নামাযের ৩৩টি মাকরূহে তানযীহী


 (১) অন্য কাপড় থাকা সত্ত্বেও কাজ কর্মের পোষাকে নামায আদায় করা। (গুনিয়াতুল মুসতামলা, ৩৩৭ পৃষ্ঠা) মুখে এমন কোন জিনিস রাখা যার দ্বারা কিরাতই পড়া সম্ভব হয় না কিংবা এমন শব্দাবলী বের হয়ে যায় যা কুরআনে পাকের নয় তাহলে নামাযই ভঙ্গ হয়ে যাবে। (দুররে মুখতার, রদ্দুল মুহতার) (২) অলসতাবশতঃ খালি মাথায় নামায আদায় করা। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১০৬ পৃষ্ঠা) নামাযরত অবস্থায় টুপি কিংবা ইমামা শরীফ পড়ে গেলে তা উঠিয়ে নেয়া উত্তম, যদি “আমলে কসীর” এর প্রয়োজন না হয়। “আমলে কসীর” করতে হলে নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে। আর বার বার উঠাতে হলে তবে তা পতিত অবস্থায় রেখে দিন। না উঠানোতে যদি একাগ্রতা ও বিনয় প্রকাশ উদ্দেশ্য হয় তাহলে না উঠানোই উত্তম। (রদ্দুল মুহতার সম্বলিত দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৯১ পৃষ্ঠা) যদি কাউকে খালি মাথায় নামায আদায় করতে দেখা যায় বা তার টুপি পড়ে যায় তাহলে তাকে অপর ব্যক্তি টুপি পরিয়ে দেবেন না। (৩) রুকূ কিংবা সিজদাতে বিনা প্রয়োজনে তিনবার অপেক্ষা কম তাসবীহ বলা। (যদি সময় সংকির্ণ হয় কিংবা ট্রেন ইত্যাদি ছেড়ে দেয়ার আশঙ্কা থাকে তাহলে সংক্ষেপ করাতে ক্ষতি নেই। যদি মুক্তাদী তিনবার তাসবীহ বলতে পারেনি, ইত্যবসরে ইমাম সাহেব মাথা উঠিয়ে নিয়েছেন, তাহলে ইমামের সঙ্গে মাথা উঠিয়ে নেবেন।) (৪) নামাযের মধ্যে কপাল থেকে মাটি বা ঘাস ঝেড়ে ফেলা। হ্যাঁ! যদি সেটির কারণে নামাযের মধ্যে ধ্যান অন্যদিকে হয়ে থাকে তাহলে ঝেড়ে ফেলাতে কোন ক্ষতি নেই। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১০৬পৃষ্ঠা) (৫) সিজদা ইত্যাদিতে আঙ্গুলকে কিবলা থেকে ফিরিয়ে নেয়া। (আলমগিরী সম্বলিত ফতোওয়ায়ে কাজী খান, ১ম খন্ড, ১১৯ পৃষ্ঠা) (৬) পুরুষেরা সিজদাতে উরুকে (রান) পেটের সাথে লাগিয়ে দেয়া। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১০৯ পৃষ্ঠা) (৭) নামাযরত অবস্থায় হাত অথবা মাথার ইশারায় সালামের উত্তর প্রদান করা। (রদ্দুল মুহতার সম্বলিত দুররে মুখতার, ২য় খন্ড, ৪৯৭ পৃষ্ঠা) মুখে উত্তর দিলে নামায ভঙ্গ হয়ে যাবে। (তাহতাবীর পাদটিকা সম্বলিত মারাকিউল ফালাহ, ৩২২ পৃষ্ঠা) (৮) নামাযের মধ্যে বিনা কারণে চার জানু হয়ে বসা। (গুনিয়াতুল মুসতামলা, ৩৩৯ পৃষ্ঠা) (৯) অঙ্গ প্রত্যঙ্গ মোচড়ানো (অলসতার কারণে) (১০) ইচ্ছাকৃতভাবে কাঁশি দেয়া, গলা পরিস্কার করা। (গুনিয়াতুল মুসতামলা, ৩৪০পৃষ্ঠা) যদি স্বাভাবিক ভাবে হয়ে থাকে তবে অসুবিধা নেই। (১১) সিজদাতে যাওয়ার সময় বিনা কারণে হাঁটুর পূর্বে হাত জমিনের উপর রাখা। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১০৭ পৃষ্ঠা) (১২) উঠার সময় বিনা কারণে হাতের পূর্বে উভয় হাঁটু জমিন থেকে উঠানো। (গুনিয়াতুল মুসতামলা, ৩৩৫ পৃষ্ঠা) (১৩) রুকূতে মাথাকে পিঠ অপেক্ষা উঁচু-নীচু করা। (গুনিয়াতুল মুসতামলা, ৩৩৮পৃষ্ঠা) (১৪) নামাযে ‘সানা’, ‘তা’আউয’ (আউযুবিল্লাহ) , ‘তাসমিয়্যাহ (বিসমিল্লাহ) এবং ‘আমীন’ উচ্চস্বরে বলা। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১০৭ পৃষ্ঠা) (১৫) বিনা কারণে দেয়াল ইত্যাদিতে হেলান দেয়া। (প্রাগুক্ত) (১৬) রুকূতে উভয় হাঁটুর উপর এবং (১৭) সিজদাতে মাটির উপর হাত না রাখা। (১৮) ডানে বামে হেলা-দোলা করা। আর কখনো ডান পায়ের উপর আবার কখনো বাম পায়ের উপর জোর (ভর) দেয়া, এটা সুন্নাত। (বাহারে শরীয়াত, ৩য় অংশ, ২০২ পৃষ্ঠা) এবং সিজদাতে যাওয়ার সময় ডান দিকে জোর দেয়া আর উঠার সময় বাম দিকে জোর দেয়া মুস্তাহাব। (প্রাগুক্ত, ১০১ পৃষ্ঠা) (১৯) নামাযে উভয় চোখ বন্ধ করে রাখা। (অবশ্য যদি এতে একাগ্রতা ও বিনয় আসে তবে বন্ধ রাখাই উত্তম। (দুররে মুখতার, রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড, ৪৯৯ পৃষ্ঠা) (২০) জলন্ত আগুনের সামনে নামায আদায় করা। অবশ্য মোমবাতি কিংবা প্রদীপের সামনে থাকলে অসুবিধা নেই। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১০৮ পৃষ্ঠা) (২১) এমন কিছুর সামনে নামায আদায় করা যাতে মনযোগ চলে যায়। (যেমন- সাজসজ্জা ও খেলাধুলা ইত্যাদি) । (রদ্দুল মুহতার, ১ম খন্ড, ৪৩৯ পৃষ্ঠা) (২২) নামাযের জন্য দৌঁড়ানো (২৩) সাধারণ জন পথ (২৪) আবর্জনা ফেলার স্থানে (২৫) জবেহ করার স্থানে। অর্থাৎ যেখানে পশু জবেহ করা হয়। (২৬) ‘আস্তাবলে’ অর্থাৎ যেখানে ঘোড়া বাঁধা হয় (২৭) গোসলখানায় (২৮) পশুখানা, বিশেষ করে যেখানে উট বাঁধা হয় (২৯) পায়খানার (টয়লেটের) ছাদের উপর (৩০) আড়াল ব্যতীত খোলা মাঠে, যেখানে সামনে দিয়ে লোকজনের অতিক্রম করার সম্ভাবনা থাকে।এসব স্থানে নামায আদায় করা। (গুনিয়াতুল মুসতামলা, ৩৩৯ পৃষ্ঠা) (৩১) বিনা কারণে হাত দিয়ে মশা, মাছি তাড়ানো (আলমগিরী সম্বলিত ফতোওয়ায়ে ক্বাযী খান, ১ম খন্ড, ১১৮ পৃষ্ঠা) (নামাযে উকুন বা মশা কষ্ট দিতে থাকলে ধরে মেরে ফেলাতে অসুবিধা নেই, যদি আমলে কসীর না হয়ে থাকে। (বাহারে শরীয়াত) (৩২) ঐ সমস্ত আমলে কালীল যা নামাযীর জন্য উপকারী সেগুলো সম্পন্ন করা জায়েয, যা উপকারী নয় তা করা মাকরূহ। (আলমগিরী, ১ম খন্ড, ১০৯ পৃষ্ঠা) (৩৩) উল্টা কাপড় পরিধান করা। (ফতোওয়ায়েরযবীয়া, ৭ম খন্ড, ৩৫৮-৩৬০ পৃষ্ঠা। ফতোওয়ায়ে আহলে সুন্নাত, অপ্রকাশিত)

 
Top