরত ওসমান রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর হয়নি। অনুরূপভাবে "সুরা বেলায়তকে" বাদ দেয়া হয়েছে, যাতে আহলে বায়তের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার বিবরণ ছিল । (তোহফা-এ-ইসনা আশারীয়া-আরবী অনুবাদ, পৃষ্ঠা- ৩০, শিয়া-সুন্নী ইখতেলাফ-পৃষ্ঠা ৬১)

আলোচ্য উদ্ধৃতি দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, পাক ভারতের অন্যতম মুহাদ্দিস হযরত শাহ আবদুল আযীয মুহাদ্দিস দেহলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির দৃষ্টিতেও শিয়াদের পূর্বোল্লেখিত আক্বীদা সমূহ ভ্রান্ত। সর্বোপরি শিয়াদের ধারণা মতে, পবিত্র কোরআনে সুরা বেলায়াত নামে একটি সুরা ছিল, এ বিশ্বাসটুকুও ভ্রান্ত । এগুলো কারো পক্ষ থেকে শিয়াদের উপর অপবাদ নয়।

شبه نیست که فرقه امامیه منکر خلافت خضرت صدیق اکبر اند ودر کتب فقه مسطور است هر که انکار خلافت صدیق اکبر کند منکر اجماع قطعی شد و کافر گشت-

অর্থাৎ কোন সন্দেহ নেই যে, শিয়াদের ইমামীয়া ফিরকা (অর্থাৎ সপ্ত বা দ্বাদশ ইমামে বিশ্বাসী শিয়া) হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর খেলাফত অস্বীকার করে। ফিকাহ শাস্ত্র মতে, যে ব্যক্তি হযরত আবু বকর সিদ্দিক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুর খিলাফতকে অস্বীকার করল, সে ইজমা কাতয়ী' বা নির্দিষ্ট ঐকমত্যকে অস্বীকার করলো এবং কাফির হয়ে গেল। (ফতোয়া আযিযী পৃষ্ঠা ১৮২)।

• আলা হযরত ইমাম আহমদ রেযা খান ফাযেলে বেরলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি

ইমাম আহমদ রেযা খান ফাযেলে বেরলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন 'রাফেযীগণ যদি আমিরুল মো'মেনীন আলী মুরতাদী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা অানহুকে শেখাইন অর্থাৎ হযরত আবু বকর সিদীক ও হযরত ওমর ফারুক্ব রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমার উপর শ্রেষ্টত্ব দিকে থাকে, তাহলে -বেদআতী। (ফতোয়া-এ খোলাছা, আলমগীরী ইত্যাদি)
       ‎
আর যদি তাদের দু’জনের বা যে কোন একজনের খেলাফত ও ইমামত অস্বীকার করে, তাহলে ফকীহগণ তাদেরকে কাফের বলে অভিহিত করেছেন এবং মুতাকাল্লেমীন বলেছেন, বেদঅাতী। এটাই সতর্কতা মূলক মন্তব্য। আর যদি আল্লাহ তা'আলার সম্পর্কে “বাদা” (অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা কোন বিষয় সংঘটিত হওয়ার পূর্বে জ্ঞান রাখেন না বরং ঘটে যাবার পরই জানেন) মেনে থাকে অথবা বর্তমান কোরআন শরীফকে অসম্পূর্ণ, সাহাবা বা অন্য কেউ এতে বিকৃতি সাধন করেছে বলে বিশ্বাস করে, আমীরুল মোমেনীন (হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বা আহলে বায়তের কোন ইমামকে আল্লাহ তা'আলার নিকট পূর্ববর্তী আম্বিয়া কেরামের চেয়ে শ্ৰেষ্ঠ মনে করে, (যেমন আমাদের শহরের রাফেযী-শিয়া বলে থাকে)। তাদের এ যুগের মুজতাহিদ তা স্পষ্টভাষায় বর্ণনা করেছে, তাহলে নিঃসন্দেহে তারা কাফির। তাদের সম্পর্কে শরীয়তের বিধান মুরতাদদের মত। ফতোয়া-এ-মেহরীরা এর উদ্ধৃতিতে ফতোয়ায়ে আলমগীরীতে বর্ণিত আছে। (ফাতাওয়াল হারামাইন বেরাজফে নাদওয়াতুল মাইন, মাকতাবা-এ ইশিক, তুর্কী। ইমাম আহমদ রেখা আওর রদ্দে শিয়া কৃতঃ আল্লামা আবদুল হাকীম শরফ কাদেরী, পৃষ্ঠা ২১)।

উল্লেখ্য যে, ইমাম আহমদ রেযা ফাযেলে বেরলভী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি শিয়াদের সম্পর্কে বিশটি কিতাব লিখেছেন। এগুলোর তালিকা ইমাম আহমদ রেযা আওর রন্দে শিয়া’ নামক পুস্তিকার পৃষ্ঠা ১৬-১৮ বর্ণিত আছে।

• আল্লামা কামালুদ্দীন ইবনে হুম্মাম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি

হানাফী মাযহাবের বিশ্ববরেণ্য আল্লামা কামালুদ্দীন ইবনে হুম্মাম রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন:

وفی الروافض ان من فضل علیا علی الثلثة فمبتدع وان انکر خلافت الصدیق او عمر رضی الله عنه فهو کافر

অনুবাদঃ রাফেযী যদি শেখাইন অর্থাৎ হযরত আবু বকর ও হযরত ওমর (রা.) কে গালি দেয় (নাউযুবিল্লাহ) তাহলে সে কাফির।

অর্থাৎ শিয়াদের মধ্যে যে হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহুকে পূর্বকার তিনজন খলীফার উপর শ্রেষ্ঠত্ব দেয়, সে বেদঅাতী। আর যদি হযরত আবু বকর ছিদ্দীক বা হযরত ওমর রাদিয়াল্লাহু তাআলা আনহুমার খেলাফতকে (বৈধতা) অস্বীকার করে সে কাফের। (ফতহুল ক্বদীর প্রথম খন্ড, পৃষ্ঠা ৩০৪; মাসিক বাইয়্যেনাত, পৃষ্ঠা ৮৮, করাছী, পাকিমান)।

ফতোয়া-এ- আলমগীরীতে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, কাফির হয়ে যাবে মর্মে রায়টি নিঃসন্দেহে সঠিক।

অনুরূপভাবে যেসব শিয়া শেখাইন অর্থাৎ হযরত আবু বকর ও হয়রত ওমর ফারুক রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুমাকে গালমন্দ করে তাদের সম্পর্কে শরীয়তের বিধান হলো-

الرافضی اذا کان یسب الشیخین و یلعنهما والعیاذ بالله فهو کافر-

অর্থাৎ সেও কাফির। (ফতোয়া-এ- আলমগীরী ; মাসিক বাইসেনাত, পৃষ্ঠা ১৫৭, করাচী, পাকিস্তান)।

একইভাবে নিম্নোক্ত কিতাবগুলোতেও অনুরূপ বিধান রয়েছে। ফতোয়া-এ-বয্যামীয়া, বাহরুর রায়েক, খোলাসাতুল ফতোয়া, দুররে মোখতার, রদ্দূল মোহতার ইত্যাদি।

বিজ্ঞ পাঠকবৃন্দ! শিয়া সম্প্রদায়ের ইসনা আশারী কুফরী আক্বীদার কারণে তাদেরকে ইসলামের সুমহান ইমামগণ বেদমতী ও কাফির বলে রায় পেশ করেছেন। অনুরূপ অভিমত পেশ করেছেন, পাক-ভারতের ওলামা কেরাম, দেওবন্দের শীর্ষস্থানীয় আলেমগণও। তাদের মধ্যে মৌং হুসাইন মাহমুদ মদনী,।মৌং আসগার হুসাইন, মৌং এযায আলী, মুফতি শফী, মৌং শাব্বীর আহমদ ওসমানী, মুফতি আযিযুর রহমান দেওবন্দী, মৌং আমজাদ মাদানী প্রমুখ উল্লেখযোগ্য। অনুরূপভাবে মাযাহেরুল উলুম চাহারণপুর ইউ,পি, এর ওলামা কেরাম। দারুল উলুম নদওয়াতুল ওলামার আলেমগণ । (বিশ্ব ওলামার বিস্তারিত অভিমত জানার জন্য দেখুন- মাসিক বাইয়্যেনাত তৃতীয় সংস্করণ, করাচী, পাকিস্তান)।

ইরান ইসলামী প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা আয়াতুল্লাহ খামেনীর লিখনিতেও ঐ কুফরী আক্বীদা উদ্ধৃতি সহকারে পেশ করা হয়েছে। এবার আপনারই বলুন-খামেনী কি মুসলিম বিশ্বের অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব? ইরান কি ইসলামী রাষ্ট্র নাকি শিয়া রাষ্ট্র? ইরানে কি কোরআন-সুন্নাহর আইন প্রতিষ্ঠিত, না-শিয়া মতবাদ প্রতিষ্ঠিত? খামেনী নিজেদের অদৃশ্য ইমাম "মাহদী মুনতাযার" এর জন্মানুষ্ঠান উপলক্ষে এক ভাষণে। (১৫ শাবান ১৪০০ হিজরী বলেন, বুকে হাত দিয়ে শুনুন এবং নিজ ঈমানের আলোকে বিচার করুন।

ولقد جاء الانبیاء من اجل ارساء قواعد العدالة فی العالم لکنهم لم ینجحوا حتی النبی محمد خاتم الانبیاء الذی جاء لا صلاح البشریة و تنفیذ العدالة وتربیة البشر لم ینجح فی ذالك وان الشخص الذی سینجح فی ذالك ویرسی قواعد العدالة فی جمیع انحاء العالم فی جمیع مراتب الانسانیة للانسان و تقویم الخرافات هو المعدی المنتظر -

অর্থাৎ নিশ্চয়ই সকল নবী আলাইহিমুস সালাম পৃথিবীতে ন্যায়ের মৌলিক নীতিমালা প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে আগমন করেছেন। কিন্তু, তারা সফল হননি,।এমনকি সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহ তা’আলা আলাইহি ওয়াসারাম পর্যন্ত। যিনি মানবতার সংশোধন, ন্যায় প্রচলন ও মানব প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে আগমন করেছেন; তিনি এতে সফল হননি। নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি এ মহান উদ্দেশ্যে সফলকাম হবেন, যিনি সমগ্র পৃথিবীতে মানুষের জন্য মানবতার সর্বস্তরে ন্যায়ের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করবেন এবং বিশ্বব্যাপী সকল বক্রতা ও অন্যায়কে পরিশুদ্ধ করবেন, তিনি হলেন-মাহদী মুনতাযার । (এ ভাষণ তেহরান বেতার হতে প্রচারিত হয় এবং ২১/৬/১০ ইং কুয়েতে"আররাইউল আলম" পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ইসলাম আওর খামেনী মাযহাব পৃষ্ঠা ৩৭৭ ও ৩৭৮)।

উল্লেখ্য যে, ‘ইসনা আশারী' বা দ্বাদশ ইমামীদের মতে তাদের দ্বাদশ ইমাম মুহাম্মদ আল মুনতাযার আল মাহদী ৮৭৮ খৃষ্টাব্দে 'সুররা মারাআ পাহাড়ে মূল কোরআন নিয়ে অদৃশ্য হয়ে যান এবং পুনরায় মাহদী হিসেবে আবির্ভূত হবেন। আর সমগ্র পৃথিবীতে ন্যায় প্রতিষ্ঠায় চূড়ান্তভাবে সফল হবেন। (ইরানী ইনকিলাব পৃষ্ঠা ২৯) মুহাম্মদ আল মুন্তাযার এর জন্ম বার্ষিকী অনুষ্ঠানে খামেনী উপরোক্ত মন্তব্য করে সকল নবী আলাইহিমুস সালাম বিশেষতঃ আমাদের মহান রাসুল সাল্লাল্লাহু তা'আলা আলাইহি ওয়াসাল্লামের সুবিশাল মর্যাদার অবমাননা করলেন।

প্রিয় পাঠক মণ্ডলী! আল্লাহ তাআলা দ্বীনের পূর্ণতা সম্পর্কে এরশাদ করেন -

الیوم اکملت لکم دینکم

অর্থাৎ আজ তোমাদের দ্বীন (ইসলামকে) পরিপূর্ণ করে দিলাম। অথচ খামেনীর দৃষ্টিতে নবী আলাইহিমুস সালামগণ ন্যায় ও মানবতা প্রতিষ্ঠায় সফল হননি। এবার কি আল্লাহ তা'আলার ঘোষণা বিশ্বাস করবেন, না । খামেনীর মন্তব্যে আস্থা স্থাপন করবেন? এ বিচার আপনাদের হাতে ছেড়ে দিলাম।
➖➖➖
শিয়াদের দ্বাদশ ইমামের তালিকা
(১) হযরত আলী
(২) হযরত ইমাম হাসান,
(৩) হযরত ইমাম হোসাইন,
(৪) ইমাম জায়নুল আবেদীন,
(৫) ইমাম মুহাম্মদ বালি,
(৬) ইমাম জাফর সাদিক,
(৭) ইমাম মুসা কাযিম,
(৮) ইমাম আলী রথা রাদিয়াল্লাহ তা'আলা আনহুম,
(৯) ইমাম মুহাম্মদ ইবনে আলী তুর্কী,
(১০) ইমাম আলী ইবনে মুহাম্মদ নবী
(১১) ইমাম হাসান আসকারী ও
(১২) ইমাম মুহাম্মদ আল মুনতাব্দীর আল মাহদী। ইনিই হলেন শিয়াদের মতে "ইমাম-এ-গায়েব" বা অদৃশ্য ইমাম, তিনিই ইমাম মাহদী । সুন্নী মুসলমানদের ইমাম মাহদী আর এ মাহদী এক নয়।

বিশ্ব ওলামার দৃষ্টিতে আয়াতুল্লাহ খামেনী দ্বাদশ ইমামী কট্টর শিয়া। সুতরাং বাংলাদেশের মত সুন্নী মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্রে এ কটর শিয়াকে নিয়ে এতো আয়োজনের পেছনে এ দেশের সরলপ্রাণ সুন্নী মুসলমানদেরকে ক্রমান্বয়ে শিয়া বানানোর কোন গভীর ষড়যন্ত্র আছে কিনা ভেবে দেখা প্রয়োজন।
➖➖➖

 
Top