Latest News

আযান দেয়ার ১১টি মুস্তাহাব স্থান


 (১) (সন্তান ভূমিষ্ট হলে) সন্তানের (২) দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ ব্যক্তির (৩) মৃগী রোগীর (৪) রাগান্বিত ও বদমেযাজী ব্যক্তির এবং (৫) বদমেযাজী জন্তুর কানে আযান দেওয়া (৬) তুমুল যুদ্ধ চলাকালীন সময় (৭) কোথাও আগুন লাগলে (৮) মৃত ব্যক্তিকে দাফন করার পর (৯) জ্বিন অত্যাচার করলে (বা যাকে জ্বিনে ধরেছে) (১০) জঙ্গলে রাস্তা ভুলে গেলে এবং কোন পথ প্রদর্শনকারী না থাকলে এ সময়। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৪৬৬ পৃষ্ঠা। রদ্দুল মুহতার, ২য় খন্ড, ৬২ পৃষ্ঠা) এমনকি (১১) মহামারী রোগ আসাকালীন সময়ে আযান দেওয়া মুস্তাহাব। (বাহারে শরীয়াত, ১ম খন্ড, ৪৬৬ পৃষ্ঠা। ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংশোধিত) , ৫ম খন্ড, ৩৭০ পৃষ্ঠা) 


মসজিদের ভিতরে আযান দেয়া সুন্নাত পরিপন্থী


আজকাল অধিকাংশ মসজিদের ভিতরেই আযান দেয়ার প্রথা চালু রয়েছে যা সুন্নাত পরিপন্থী। “আলমগিরী” ও অন্যান্য কিতাবে উল্লেখ রয়েছে: আযান মসজিদের বাহিরেই দিতে হবে মসজিদের ভিতর আযান দিবেন না। (ফতোওয়ায়ে আলমগিরী, ১ম খন্ড, ৫৫ পৃষ্ঠা) 


আমার আক্বা, আ’লা হযরত, ইমামে আহলে সুন্নাত, আযীমুল বরকত, আযীমুল মারতাবাত, পরওয়ানায়ে শাময়ে রিসালাত, মুজাদ্দিদে দ্বীনো মিল্লাত, হামীয়ে সুন্নাত, হযরত আল্লামা মাওলানা আলহাজ্ব আল হাফিয আল ক্বারী আশ্ শাহ ইমাম আহমদ রযা খাঁন رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: “একটি বারের জন্যও এ কথার প্রমাণ নেই যে, হুযুর صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم মসজিদের ভিতর আযান প্রদান করিয়েছেন।”সায়্যিদী আলা হযরত رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ আরো বলেন: মসজিদের ভিতর আযান দেয়া মসজিদ ও আল্লাহ্ তাআলার দরবারের সাথে বেয়াদবী করা। মসজিদের প্রাঙ্গনের নিচে যেখানে জুতা রাখা হয় ঐ স্থানটি মসজিদের বাহিরের হয়ে থাকে, সেখানে আযান দেয়া বিনাদ্বিধায় সুন্নাত। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংশোধিত) , ৫ম খন্ড, ৪১১, ৪১২, ৪০৮ পৃষ্ঠা) জুমার দ্বিতীয় আযান যা আজকাল (খুতবার পূর্বে) মসজিদের ভিতরে খতিব ও মিম্বরের সামনেই দেয়া হয় এটাও সুন্নাতের পরিপন্থী। জুমার দ্বিতীয় আযানও মসজিদের বাহিরে দিতে হবে তবে মুয়াজ্জিন খতীবের সোজা সামনে থাকবে।


১০০ শহীদের সাওয়াব অর্জন করুন


সায়্যিদী আলা হযরত رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: সুন্নাতকে জীবিত করা তো ওলামায়ে কিরামদের বিশেষ দায়িত্ব এবং যে মুসলমানের পক্ষে করা সম্ভব তার জন্য এটা সাধারণ হুকুম। প্রত্যেক শহরের মুসলমানদের উচিত হচ্ছে যে, আপন শহরে বা কমপক্ষে নিজ নিজ মসজিদ সমূহে (আযান ও জুমার দ্বিতীয় আযান মসজিদের বাহিরে দেয়ার) এ সুন্নাতকে জীবিত করা এবং শত শত শহীদের সাওয়াব অর্জন করা। রাসূলুল্লাহ صَلَّی اللّٰہُ تَعَالٰی عَلَیْہِ وَاٰلِہٖ وَسَلَّم এর বাণী হচ্ছে: “যে ফিৎনা-ফ্যাসাদের যুগে আমার সুন্নাতকে দৃঢ়ভাবে আকড়ে ধরবে সে একশত শহীদের সাওয়াব লাভ করবে।” (আয যুহুদুল কবীর লিল বায়হাকী, ১১৮ পৃষ্ঠা, হাদীস: ২০৭। ফতোওয়ায়ে রযবীয়া, ৫ম খন্ড, ৪০৩ পৃষ্ঠা) এ মাসআলাকে বিস্তারিতভাবে জানতে ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংশোধিত) , ৫ম খন্ড, “বাবুল আযান ওয়াল ইকামাত” অধ্যয়ন করুন।


আযানের পূর্বে এই দরূদে পাকগুলো পড়ুন


আযান ও ইকামাতের পূর্বে بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحيْمِ পড়ে দরূদ ও সালামের এ চারটি বচন পড়ে নিন।


اَلصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلَیْكَ یَارَسُوْلَ الله      وَعَلٰی اٰلِكَ وَاَصْحٰبِكَ یَا حَبِیْبَ الله

اَلصَّلٰوۃُ وَالسَّلَامُ عَلَیْكَ یَا نَبِیَّ الله       وَعَلٰی اٰلِكَ وَاَصْحٰبِكَ یَانُوْرَ الله


অতঃপর দরূদ ও সালাম এবং আযানের মাঝখানে দূরত্ব রাখার জন্য এ ঘোষণাটি করুন, “আযানের সম্মানার্থে কথাবার্তা এবং কাজ-কর্ম বন্ধ রেখে আযানের উত্তর প্রদান করুন এবং প্রচুর সাওয়াব অর্জন করুন।”এরপর আযান দিন। দরূদ ও সালাম এবং ইকামাতের মাঝখানে এটা ঘোষণা করুন, “ইতিকাফের নিয়্যত করে নিন, মোবাইল থাকলে বন্ধ করে দিন।” আযান ও ইকামাতের পূর্বে তাসমিয়্যাহ (بِسْمِ اللهِ) এবং দরূদ ও সালামের নির্দিষ্ট এ চারটি বচন বলার মাদানী অনুরোধ এই উদ্দীপনা নিয়ে করছি, যেন এভাবে আমার জন্যও কিছু সাওয়াবে জারীয়া অর্জনের ব্যবস্থা হয়ে যায়। আর বিরতি করার পরামর্শ (অর্থাৎ দরূদো সালাম ও আযানের মাঝখানে বিরতি এবং দরূদো সালাম ও ইকামাতের মাঝখানে বিরতি ফতোওয়ায়ে রযবীয়্যার ফয়যান (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া পাঠ করে উপকৃত হয়ে তা) থেকে উপস্থাপন করেছি। যেমন একটি ফতোয়ার উত্তরে ইমামে আহলে সুন্নাত رَحْمَۃُ اللّٰہِ تَعَالٰی عَلَیْہِ বলেন: “দরূদ শরীফ ইকামাতের পূর্বে পড়াতে কোন অসুবিধা নেই কিন্তু (তারও) ইকামাতের মধ্যে বিরতি দেয়া চাই অথবা দরূদ শরীফের শব্দ যেন ইকামাতের শব্দ থেকে কিছুটা নিম্নস্বরে বলা হয়, যাতে করে তা যে স্বতন্ত্র তা বুঝা যায় এবং সর্বসাধারণ যেন দরূদ শরীফকে ইকামাতের অংশ মনে না করে। (ফতোওয়ায়ে রযবীয়া (সংশোধিত) , ৫ম খন্ড, ৩৮৬ পৃষ্ঠা)

Top