নামাযীর সামনে দিয়ে গমন করা মারাত্মক গুনাহ্


 (১) রহমতে আলম, নূরে মুজাস্সাম, রাসূলে আকরাম صَلَّی اللہُ تَعَالٰی عَلَیۡہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم ইরশাদ করেন:“যদি কেউ জানত যে, আপন নামাযী ভাইয়ের সামনে দিয়ে পথ অতিক্রম করার মধ্যে কী রকম গুনাহ্ রয়েছে তাহলে সে এক কদম চলা থেকে একশত বছর সেখানে দাঁড়িয়ে থাকাটা উত্তম মনে করতো। (সুনানে ইবনে মাজাহ, ১ম খন্ড, ৫০৬ পৃষ্ঠা, হাদীস- ৯৪৬) 


 (২) হযরত সায়্যিদুনা ইমাম মালিক رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন;হযরত সায়্যিদুনা কাবুল আহবার رَضِیَ اللہُ تَعَالٰی عَنۡہُ বলেন: “নামাযীর সামনে চলাচলকারী যদি জানতো যে এর মধ্যে কি পরিমাণ গুনাহ্ রয়েছে তবে সে জমিনে ধসে যাওয়াকে অতিক্রম করা থেকে উত্তম মনে করতো। (মুআত্তায়ে ইমাম মালিক, ১ম খন্ড, ১৫৪ পৃষ্ঠা, হাদীস-৩৭১) (নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রমকারী অবশ্যই গুনাহগার হবে এতে নামাযীর কোন গুনাহ্ হবে না বা নিজের নামাযের কোন ক্ষতি হবে না।) (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৭ম খন্ড, ২৫৪ পৃষ্ঠা) 


নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করা সম্পর্কে ১৫টি বিধান


 (১) মাঠ ও বড় মসজিদে নামাযীর পা থেকে সিজদার স্থান পর্যন্ত জায়গা দিয়ে গমন করা না জায়িয। সিজদার স্থান দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে দাঁড়ানো অবস্থায় সিজদার স্থানে দৃষ্টি রাখলে যতদূর পর্যন্ত দৃষ্টি প্রসারিত হয় সেটাই সিজদার স্থান, তার মাঝখান দিয়ে অতিক্রম করা জায়েয নেই। (তাবঈনুল হাকাইক, ১ম খন্ড, ১৬০ পৃষ্ঠা) সিজদার স্থানের দূরত্ব আনুমানিক পা হতে তিনগজ পর্যন্ত ধার্য করা হয়েছে। (কানূনে শরীয়াত, প্রথম অংশ, ১৩১ পৃষ্ঠা) অতএব মাঠে নামাযীর পা হতে তিনগজ দূর দিয়ে অতিক্রম করাতে কোন অসুবিধা নেই। (২) ঘর বা ছোট মসজিদে নামাযীর সামনে যদি কোন সুতরা (কোন আড়াল) না থাকে তবে পা থেকে কিবলার দিকের দেওয়াল পর্যন্ত জায়গা দিয়ে অতিক্রম করা জায়েয নেই। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১০৪ পৃষ্ঠা) (৩) নামাযীর সামনে যদি সুতরা অর্থাৎ কোন আড়াল থাকে তবে ঐ সুতরার বাহির দিয়ে অতিক্রম করলে কোন অসুবিধা নেই। (প্রাগুক্ত) (৪) সুতরা কমপক্ষে এক হাত উঁচু (অর্থাৎ প্রায় আধা গজ সমপরিমাণ) এবং আঙ্গুল বরাবর মোটা হওয়া আবশ্যক। (তাহতাবীর পাদটিকা সম্বলিত মারাক্বিউল ফালাহ, ৩৬৫ পৃষ্ঠা) (৫) ইমামের সুতরা মুক্তাদীর জন্যও যথেষ্ট। অর্থাৎ ইমামের সামনে সুতরা থাকলে যদি কোন মুক্তাদীর সামনে দিয়ে কেউ অতিক্রম করে তবে সে গুনাহগার হবে না। (রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড, ৪৮৪ পৃষ্ঠা) (৬) গাছ, মানুষ এবং প্রাণী ইত্যাদিও সুতরা হতে পারে। (আলমগিরী, খন্ড ১ম, ১০৪ পৃষ্ঠা) (৭) মানুষকে এমন অবস্থায় সুতরা বানানো যাবে যখন তার পিঠ নামাযীর দিকে হয়। (তাহতাবীর পাদটিকা, ৩৬৫ পৃষ্ঠা। রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড, ৪৯৬ পৃষ্ঠা) কেউ নামায আদায়কারীর মুখোমুখী হলে নামাযীর জন্য মাকরূহ হবে না, যে মুখ করেছে তার জন্যই মাকরূহ হবে। সুতরাং ইমাম সাহেবের সালাম ফিরানোর পর পিছনে ফিরে দেখার ক্ষেত্রে সকলের সতর্কতা অবলম্বন করা আবশ্যক। কেননা তার সরাসরি পিছনে যদি কেউ অবশিষ্ট নামায আদায় করতে থাকে আর এ অবস্থায় সে যদি তার দিকে মুখ করে বসে তবে সে গুনাহগার হবেন। (৮) এক ব্যক্তি নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করতে চাইলে যদি দ্বিতীয় ব্যক্তি তাকে আড়াল করে তার চলার নির্দিষ্ট গতি অনুযায়ী তার সাথে সাথেই পথ অতিক্রম করে চলে যায় তবে প্রথম ব্যক্তি গুনাহগার হলো এবং দ্বিতীয় ব্যক্তির জন্য এই প্রথম ব্যক্তিই সুতরা হয়ে গেলো। (রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড, ৪৮৩ পৃষ্ঠা) (৯) জামাআত বিশিষ্ট নামাযে প্রথম কাতারে স্থান থাকা সত্ত্বেও কেউ পিছনে নামায আরম্ভ করে দিলো তবে নতুন আগমনকারী তার গর্দানের উপর দিয়ে লাফিয়ে যেতে পারবে কেননা সে নিজেই নিজের সম্মান নষ্ট করেছে। (রদ্দুল মুহতার সম্বলিত দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৮৩ পৃষ্ঠা) (১০) যদি কেউ এমন উঁচু স্থানের উপর নামায আদায় করছে যে, তার সামনে দিয়ে অতিক্রমকারীর অঙ্গ নামাযীর সামনে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না, তাহলে অতিক্রমকারী গুনাহগার হবে না। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১০৪ পৃষ্ঠা) (১১) যদি দু’ব্যক্তি নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করতে চায় তবে তার পদ্ধতি হচ্ছে তাদের মধ্যে একজন নামাযীর সামনে পিঠ দিয়ে দাঁড়িয়ে যাবে। এবার তাকে আড়াল করে দ্বিতীয় ব্যক্তি অতিক্রম করে চলে যাবে। অতঃপর দ্বিতীয় ব্যক্তি এসে প্রথম ব্যক্তির পিঠের পিছনে নামাযীর দিকে পিঠ করে দাঁড়িয়ে যাবে। এবার প্রথমজন চলে যাবে। অতঃপর দ্বিতীয় ব্যক্তিও যেদিক থেকে এসেছিল সেদিকে সরে যাবে। (প্রাগুক্ত) (১২) কেউ নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করতে চাইলে নামাযীর জন্য এটা অনুমতি রয়েছে যে, সে তাকে বাঁধা দিতে পারবে। চাই ‘سُبْحٰنَ الله’বলে কিংবা উচ্চ আওয়াজে কিরাত পাঠ করে বা হাত অথবা মাথা কিংবা চোখ দ্বারা ইশারার মাধ্যমে। এর অতিরিক্ত করার অনুমতি নেই। যেমন অতিক্রমকারীর কাপড় ধরে টান দেয়া বা তাকে হাত দ্বারা মারা বরং যদি আমলে কসীর হয়ে যায় তবে নামাযই ভঙ্গ হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার, দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৮৩ পৃষ্ঠা। তাহতাবীর পাদটিকা সম্বলিত মারাকিউল ফালাহ, ৩৬৭ পৃষ্ঠা) (১৩) তাসবীহ ও ইঙ্গিত প্রদান উভয়টি বিনা প্রয়োজনে একত্রিত করা মাকরূহ। (রদ্দুল মুহতার সম্বলিত দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৮৬ পৃষ্ঠা) (১৪) ইসলামী বোনদের সামনে দিয়ে কেউ অতিক্রম করলে তিনি তাসফীক এর মাধ্যমে বাঁধা দিতে পারবেন। (তাসফীক হলো, ডান হাতের আঙ্গুলসমূহ বাম হাতের পিঠের উপর মারা। যদি পুরুষ তাসফীক করে এবং মহিলা তাসবীহ বলে নামায ভঙ্গ হবে না কিন্তু এটা সুন্নাতের পরিপন্থী। (প্রাগুক্ত) (১৫) তাওয়াফকারীর জন্য তাওয়াফ করার সময় নামাযীর সামনে দিয়ে অতিক্রম করা জায়েয। (রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড, ৪৮২ পৃষ্ঠা) 


সাহিবে মাযারের ইনফিরাদী কৌশিশ


প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! اَلْحَمْدُ لِلّٰہِ عَزَّوَجَلَّ দা’ওয়াতে ইসলামীর মাদানী পরিবেশে বুযুর্গানে কিরামদের অনেক সম্মান করা হয়, বরং বাস্তব সত্য এটাই যে আল্লাহ্ তাআলার অনুগ্রহক্রমে দা’ওয়াতে ইসলামী, ফয়যানে আউলিয়া তথা আউলিয়া কিরামদের ফয়যের বদৌলতেই চলছে। যেমন এক ইসলামী ভাইয়ের বর্ণনানুযায়ী এক সাহিবে মাযার رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ কিভাবে মাদানী কাফেলার জন্য ইনফিরাদী কৌশিশ করেছেন তারই ঈমান তাজাকারী একটি ঘটনা তিনি তার নিজস্ব ভঙ্গিতে উপস্থাপন করছেন।


اَلْحَمْدُ لِلّٰہ عَزَّوَجَلَّ আশিকানে রসূলের একটি মাদানী কাফেলা চকওয়াল (পাঞ্জাব পাকিস্তান) এর মুযাফ্ফারাবাদ এবং তার আশে পাশের গ্রামসমূহে সুন্নাতের বাহার ছড়াতে ছড়াতে “আনওয়ার শরীফ” নামক স্থানে গিয়ে উপস্থিত হলেন। সেখান থেকে হাতোহাত চার ইসলামী ভাই তিনদিনের জন্য মাদানী কাফেলাতে সফর করার জন্য আশিকানে রাসূলের সাথে শরীক হয়ে গেলেন। এ চারজনের মধ্যে “আনওয়ার শরীফের “সাহিবে মাযার” বুযুর্গ এর বংশধরের একছেলেও তাতে সম্পৃক্ত ছিলেন। মাদানী কাফেলা জাঁকজমকের সাথে নেকীর দাওয়াত দিতে দিতে “ঘড়ি দো পাট্টা” (এক এলাকা) পৌঁছলেন। যখন “আনওয়ার শরীফবাসীদের তিনদিন পূর্ণ হলো তখন সাহিবে মাযারের رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বংশধর ছেলেটি বললেন: “আমি তো ভাই বাড়ী ফিরে যাবো না। কেননা আজ রাতে আমি আপন “হযরত” কে স্বপ্নে দেখলাম। উনি বলছিলেন: “বৎস! ঘরে ফিরে যেওনা, মাদানী কাফেলার ইসলামী ভাইদের সাথে আরো সফর করতে থাকো। সাহিবে মাযার رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ এর ইনফিরাদী কৌশিশ এর এ ঘটনা শুনে মাদানী কাফেলাতে আনন্দের ঢেউ খেলে গেল; সকলের উৎসাহ-উদ্দীপনাতে মদীনার ১২ চাঁদের চমক লেগে গেলো এবং আনওয়ার শরীফ থেকে আগত চার ইসলামী ভাই পুনরায় হাতোহাত মাদানী কাফেলাতে আরো সফর শুরু করে দিলেন। 


আউলিয়ায়ে কিরাম উনকা ফয়যানে আম, 


লৌটনে সব চলে কাফিলে মে চলো।


আউলিয়া কা করম তুম পে হো লা-জারাম, 


মিলকে সব চল পড়ে কাফিলে মে চলো।


মা চৌকি থেকে উঠে দাঁড়ালেন


বাবুল মদীনা করাচীর এক ইসলামী ভাইয়ের বর্ণনার সারংশ; আমার আম্মাজান কঠিন রোগের কারণে চৌকি থেকে উঠতে অক্ষম ছিলেন এবং ডাক্তাররা শেষ জাওয়াব দিয়ে দিলেন। সৌভাগ্যক্রমে একবার আমি শুনে ছিলাম যে, দা’ওয়াতে ইসলামীর সুন্নাত প্রশিক্ষণের মাদানী কাফেলা সমূহে আশিকানে রাসূলের সাথে সফর করলে দোয়া কবুল হয় এবং বিভিন্ন রোগ হতে আরোগ্য লাভ হয়। তাই আমিও অসুস্থ মায়ের কষ্টের কথা চিন্তা করে মন স্থির করলাম এবং নিয়্যত করলাম যে, মাদানী কাফেলায় সফর করে মায়ের জন্য দোয়া করব।এ উদ্দেশ্য নিয়ে সুন্নাত সমূহের নূর বর্ষনকারী দা’ওয়াতে ইসলামীর আন্তর্জাতিক মাদানী মারকায ফয়যানে মদীনার ভিতরে স্থাপিত “মাদানী তরবিয়্যাহ গাহ এর মধ্যে উপস্থিত হয়ে তিনদিনের জন্য মাদানী কাফেলাতে সফর করার ইচ্ছা প্রকাশ করলাম। ইসলামী ভাইয়েরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে আমাকে হাতোহাত তাদের কাফেলাতে গ্রহণ করে নিলেন।আশিকানে রাসূলের অর্থাৎ আমাদের মাদানী কাফেলার সফর শুরু হয়ে গেলো। আমরা বাবুল ইসলাম সিন্ধু প্রদেশের সাহরায়ে মদীনার নিকটস্থ এক গ্রামে পৌঁছে গেলাম। সফরের মধ্যে আশিকানে রাসূলের খিদমতে দোয়ার জন্য অনুরোধ করে আমি আমার আম্মাজানের মর্মান্তিক অবস্থার কথা বর্ণনা করলাম। তারা আমার আম্মাজানের জন্য পূর্ণ ইখলাছের সাথে দোয়া করলেন। এরপর আমাকে মায়ের আরোগ্যের ব্যাপারে যথেষ্ট আশ্বস্ত করলেন। তাদের এ রকম আন্তরিকতা দেখে আমি খুবই মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আমীরে কাফেলা (কাফেলার প্রধান) খুবই নম্রতার সাথে ইনফিরাদী কৌশিশ করে আমাকে আরো ৩০ দিনের মাদানী কাফেলাতে সফর করার জন্য উৎসাহ যোগালেন, আমিও নিয়্যত করে নিলাম। কাফেলার সমষ্টিগত দোয়া ছাড়া আমি নিজে নিজেও আম্মাজানের সুস্থতার জন্য বিনয় সহকারে আল্লাহ্ তাআলার দরবারে দোয়া করতে লাগলাম। তিনদিনের এ মাদানী কাফেলার তৃতীয় রাতে আমার এক উজ্জল চেহারা বিশিষ্ট বুযুর্গের যিয়ারত লাভ হলো। তিনি বললেন: “বৎস! আম্মাজানের জন্য চিন্তা করো না, اِنۡ شَآءَ اللہ عَزَّوَجَلَّ তিনি সুস্থ হয়ে যাবেন।” তিনদিনের মাদানী কাফেলা থেকে বিদায় নিয়ে আমি ঘরে চলে গেলাম। ঘরে পৌঁছে দরজাতে আঘাত করলাম, দরজা খুললে আমি আম্মাজানকে দরজার পাশে দাঁড়ানো দেখে অবাক হয়ে গেলাম। সেখানে নির্বাক হয়ে আমি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। কেননা, আমার ঐ অসুস্থ আম্মাজান যিনি চৌকি থেকে উঠতেই পারছিলেন না, তিনি আল্লাহ্ তাআলার মেহেরবানীতে আপন পায়ে হেঁটে এসে দরজা খুলে দিলেন! আমি খুশিতে আত্মহারা হয়ে মায়ের পায়ে চুমু খেতে লাগলাম এবং তাকে মাদানী কাফেলাতে দেখা স্বপ্নের কথা শুনালাম। এরপর আম্মাজান থেকে অনুমতি নিয়ে আরো ৩০ দিনের জন্য আশিকানে রাসূলের সাথে মাদানী কাফেলায় সফরের জন্য রাওয়ানা হলে গেলাম।


মা জো বীমার হো কর্জ কা বা-র হো, 


গম মত্ করে কাফেলে মে চলো।


রবকে দরপর ঝুঁকে ইলতিজায়ে করে, 


বাবে রহমত খুলে কাফেলে মে চলো।


দিল কি কালিক ধূলে মরজে ইছইয়া টলে, 


আ-ও সব চল পড়ে  কাফেলে মে চলো।


صَلُّوْا عَلَی الْحَبِیْب!                     صَلَّی اللهُ تَعَالٰی عَلٰی مُحَمَّد


 
Top