ঈমানে মুফাসসাল


اٰمَنْتُ بِاللهِ وَ مَلٰٓئِكَتِهٖ وَ كُتُبِهٖ وَ رُسُلِهٖ وَ الْيَوْمِ الْاٰخِرِ

وَ الْقَدْرِ خَيْرِهٖ    وَ شَرِّهٖ مِنَ اللهِ تَعَالٰى وَ الْبَعْثِ بَعْدَ الْمَوْتِ ط


অনুবাদ: আমি ঈমান আনলাম আল্লাহ্ তাআলার উপর, তাঁর ফিরিশতাগণের উপর, আসমানী কিতাব সমূহের উপর, তাঁর রাসুলগণের উপর, শেষ দিবসের উপর, আল্লাহ্ তাআলার পক্ষ থেকে নির্ধারিত তকদিরের ভাল-মন্দের উপর এবং মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের উপর। 



ঈমানে মুজমাল


اٰمَنْتُ بِاللهِ كَمَا هُوَ بِاَسْمَآئِهٖ وَصِفَاتِهٖ وَ قَبِلْتُ جَمِيْعَ اَحْكَامِهٖۤ اِقْرَارٌۢ

بِا للِّسَانِ وَ تَصْدِيْقٌۢ بِالْقَلْبِ ط


অনুবাদ: আমি আল্লাহ তাআলার উপর ঈমান আনলাম, যেভাবে তিনি নিজের নাম সমূহ ও আপন গুণাবলীর সাথে আছেন এবং আমি তাঁর সমস্ত বিধি-বিধানকে মৌখিক স্বীকৃতি সহকারে ও অন্তরের সত্যায়নের মাধ্যমে মেনে নিলাম। 


ছয় কলেমা


প্রথম ‘কলেমা তায়্যিব’


لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْ لُ اللهِ ط


অনুবাদ: আল্লাহ্ তাআলা ছাড়া কোন মাবুদ নেই, (হযরত) মুহাম্মদ     صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم আল্লাহর রাসুল।


দ্বিতীয় ‘কলেমা শাহাদাত’


اَشْهَدُ اَنْ لَّاۤاِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ

وَ اَشْهَدُ اَنَّ مُحَمَّدًا عَبْدُهٗ وَ رَسُوْلُهٗ ط


অনুবাদ: আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনি একক, তাঁর কোন শরীক (অংশীদার) নেই এবং আমি আরো সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, (হযরত) মুহাম্মদ صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم    তাঁর বান্দা ও রাসুল। 


তৃতীয় ‘কলেমা তামজীদ’


سُبْحٰنَ اللهِ وَ الْحَمْدُ لِلّٰهِ وَ لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ وَ اللهُ اَكْبَرُ ط

وَ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْمِ ط


অনুবাদ: আল্লাহ পবিত্র। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ তাআলা ছাড়া কোন মাবুদ নেই। আল্লাহ মহান। আর গুনাহ থেকে বাঁচার শক্তি ও নেক আমল করার সামর্থ্য এক মাত্র আল্লাহরই পক্ষ থেকে, যিনি সবার চেয়ে মহান, অতীব মর্যাদাবান।



চতুর্থ ‘কলেমা তাওহীদ’


لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ  وَحْدَهٗ لَا شَرِيْكَ لَهٗ ط  لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ يُحْىٖ وَ يُمِيْتُ وَ هُوَ حَىٌّ لَّا يَمُوْتُ اَبَدًا اَبَدًاط ذُو الْجَلَالِ  وَ الْاِكْرَامِط بِيَدِهِ الْخَيْرُط وَ هُوَ عَلٰى كُلِّ شَىْ ءٍ قَدِيْرٌط


অনুবাদ: আল্লাহ্ তাআলা ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তিনি অদ্বিতীয় তাঁর কোন শরীক নেই। সমগ্র সাম্রাজ্য একমাত্র তাঁর। সমস্ত প্রশংসাও একমাত্র তাঁর জন্য। তিনিই জীবন দান করেন। আর তিনিই মৃত্যু দান করেন । তিনি চিরঞ্জীব;তাঁর কখনো মৃত্যু আসবে না। তিনি খুবই মহত্ব ও মর্যাদার অধিকারী। সমস্ত মঙ্গল তাঁরই হাতে। তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান। 


পঞ্চম ‘কলেমা ইস্তিগফার’


اَسْتَغْفِرُ اللهَ رَبِّىْ مِنْ كُلِّ ذَنْۢبٍ اَذْنَبْتُهٗ عَمَدًا اَوْ خَطَأً سِرًّا اَوْ عَلَانِيَةً وَّ اَتُوْبُ اِلَيْهِ مِنَ الذَّنْۢبِ الَّذِىْۤ اَعْلَمُ وَ مِنَ الذَّنْۢبِ الَّذِىْ لَاۤ  اَعْلَمُ اِنَّكَ اَنْتَ عَلَّامُ الْغُيُوْبِ وَ سَتَّارُ الْعُيُوْبِ وَ غَفَّارُ الذُّنُوْبِ وَ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْمِ ط


অনুবাদ: আমি আমার পালনকর্তা আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রর্থনা করছি ঐ সমস্ত গুনাহ থেকে যা আমি জেনে শুনে অথবা ভুলবশত করেছি, গোপনে করেছি অথবা প্রকাশ্যে এবং আমি তাঁর দরবারে তাওবা করছি ঐ সমস্ত গুনাহ হতে যা আমার জানা রয়েছে এবং ঐ গুনাহ হতে যা আমার জানা নেই। নিশ্চয় তুমি গাইবের জ্ঞান রাখ, দোষ-ত্রুটি গোপনকারী, গুনাহ্ ক্ষমাকারী। আর গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার ক্ষমতা আর নেক আমল করার তাওফীক একমাত্র আল্লাহ্রই পক্ষ থেকে। যিনি অতীব উচ্চ মর্যাদবান ও অত্যন্ত মহান। 


ষষ্ঠ ‘কলেমা রদ্দে কুফর’


اَللّٰهُمَّ  اِنِّىْۤ اَعُوْذُ بِكَ مِنْ اَنْ اُشْرِكَ بِكَ شَيْئًا وَّ اَنَا اَعْلَمُ بِهٖ  وَ اَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لَاۤ اَعْلَمُ بِهٖ تُبْتُ عَنْهُ وَ تَبَرَّأْتُ مِنَ الْكُفْرِ  وَ الشِّرْكِ وَالْكِذْبِ وَ الْغِيْبَةِ وَ الْبِدْعَةِ وَ النَّمِيْمَةِ وَ الْفَوَاحِشِ وَ الْبُهْتَانِ وَ الْمَعَاصِىْ كُلِّهَا وَ اَسْلَمْتُ وَ اَقُوْلُ  لَاۤ اِلٰهَ اِلَّا اللهُ مُحَمَّدٌ رَّسُوْلُ اللهِ ط صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم 


অনুবাদ: হে আল্লাহ! জেনে শুনে তোমার সাথে কিছুকে শরিক করা থেকে আমি তোমার কাছে আশ্রয় চাই। তোমার কাছে আমি সেই সব (শিরকের) গুনাহের ক্ষমা প্রার্থনা করছি যা আমার জানা নেই। আমি সেই গুনাহ থেকে তাওবা করছি।আর আমি কুফর, শিরক, মিথ্যা, গীবত, বিদআত, চুগোলখুরি, অশ্লীলতাঅপবাদ দেওয়া এবং সকল প্রকার গুনাহের উপর (স্থায়ীভাবে) অসন্তুষ্ট। আমি ইসলাম গ্রহণ করেছি। আমি বলছি, আল্লাহ্ তাআলা ছাড়া কোন মাবুদ নেই; (হযরত) মুহাম্মদ صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم আল্লাহ রাসুল। 


পান গুটকা ধ্বংসাত্মকতা


শায়খে তরীকত, আমীরে আহলে সুন্নাত, দা’ওয়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা হযরতে আল্লামা মওলানা মুহাম্মদ ইলইয়াস আত্তার কাদিরী রযবী যিয়ায়ীدَامَتۡ بَرَکاتُہُمُ الۡعَالِیَہ এর পক্ষ থেকে-


আফসোস! আজকাল, পান, গুটকা, সুগন্ধীময় চুন সুপারি বিশিষ্ট মিষ্টান্ন এবং সিগারেট পান ইত্যাদি ব্যাপক হয়ে গেছে। আল্লাহ্ তাআলা না করুক যদি এ গুলোর মধ্যে কোন একটিতে অভ্যস্থ হোন তবে সবচেয়ে ডাক্তারের নিষেধের কারণে শত অনুতপ্ত হয়ে পরিত্যাগ  করার পূর্বে প্রিয় মাহবুব صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর উম্মতের নগন্য সহানুভূতিশীল সগে মদীনা (عُفِىَ عَنْهُ) এর আকুল আবেদন মেনে পরিত্যাগ করুন।


অনেক সময় ইসলামী ভাইদের পান গুটকা দ্বারা রঞ্জিত মুখ দেখে মন কেঁদে উঠে এবং যখন কেউ এসে বলে যে, আমি পান বা সিগারেটের অভ্যাস বর্জন করেছি তখন মন খুশি হয়ে যায়। উম্মতের মঙ্গল কামনার প্রেরণা নিয়ে আবেদন করছি-অধিক হারে পান-গুটকা ইত্যাদি খাদকদের সর্ব প্রথম মুখ প্রভাবিত হয়। এক ইসলামী ভাই, যে গুটকা খেতে খেতে মুখ লাল করেছিল তার কাছে আমি (সগে মদীনা عُفِىَ عَنْهُ) মুখ খুলতে বললাম, সে কোন ভাবে একটু খুলতে সক্ষম হলেন, জিহ্বা বের করতে অনুরোধ করলাম ভালভাবে বের করতে পারল না। জিজ্ঞাসা করলাম: মুখে ফোঁড়া হয়েছে? বললো: জ্বী হ্যাঁ। আমি তাকে গুটকা খাওয়া পরিত্যাগ করতে পরামর্শ দিলাম। اَلْحَمْدُ لِلّٰہِ  عَزَّوَجَلَّ সে এ গরীবের কথা মেনে গুটকা খাওয়ার অভ্যাস ছেড়ে দিলো। প্রত্যেক পান বা গুটকা খাদক এভাবে আপন মুখের অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখুন কেননা সেটার অধিক ব্যবহার মুখের নরম মাংসকে শক্ত করে দেয় যার কারণে মুখ পূর্ণভাবে খোলা এবং জিহ্বা ঠোঁটের বাইরে বের করা কষ্টকর হয়ে যায়। সাথে সাথে নিয়মিত চুন ব্যবহারে মুখের চামড়া ছিড়ে ফোড়া হয়ে যায় এবং এটাই মুখের আলসার। এসব লোকের সুপারি গুটকা, মিষ্টি জর্দ্দা ও পান ইত্যাদি থেকে তৎক্ষণাৎ বিরত থাকা চাই নতুবা এই আলসার বৃদ্ধি পেয়ে আল্লাহর পানাহ ক্যান্সারের রূপ ধারণ করতে পারে।

 
Top