আযানের উত্তর প্রদানের ৯টি মাদানী ফুল


 (১) নামাযের আযান ব্যতীত অন্যান্য আযানের উত্তরও প্রদান করতে হবে, যেমন-সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার সময়কার আযান। (রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড, ৮২ পৃষ্ঠা) 


আমার আক্বা আ’লা হযরত ইমাম আহমদ রযা খাঁন رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ  বলেন: যখন বাচ্চা ভূমিষ্ট হয়। তাড়াতাড়ি ডান কানে আযান বাম কানে তাকবীর বলবে যেন শয়তানের ক্ষতি এবং উম্মুস সিবয়ান থেকে বাঁচতে পারে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ২৪তম খন্ড, ৪৫২ পৃষ্ঠা) 


মলফুজাতে আ’লা হযরত ৪১৭ পৃষ্ঠা থেকে ৪১৮ পৃষ্ঠায় বর্ণিত আছে: (মৃগী রোগ) অনেক খারাপ বিপদ। আর যদি বাচ্চাদের হয় তবে এটিকে উম্মুস সিবায়ন বলা হয়, বড়দের হলে মৃগী রোগ বলে।


 (২) মুক্তাদীদের উচিত, খুতবার আযানের উত্তর কখনো না দেয়া, এটাই সতর্কতা অবলম্বন। অবশ্য যদি এই আযানের উত্তর অথবা (দুই খুতবার মাঝখানে) দোয়া মনে মনে করে, মুখ দ্বারা মোটেই উচ্চারণ না করে তবে কোন অসুবিধা নেই। আর ইমাম অর্থাৎ খতীব সাহেব যদি মুখ দ্বারা আযানের উত্তর দেয় বা দোয়া করেন তবে তা নিঃসন্দেহে জায়িয। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংশোধিত) , ৮ম খন্ড, ৩৩০-৩০১ পৃষ্ঠা) 


 (৩) আযান শ্রবণকারীদের জন্য উত্তর প্রদানের হুকুম রয়েছে। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৩৭২ পৃষ্ঠা) অপবিত্র ব্যক্তিরাও (অর্থাৎ-যার উপর সহবাস বা স্বপ্নদোষের কারণে গোসল ফরয হয়েছে) আযানের উত্তর দিবেন। অবশ্য হায়েয, নিফাস বিশিষ্ট মহিলা, খুতবা শ্রবণকারী, জানাযার নামায আদায়রত ব্যক্তি, সহবাসে লিপ্ত বা বাথরুমে রয়েছে এমন ব্যক্তিগণ উত্তর দিবেন না। (দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৮১ পৃষ্ঠা) 


 (৪) যতক্ষণ আযান হয় ততক্ষণ পর্যন্ত সালাম, কথাবার্তা ও সালামের উত্তর প্রদান এবং সব ধরণের কাজকর্ম বন্ধ রাখবেন। এমনকি কুরআন তিলাওয়াতও। আযানকে মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করুন এবং এর উত্তর দিন। ইকামাতের সময়ও এভাবে করবেন। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৪৭৩ পৃষ্ঠা। দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৮৬ পৃষ্ঠা। আলমগিরী, ১ম খন্ড, ৫৭ পৃষ্ঠা) 


 (৫) আযান প্রদানকালীন সময়ে চলা-ফেরা, খাওয়া দাওয়া, প্লেইট, গ্লাস বা কোন বস্তু উঠানো ও রাখা, ছোট বাচ্চার সাথে খেলা করা, ইশারা-ইঙ্গিতে কথাবার্তা বলা ইত্যাদি সবকিছু বন্ধ রাখাই যথার্থ।


 (৬) যে ব্যক্তি আযান চলাকালীন সময়ে কথাবার্তায় ব্যস্ত থাকে, আল্লাহ্র পানাহ তার মন্দ মৃত্যু হওয়ার (অর্থাৎ মৃত্যুর সময় তার ঈমান ছিনিয়ে নেয়ার) আশংকা রয়েছে। (বাহারে শরীয়াত, ১য় খন্ড, ৪৭৩ পৃষ্ঠা) 


 (৭) রাস্তায় চলাচল করা অবস্থায় যদি আযানের শব্দ কানে আসে তখন উচিত হচ্ছে দাঁড়িয়ে চুপচাপভাবে আযান শুনা এবং এর উত্তর প্রদান করা। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ৫৭ পৃষ্ঠা) হ্যাঁ! আযান চলাকালীন সময়ে মসজিদ বা অযুখানার দিকে চলা এবং অযু করাতে কোন সমস্যা নেই। এর মধ্যে মুখে জবাবও দিতে থাকুন।


 (৮) আযান চলাকালীন ইস্তিন্জাখানায় যাওয়া উচিত নয়, কেননা ঐখানে আযানের জবাব দিতে পারবে না এবং এটি অনেক বড় সাওয়াব থেকে বঞ্চিত হওয়া। অবশ্য খুবই প্রয়োজন হলে কিংবা জামাআত না পাওয়ার সম্ভাবনা হলে যেতে পারবেন।


 (৯) যদি কয়েকটি আযান শুনেন তাহলে প্রথম আযানের উত্তর দিতে হবে, তবে উত্তম হচ্ছে যে, প্রতিটি আযানের উত্তর প্রদান করা। (রদ্দুল মুহতার সম্বলিত দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৮২ পৃষ্ঠা। বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৪৭৩ পৃষ্ঠা) যদি আযান দেয়ার সময় উত্তর না দিয়ে থাকেন তবে যদি বেশিক্ষণ সময় অতিবাহিত না হয় তাহলে উত্তর দিয়ে দিবেন। (দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৮৩ পৃষ্ঠা) 

 
Top