নবী করীম (ﷺ) নাম শুনে বৃদ্ধা আঙ্গুলে চুমা খেয়ে চোখে লাগানো সুন্নাত ।
🖋মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ বাহাদুর (কিতাবঃ প্রমাণিত হাদিসকে জাল বানানোর স্বরূপ উন্মোচন) 
হাদীস নং-১:

‘‘হযরত ওয়াহাব ইবনে মুনাব্বাহ (رضي الله عنه) বলেন, বনী ইসরাঈলের মধ্যে এক ব্যক্তি ছিল অত্যন্ত পাপী, যে ২০০ বছর পর্যন্ত আল্লাহর নাফরমানী করেছে। যখন সে মৃত্যুবরণ করে মানুষেরা তাকে এমন স্থানে নিক্ষেপ করল, যেখানে আবর্জনা ফেলা হতো। তখন হযরত মুসা (عليه السلام) এর প্রতি ওহী এলো যে, লোকটিকে ওখান থেকে তুলে যেন তার ভালভাবে জানাযার নামায পড়ে তাঁকে দাফন করা হয়। হযরত মুসা (عليه السلام) আরজ করলেন, হে আল্লাহ! বনী ইসরাঈল সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, লোকটি ২০০ বছর পর্যন্ত তোমার নাফরমানী করেছিল। ইরশাদ হলো, হ্যাঁ, তবে তার একটি ভাল অভ্যাস ছিল। যখন সে তাওরাত শরীফ তেলাওয়াত করতো, যতবার আমার হাবীব হযরত মুহাম্মদ ( ) এর নাম মোবারক দেখত তখন সেটা ততবার চুম্বন করে চোখের উপর রাখত এবং তার প্রতি দুরূদ পাঠ করত। এজন্য আমি তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি এবং সত্তর জন হুর স্ত্রী স্বরূপ তাকে দান করেছি।’’
উক্ত হাদীসের ব্যাপারে কোনো মুহাদ্দিস মন্তব্য করেননি। তাদের নীরবতা পালন দ্বারা বুঝা গেল হাদিসটি সহীহ বা বিশুদ্ধ কারণ তার ব্যাপারে কোন মুহাদ্দিসের বিরোধীতা পাওয়া যায়নি।
তথ্যসূত্রঃ
ক. ইমাম আবু নঈম : হুলিয়াতুল আউলিয়া : ৩/১৪২ পৃ.
খ. আল্লামা বুরহানুদ্দীন হালভী : সিরাতে হালবিয়্যাহ ১ম খন্ড পৃষ্ঠা-৮৩
গ. আল্লামা শফী উকাড়ভী : জিকরে জামীল : ৩৫৪ পৃষ্ঠা
ঘ. জালালুদ্দীন সুয়ূতি : খাসায়েসুল কোবরা :১/৩০,হাদিস : ৬৮, মাকতুত-তাওফিকহিয়্যাহ, বয়রুত।
ঙ. আল্লামা আবদুর রহমান ছাফূরী : নুযহাতুল মাযালিস : ২/১৪২ পৃ.
চ. আল্লামা দিয়ার বকরী : আল খামীস ফি আহওয়ালে আনফাসে নাফীস : ১/২৮২ পৃ.
হাদীস নং ২:

এ ব্যাপারে হযরত আদম (عليه السلام) এর আমলঃ বিখ্যাত মুফাস্সির আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) তাঁর উল্লেখযোগ্য তাফসীর তাফসীরে ‘রুহুল বায়ানে’ লিখেন,-‘‘কাসাসুল আম্বিয়া কিতাবে বর্ণিত আছে যে, হযরত আদম (عليه السلام) জান্নাতে অবস্থানকালে নূরনবী হযরত মুহাম্মদ ( ) এর সাথে সাক্ষাতের জন্যে আগ্রহ প্রকাশ করেন। অত:পর আল্লাহ তা‘য়ালা তাঁর নিকট ওহী প্রেরণ করেন যে, হে আদম! তিনি তোমার পৃষ্ঠ হতে শেষ যামানায় প্রকাশ হবেন। তা শুনার পর তিনি জান্নাতে অবস্থানকালে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানালেন। বিনিময়ে আল্লাহ তা’য়ালা ওহী প্রেরণ করলেন, যে নূরে মুহাম্মদী ( ) তোমার ডান হাতের শাহাদাত আঙ্গুলীর মধ্যে স্থানান্তরিত করেছি, তখন সে অঙ্গ হতে তাসবীহ পাঠ আরম্ভ হলো। এজন্যই এই আঙ্গুলকে তাসবীহ পাঠকারী আঙ্গুল বলা হয়। যেমন ‘রওযাতুল ফায়েক’ কিতাবেও বর্ণিত আছে, অথবা আরেক বর্ণনায় রয়েছে, আল্লাহ তা’য়ালা আপন হাবীব (ﷺ) এর সৌন্দর্য প্রকাশ করলেন দুই বৃদ্ধাঙ্গুলীর উপর যেভাবে আয়নাতে দেখা যায়। তখন আদম (عليه السلام) দুই বৃদ্ধাঙ্গুলে চুম্বুন করে স্বীয় চোখের উপর মালিশ করলেন। এটি দলীল হিসেবে প্রমাণিত হলো যে, তাঁর সন্তানাদীর জন্য। অতঃপর জিবরাঈল (عليه السلام) এই ঘটনা হুযুর ( ) কে জানালেন। হুযুর এর-(ﷺ) বললেন, যেই ব্যক্তি আযানের মধ্যে আমার নাম মোবারক শুনে দুই বৃদ্ধাঙ্গুলী চুম্বন করবে আর চোখে মালিশ করবে, সে কখনো অন্ধ হবে না।’’

তথ্যসূত্রঃ
ক.আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী : তাফসীরে রুহুল বয়ান : ৭/২২৯ : সূরা মায়েদা আয়াত : ৫৭ নং এর ব্যাখ্যা
খ.আবদুর রহমান ছাফুরী, নুযাহাতুল মাযালিস,২/৭৪পৃ.

 হাদীস নং-৩:

হযরত খিযির (عليه السلام) কর্তৃক রাসূল (পাক ) এর নাম শুনে চুমু খাওয়ার আমল বর্ণিত ইমাম আবু আব্বাস আহমদ বিন আবি বকর ইয়ামানী (رحمة الله) তাঁর লিখিত উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ موجبات الرحمة و عزائم المغفرة এর মধ্যে হযরত খিযির (عليه السلام) থেকে বর্ণিত আছে, যে ব্যক্তি মুয়াজ্জিনের কণ্ঠে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মদার রাসূলূল্লাহ’ শোনে বলবে مرحبا بحبيبى و قرة عينى محمد بن عبد الله صلى الله عليه وسلم )মারহাবা বি হাবিবি ওয়া কুররাতো আইনী মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ( ) অতঃপর স্বীয় বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয় চুম্বন করে চোখে লাগাবে, তাহলে তার চোখে কখনও ব্যথা হবে না এবং সে কোন দিন অন্ধ হবে না।’’

তথ্যসূত্রঃ
ক. আল্লামা ইমাম সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : ১/৩৮৩ : হাদিস : ১০২১
খ. আল্লামা আযলূনী : কাশফুল খাফা : ২/২৭০ : হাদিস : ২২৯৬
গ. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : মওদ্বুআতুল কবীর : ১০৮ পৃ
ঘ. আল্লামা মুফতী আহমদ ইয়ার খাঁন নঈমী : জাআল হক : ২/২৪৬ পৃ
হাদীস নং-৪:

হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) এর আমল এবং সনদ তাত্ত্বিক বিশ্লেষন
হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) হতে বর্ণিত, তিনি মুয়ায্যিনকে ‘আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার’ রাসূলূল্লাহ বলতে শোনলেন, তখন তিনিও তা বললেন এবং বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ে চুমু খেয়ে তা চোখে বুলিয়ে নিলেন। তা দেখে রাসূল (পাক ) ইরশাদ করেন : যে ব্যক্তি আমার বন্ধুর ন্যায় আমল করবে, তার জন্য আমার সুপারিশ বৈধ হয়ে গেল।’’
তথ্যসূত্রঃ
ক. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেছেন যে, এতটুকুই যথেষ্ট যেহেতু হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) আমলটি করেছেন এবং তিনি পর্যন্ত সনদটি প্রসারিত।
খ. ইমাম আবদুর রহমান সাখাভী : মাকাসিদুল হাসানা : ৩৮৩ : হাদিস : ১০২১
গ. আল্লামা ইমাম আযলূনী : কাশফুল খাফা : ২/২৫৯ : হাদিস : ২২৯৬
ঘ. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী : আসরারুল মারফূ : ৩১২ পৃষ্ঠা : হাদিস : ৪৫৩
ঙ. আল্লামা ইমাম তাহতাভী : মারাকিল ফালাহ : ১৬৫ পৃ. : কিতাবুল আযান
চ. আল্লামা শাওকানী : ফাওয়াহিদুল মওদ্বুআত : ১/৩৯ পৃ.
ছ. আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী : তাফসীরে রুহুল বায়ান : ৭/২২৯ পৃ
জ. আল্লামা তাহের পাটনী : তাযকিরাতুল মওদ্বুআত : ৩৪ পৃ
ঝ. আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়তী : লাআলীল মাসনূ আ : ১৬৮-১৭০ পৃ

উক্ত হাদিসটি সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য মুহাদ্দিসগণের মতামত আমি তুলে ধরব, যাঁরা হাদিসটি সম্পর্কে বিভিন্ন মন্তব্য করেছেন।
১. ইমাম সাখাভীর অভিমতঃ আল্লামা ইমাম সাখাভী (رحمة الله) হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) এর বর্ণিত হাদিসটি সংকলন করে বলেন, لا يصح ‘হাদিসটি সহীহ নয়।’ হাদিসটি সহীহ নয় বললে, “হাসান” হাদিস বুঝায়। এমনকি মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) বলেন, لا يصح لا ينافى الحسن-
-‘‘কোন মুহাদ্দিসের বক্তব্য হাদিসটি সহীহ নয়-তা দ্বারা হাদিসটি “হাসান” হওয়াতে কোন অসুবিধা বা নিষেধ করে না।’’ ইতিপূর্বে আমি ইমাম সাখাভীর বক্তব্যও পেশ করেছি। বুঝা গেল, হাদিসটি কমপক্ষে “হাসান” হাদিস যা দলীল হিসেবে দাড় করানোর গ্রহণযোগ্যতা রাখে।
২. আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) এর অভিমতঃ আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী (رحمة الله) তাঁর গ্রন্থে ইমাম সাখাভী (رحمة الله)‘র রায় পেশ করে সমাধানের কথা বলেন যে- ‘‘আমার কথা হলো হাদিসটির সনদ যেহেতু হযরত আবু বকর সিদ্দিক (رضي الله عنه) পর্যন্ত প্রসারিত (মারফূ হিসেবে প্রমাণিত), সেহেতু আমলের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট। কেননা হুযুর (পাক ) ইরশাদ করেছেন, তোমরা আমার পর আমার সুন্নাত ও আমার খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতকে আকড়ে ধরো।’’

দলীল নং ৫:

আল্লামা তাহের পাটনী ও শাওকানীর অভিমতঃ- আহলে হাদিস মাওলানা কাযী শাওকানী তার প্রসিদ্ধ গ্রন্থ ফাওয়াহিদুল মওদ্বুআত ১/১৯ পৃষ্ঠায় হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) বর্ণিত হাদিসটি বর্ণনার পর লিখেন,
رواه الديلمى فى مسند الفردوس عن ابى بكر مرفوعا قال ابن طاهر فى التذكرة: لا يصح
-‘‘উক্ত হাদিসটি ইমাম দায়লামী (رحمة الله) ‘মুসনাদিল ফিরদাউস’ গ্রন্থে বর্ণনা করেন মারফূ হিসেবে (যার সনদ রাসূল (পাক ) পর্যন্ত পৌঁছেছে উক্ত হাদিস সম্পর্কে আল্লামা তাহের পাটনী (رحمة الله) তার “তাযকিরাতুল মওদ্বুআত’’ গ্রন্থে বলেন হাদিসটি সহীহ পর্যায়ের নয়(তবে হাসান)।’’

আর আল্লামা তাহের পাটনীর মুল বক্তব্যটি হচ্ছে তার তাযকিরাতুল মওদ্বুআত গ্রন্থের : ১/৩৪ পৃষ্ঠায়। হাদিসটি সহীহ নয় বলতে “হাসান” হাদিস বুঝায় যা আমি কিতাবের শুরুতে অসংখ্য মুহাদ্দিসের মতামত দিয়ে আলোচনা করে এসেছি। শুধু তাই নয় আল্লামা তাহের পাটনী আরও বলেন, উক্ত হাদিসটিও কয়েক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে।
তাই তার মত অনুসারে হাদিসটি “হাসান” হিসেবে প্রমাণ পাওয়া গেল তা ছাড়া ইমাম সাখাভী মাকাসিদুল হাসানার ৩৯১ পৃষ্ঠায় উক্ত হাদিসটির অনেকগুলো সূত্র ও আমল বর্ণনা করেছেন যেমনটি উল্লেখ করেছেন আল্লামা আযলূনী তার কাশফুল খাফা : ২/১৮৫পৃ.হাদিস : ২২৯৪-এ।
কিতাবের শুরুতে অসংখ্য মুহাদ্দিসের মতামত দিয়ে আলােচনা করে এসেছি। শুধু তাই নয় আল্লামা তাহের পাটনী আরও বলেন, উক্ত হাদিসটিও কয়েক সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। তাই তার মত অনুসারে হাদিসটি “ হাসান ” হিসেবে প্রমাণ পাওয়া গেল। তাছাড়া ইমাম সাখাভী মাকাসিদুল হাসানার ৩৯১ পৃষ্ঠায় উক্ত হাদিসটির অনেকগুলাে সূত্র ও আমল বর্ণনা করেছেন যেমনটি উল্লেখ করেছেন আল্লামা আযলুনী তার কাশফুল খাফা, ২ / ১৮৫পৃ . হাদিস : ২২৯৪ - এ। 

আর দ্বঈফ হাদিসও যখন একাধিক সনদে বর্ণিত হয় তখন হাদিসটি হাসান হয়ে যায় যা আমি শুরুতে বিস্তারিত আলােকপাত করেছি। 

উক্ত প্রচলিত জাল হাদীস গ্রন্থে শুধু মাকাসিদুল হাসানার উদ্ধৃতি দিয়ে ১২২ পৃষ্ঠায় লিখেছে এটি প্রমাণিত নয়। তারা কেমন মিথ্যুক আপনারাই দেখুন অথচ ইমাম সাখাভী বলেছেন হাদিসটি সহিহ এর অন্তর্ভুক্ত নয় অর্থাৎ সহিহর নিম্নে হাসান। তাই আমি মিথ্যাবাদীকে বলতে চাই এমন হক্কানী লেখকের নাম দিয়ে মিথ্যা লেখা বন্ধ করুন। অথচ তাদের দলের আরেকজন মাওলানা বাবুনগরী তার বইয়ের ১১৭ পৃষ্ঠায় লিখেছে ইমাম সাখাভী হাদিসটি সম্পর্কে বলেছেন হাদিসটি সহিহ নয়। তাদের দুজনের মধ্যে কেমন পার্থক্য দেখুন। সুতারাং মাওলানা মতিউর রহমানের মুনাফিকী স্বয়ং তাদের দলের আলেমই তুলে ধরেছেন। 

আল্লামা ইমাম আযলূনী (رحمة الله) এর অভিমতঃ আল্লামা আযলুনী (رحمة الله) হাদিসটি তার গ্রন্থে বর্ণনা করেন বলেন, “ উক্ত হাদিসটি ইমাম দায়লামী (رحمة الله) তার মুসনাদিল ফিরদাউস গ্রন্থে হযরত আবু বকর (رضي الله عنه) হতে মারফু সূত্রে বর্ণনা করেন আল্লামা ইমাম সাখাভী (رحمة الله)। হাদিসটি সম্পর্কে বলেন, হাদিসটি সহিহ পর্যায়ের নয়।" এ ছাড়া আল্লামা আযলূনী, মােল্লা আলী ক্বারী এর বক্তব্য সহ অনেক ঘটনা বর্ণনা করেছেন যার আলােচনা সামনে আসছে। 

ইমাম ইবনে আবেদীন শামী (رحمة الله) এর অভিমতঃ
ইমাম শামী (رحمة الله) উক্ত হাদিসটি সম্পর্কে বলেন, ইমাম ইসমাঈল জারহী (رحمة الله) বলেন, 
“এ ব্যাপারে মারফু হিসেবে যে ক'টি সনদ বর্ণিত হয়েছে সে সবগুলাের একটিও সহিহ পর্যায়ের নয়।"

তথ্যসূত্র-
● আল্লামা আলুনী : কাশফুল খাফা : ২/১৮৫পৃ . হাদিস : ২২৯৪। 

ইমাম শামী (رحمة الله) এর বক্তব্য দ্বারা বুঝা যায় হাদিসটি সহিহ নয় ” আর সহিহ নয় বলতে হাদিসটি হাসান " বুঝায়, যা আমি কিতাবের শুরুতে বিস্তারিতভাবে আলােচনা করে এসেছি, পাঠকদের পুনরায় আলােচনাটি আবার দেখার অনুরােধ রইল। বিশ্ব বিখ্যাত মুফাসসির, মুহাদ্দিস, ফকিহ আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) এর অদ্বিতীয় তাফসীর গ্রন্থ “ রুহুল বায়ানে ' ষষ্ঠ পারার সূরা মায়েদার ৫৭ নং আয়াতের তাফসীরে লিখেন, “ আযানে মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ' বলার সময় নিজের শাহাদাতের আঙ্গুলসহ বৃদ্ধাঙ্গুলীদ্বয়ের নখে চুমু দেয়ার বিধানটিতে কিছুটা দুর্বলতা বিদ্যমান। কেননা এ বিধানটা মারফু হাদিস দ্বারা প্রমাণিত নয়। কিন্তু মুহাদ্দিসীনে কেরাম এ ব্যাপারে একমত যে আকর্ষণ সৃষ্টি ও ভীতি সঞ্চারের বেলায় দ্বঈফ সনদের হাদিসের উপর আমল করা জায়েয।"

আরেকটু সামনে অগ্রসর হয়ে আল্লামা ইসমাঈল হাক্কী (رحمة الله) বলেন, "ইমাম সাখাভী (رحمة الله) তার আল মাকাসিদুল হাসানা 'কিতাবে বলেছেন, উক্ত হাদিসটি মারফু হিসেবে সহিহ পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত নয়। আর মারফু বলা হয় ঐ হাদিসকে যা সাহাবী রাসূলে পাক (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেন।"

তথ্যসূত্র- 
●আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী : রুল মুখতার : বাবুল আযান : ১ / ৩৯৮ পৃ.
● আল্লামা ইসমাঈল হাকী, তাফসীরে রুহুল বায়ান, ১ / ২২৯পৃ . দাজল কুতুব ইলমিয়্যাহ, বয়রুত, লেবানন। 

 ওহাবী ও আহলে হাদীস কে দাঁতভাঙ্গা জবাব দেখুনঃ==
 যখন আজানে হুজুর (ﷺ) এর পবিত্র নাম মোবারক শুনবে তখন দরূদ শরীফ পড়বে অতঃপর বুড়ো আঙ্গুলে চুমা দিয়ে চোখে লাগাবে তাহলে চোখ কখনও অন্ধ হবে না এবং চোখও উঠবে না ।
(১) শাফেয়ী মাজহাবের বিখ্যাত কিতাবঃ- “ইয়ানাতুত ত্বলিবিন আলা হাল্লিল আলফাজি ফাতাহিল মুজিনে, এর ২৪৭ পৃষ্ঠা ।
(২) মালিকী মাজহাবের বিখ্যাত কিতাবঃ- ” কিফায়াতুত ত্বলিবের রব্বানী লি রিসালাত ইবনে জায়িদ আলকাইর ওয়ানী, এর ১৬৯ পৃষ্ঠা ।
আর দ্বঈফ হাদিসও যখন একাধিক সনদে বর্ণিত হয় তখন হাদিসটি “হাসান” হয়ে যায়।

 
Top