সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ(রহ.) এর সংক্ষিপ্ত জীবনী।
সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ একজন আধ্যাত্নিক সুফি সাধক। তিনি ১৩৩৬ হিজরীর, ১৯১৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সৈয়দ মুহাম্মদ আহমদ শাহ এবং তার খলিফাও ছিলেন। তার ছোট সন্তান পীর সাবির শাহ পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।
হযরত, হাফিজ ক্বারী, আল্লামা
সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ
জন্ম
১৩৩৬ হিজরী, ১৯১৬ সাল
শেতালু শরীফ, সিরিকোট, হরিপুর, খাইবার পাখতুনখোয়া,পাকিস্তান
মৃত্যু
১৪১৩ হিজরী, ৭ জুন, ১৯৯৩ সাল (৭৭ বছর)
সমাধি
জামে মসজিদ, শেতালু শরীফ, সিরিকোট, হরিপুর, পাকিস্তান
যেখানের শিক্ষার্থী
দারুল উলুম ইসলামিয়া রহমানিয়া
সন্তান
সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ ও পীর সাবির শাহ
পিতা-মাতা
সৈয়দ আহমদ শাহ সিরিকোটি
আত্মীয়
সৈয়দ মুহাম্মদ সালেহ শাহ (ভাই)
লেখাপড়া:
তিনি তার পিতার তত্ত্বাবধানে ১১ বছর বয়সে কোরআন হিফজ করেন এবং তাফসীর, ফিক্বহ, নাহু, উসুল, সারুফ, মানতিক, আক্বাইদ, মা'রিফাত, হিকমাত, ত্বরিকতের শিক্ষা তার পিতা থেকে নেন। তিনি হরিপুরের দারুল উলুম ইসলামিয়া রহমানিয়াতে পড়াশুনা করেন। তিনি তাফসীর ও হাদিসের বিশেষ শিক্ষা নেন মুহাদ্দিস-ই-আজম পাকিস্তান আল্লামা হযরত সরদার আহমেদ লাইলপুরী (রহ.) এবং আল্লামা হযরত হাফিজ আব্দুর রহমান (রহ.) ও আব্দুল হামিদ (রহ.) থেকে শিক্ষা নেন।[১]
বংশগত শাজরা:
হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)
হযরত ফাতেমাতুজ্জাহরা (রা.)
হযরত ইমাম হোসাইন (রা.)
হযরত ইমাম জয়নুল আবেদিন (রা.)
হযরত ইমাম বাক্বের (রা.)
হযরত মুহাম্মদ জাফর সাদেক্ব (রা.)
হযরত সৈয়দ ইসমাইল (রা.)
হযরত সৈয়দ জালাল (রা.)
হযরত সৈয়দ শাহ ক্বায়েম (কায়েন) (রা.)
হযরত সৈয়দ জাফর (ক্বাব) (রা.)
হযরত সৈয়দ ওমর (রা.)
হযরত সৈয়দ গফফার (রা.)
হযরত সৈয়দ মুহাম্মদ গীসুদারাজ (রা.)
হযরত সৈয়দ মাসুদ মাসওয়ানী (রা.)
হযরত সৈয়দ তাগামমুজ শাহ (রা.)
হযরত সৈয়দ ছুদুর (রা.)
হযরত সৈয়দ মুছা (রা.)
হযরত সৈয়দ মাহমুদ (রা.)
হযরত সৈয়দ আবদুর রহিম (রা.)
হযরত সৈয়দ আবদুল গফুর (রা.)
হযরত সৈয়দ আবদুল জালাল (রা.)
হযরত সৈয়দ আবদুর রউফ (রা.)
হযরত সৈয়দ আবদুল করিম (রা.)
হযরত সৈয়দ আবদুল্লাহ (রা.)
হযরত সৈয়দ গফুর শাহ (রা.) [প্রকাশ কাপুর শাহ সিরিকোট]
হযরত সৈয়দ নফফাস শাহ বা তাফাহহুছ শাহ (রা.)
হযরত সৈয়দ আবী শাহ মুরাদ (রা.)
হযরত সৈয়দ ইউসুফ শাহ (রা.)
হযরত সৈয়দ হোসাইন শাহ (হোসাইন খিল) (রা.)
হযরত সৈয়দ হাজী কাসেম (রা.)
হযরত সৈয়দ আবদুল করিম (রা.)
হযরত সৈয়দ ঈসা (রা.)
হযরত সৈয়দ ইলিয়াছ (রা.)
হযরত সৈয়দ খোশহাল (রা.)
হযরত সৈয়দ শাহ খান (রা.)
হযরত সৈয়দ কাজেম (রা.)
হযরত সৈয়দ খানী জামান শাহ (রা.)
হযরত সৈয়দ ছদর শাহ (রা.)
হযরত সৈয়দ আহমদ শাহ সিরিকোটি (রা.)
হযরত সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ (রা.)
হযরত সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ (মা.জি.আ)
তরিকত প্রচার সম্পাদনা:
১৯৪২ সালে ২৬ বছর বয়সে তরিকত প্রচারে তৈয়্যব শাহ বাংলাদেশে আসেন।
ধর্মীয় অবদান সম্পাদনা:
তৈয়্যব শাহ সুন্নিয়তের অগ্রগতিতে বাংলাদেশের শহর এবং দূরস্থিত অঞ্চলগুলোতে অবদান রাখেন। তিনি সুন্নিয়ত এবং ত্বরিকা-এ-আলিয়া কাদেরিয়ার বিস্তার করেন মধ্যপ্রাচ্যে, বার্মার (বর্তমান মায়ানমার) রেঙ্গুনে। তিনি পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ এ অনেক মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। যেমন- বাংলাদেশে মোহাম্মদপুর কাদেরিয়া তৈয়্যবিয়া আলিয়া (মোহাম্মদপুর,ঢাকা), মাদ্রাসা-এ- তৈয়্যবিয়া ইসলামিয়া সুন্নিয়া (হালিশহর,চট্টগ্রাম), মাদ্রাসা-এ- তৈয়্যবিয়া হাফিজিয়া (কালুরঘাট,চট্টগ্রাম), মাদ্রাসা-এ-তৈয়্যবিয়া অদুদিয়া সুন্নিয়া (চন্দ্রঘোনা,চট্টগ্রাম) ইত্যাদি, পাকিস্তানের করাচির আওরঙ্গী টাউনে মাদ্রাসা-এ- তৈয়্যবিয়া ও মায়ানমারে মাদ্রাসা-এ- আহলে সুন্নাত।
এছাড়াও তিনি বাংলাদেশে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (ﷺ)'র শুভাগমনের দিন উপলক্ষে আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী (ﷺ)'র পথিকৃৎ।
সাংগঠনিক অবদান সম্পাদনা
হযরত সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ সুন্নিয়ত ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৮৬ সালে গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেন এবং আরো মজলিশে গাউসিয়া সিরিকোটিয়া পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি সুন্নি রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা'র এবং আরো অনেক ধর্মীয় সংগঠনের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। [১]
প্রকাশনায় অবদান সম্পাদনা:
১৯৭৬ এর ১৬ ডিসেম্বর তারিখে তিনি বাংলা ভাষায় সুন্নিয়াত ভিত্তিক সাহিত্য প্রকাশনার উপর গুরুত্বারোপ করে মাসিক তরজুমান-এ-আহলে সুন্নাত প্রকাশের নির্দেশ দেন এবং জানুয়ারি ১৯৭৭ থেকে আনজুমান থেকে এ প্রকাশনার যাত্রা শুরু হয় এবং পরবর্তীতে নিবন্ধন লাভের পর অদ্যাবধি সুন্নিয়তের শীর্ষস্থানীয় মাসিক প্রকাশনার ক্ষেত্রে এখনো প্রধান এবং প্রাচীনতম এই মাসিক তরজুমান।[২]
রাজনৈতিক কর্মকান্ড সম্পাদনা:
তিনি পাকিস্তান আন্দোলনের একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি নিপীড়নের বিরোধিতা করেছিলেন।[৩]
তাঁর খলিফাগণ :
সৈয়দ মুহাম্মদ তাহের শাহ
পীর সাবির শাহ
নুর মোহাম্মদ আল কাদেরী
আমিনুর রহমান আল কাদেরী
ওয়াজের আলী আল কাদেরী
ইসমাইল মোহাম্মদ দাউদজী বাগীয়া
সৈয়দ মোহাম্মদ ছৈয়দুর রহমান শাহ
মৃত্যু সম্পাদনা
সৈয়দ মুহাম্মদ তৈয়্যব শাহ ১৪১৩ হিজরীর ১৫ ই জিলহজ্জ্ব, ৭ই জুন, ১৯৯৩ সালে সোমবার সকাল ৯.০০ টার দিকে ইন্তেকাল করেন।
তথ্যসূত্র:
উইকিপিডিয়া।
সংকলক:
স্বাধীন আহমেদ(সগে মাদীনা)।
Related Posts
রবিউস সানি মাসে ওফাতপ্রাপ্ত কয়েকজন বুজুর্গ
রবিউস সানি মাসে শাহাদাত ও ওফাত প্রাপ্ত কয়েকজন বুজুর্গঃ ১। ইমাম বায়হাকী রহমাতুল্লাহি আলাইহি - ১ রবি[...]
আওলাদে রাসূল (ﷺ) ড. সৈয়দ আলাওয়ী আল মালিকী আল মাক্কী (রহ.) এর জীবনী
কাকে জান্নাতুল মুয়াল্লাতে মা খাদিজাতুল কোবরা রা. এর রওজা পাকের পাদদেশে হযরত খাজা ওসমান হারুনী রা. এ[...]
আলা হযরত বিষয়ে শায়খ আলাভী আল মালিকী (রহ.) ও শায়খ হাবিব ওমর (মা.জি.আ) এর বাণী
ইমাম আহমদ রেজা খান (রহ.) বিষয়ে শায়খ হাবিব ওমর হাফিজাহুল্লাহ এর বাণী"ভারত কিংবা পাকিস্তান থেকে যখন কে[...]
বিস্মৃত এক রাজদুলারীঃ সাইয়্যিদা নাফিসা আত্ তাহিরা (رضي الله عنه)
বিস্মৃত এক রাজদুলারীঃ সাইয়্যিদা নাফিসা আত্ তাহিরা (رضي الله عنه)🖋লেখকঃ মুহাম্মদ শাহীদ রিজভী(✰) জোছ[...]
সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী(রহ.) এর সংক্ষিপ্ত জীবনি।
সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারী(রহ.) এর সংক্ষিপ্ত জীবনি। সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী, (ইংরেজি: S[...]